মঙ্গলবার, মে ৭, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনদরিদ্র বান্ধব চট্টগ্রাম বিনির্মাণে নগরের আয়তন বৃদ্ধিসহ মেয়রের ছয় সুপারিশ

দরিদ্র বান্ধব চট্টগ্রাম বিনির্মাণে নগরের আয়তন বৃদ্ধিসহ মেয়রের ছয় সুপারিশ

চট্টগ্রাম নগরের দারিদ্র্য হ্রাসকরণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নে সিটি কর্পোরেশন এলাকার আয়তন বৃদ্ধিসহ ছয়টি সুপারিশ উপস্থাপন করেছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। আজ ২৩ ডিসেম্বর চসিক পুরাতন ভবন কে বি আবদুস ছাত্তার মিলনায়তনে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত ‘ লিভলিহুড ইমপ্রুভমেন্ট অব আরবান পুওর কমিউনিটিজ’ কর্মসূচির অধীনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রাতিষ্ঠানিক ও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে এক পর্যালোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন সিটি কর্পোরেশনের জন্য সরকার প্রদত্ত কাঠামো, নীতিমালা, বিরাজমান রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনায় রেখে কিভাবে স্থানীয় সরকারগুলো দারিদ্র্য হ্রাসকরণে ভূমিকা রাখতে পারে সে ব্যাপারে এই ছয়টি সুপারিশ উপস্থাপন করেন।

পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন প্রস্তুতে নিয়োজিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার এন্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার’র এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান ড. হোসাইন জিল্লুর রহমান।

প্রথম সুপারিশ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আবাসন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম নগরের বর্তমান জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ১৪ লাখ ৪০ হাজার মানুষ দরিদ্র। প্রতিনিয়ত নগরে জীবন জীবিকার তাগিদে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী প্রবেশ করছে। স্বাভাবিক ভাবেই নগরের উপর জনসংখ্যার চাপ বাড়ছে। এই চাপ কমাতে সরকারি খাস জমি জঙ্গল সলিমপুর এলাকাসহ অন্যান্য সরকারি জমির সদব্যবহার করতে হবে। জমিগুলো উদ্ধার করে সেখানে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আবাসন প্রকল্প গ্রহণ করা যায়।
দ্বিতীয় সুপারিশে মেয়র বলেন, নগরের আয়তন বাড়াতে হবে। উত্তরে দক্ষিন পাহাড়তলী ওয়ার্ড সংশ্লিষ্ট এলাকা, পূ্র্বে কুয়াইশ বুড়িশ্চর এলাকা, দক্ষিনে নদীর ওপারে কর্নফুলী থানা,আনোয়ারা থানার আংশিক এলাকাকে নগরের অধিভুক্ত করলে সিটি কর্পোরেশনের আয়তন অনেকাংশে বাড়বে।
তৃতীয় সুপারিশে মেয়র বলেন, সিটি কর্পোরেশনের আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে সরকার প্রদত্ত নির্দেশনা ও দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ বৃদ্ধি করা সময়ের দাবী। নিরাপদ বাসযোগ্য নগর বিনির্মানে প্রয়োজনীয় সেবার মান বৃদ্ধি ও সমস্যা চিহ্নিত করে তা বাস্তবায়নে আর্থিক সক্ষমতা জরুরী বিষয়।
চতুর্থ সুপারিশে মেয়র বলেন, ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সরকারি বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান যেমন চট্টগ্রাম বন্দরের বার্ষিক গৃহকর আসে প্রায় ১৮৫ কোটি টাকা। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে দেয় মাত্র ৩৫ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে সরকার প্রদত্ত বিধি বিধান বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় কর্তৃক সিটি কর্পোরেশনগুলোর আইনি সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করতে হবে।
পঞ্চম সুপারিশ উপস্থাপনে মেয়র বলেন, সরকার গৃহিত গ্রাম হবে শহর- প্রকল্পের আওতায় গ্রামে নাগরিক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি,হাউজিং কার্যক্রম বাস্তবায়নে নাগরিকদেরকে ঋণ সহায়তা প্রদানে পরিকল্পনা গ্রহণ করা যায়।
ষষ্ঠ সুপারিশের ব্যাপারে সিটি মেয়র বলেন, যত্রতত্র ময়লা ফেলা,ট্যাক্স প্রদানে উদ্বুদ্ধ করতে নাগরিকদের মাইন্ডসেট পরিবর্তনে গৃহিত নানামুখী সচেতনতা কার্যক্রমের সাথে পাবলিক ডায়লগ, সাংস্কৃতিক প্রচারণার আয়োজন করা যায়।

সরকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ১১ টি সিটি কর্পোরেশনে কাজ বাস্তবায়ন করে চলেছে। প্রকল্পের আর্থিক সক্ষমতা ও প্রাতিষ্টানিক সক্ষমতা মূল্যায়নে জাতিসংঘের ইউএনডিপি সিটি কর্পোরেশন মেয়র,কাউন্সিলর, স্টেক হোল্ডারদের সাথে মত বিনিময়ের ভিত্তিতে সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন প্রস্তুত করছে।
প্রতিবেদনটি প্রস্তুতের জন্য আইপিই গ্লোবাল ইন্ডিয়া এবং পাওয়ার এন্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার(পিপিআরসি) নামীয় গবেষনা প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানদ্বয় চসিকসহ ৪টি সিটি কর্পোরেশন ও ৪ টি পৌরসভা থেকে তথ্য উপাত্ত ও সুপারিশ সংগ্রহ করেছে।
সভায় আইপিই গ্লোবাল ইন্ডিয়ার ডেপুটি টেকনিক্যাল এডভাইজার কাম প্রজেক্ট ম্যানেজার শ্রীপর্ণা সান্যাল আইয়ার, পিপিআরসি’র সিনিয়র ফেলো ও আরটিডি এডিশনাল সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ স্ব স্ব মতামত ব্যক্ত করেন। এসময় চসিক প্যানেল মেয়র জোবাইরা নার্গিস খান, হাসান মুরাদ বিপ্লব,সালেহ আহমদ চৌধুরী, আবিদা আজাদ,লুৎফুন্নেসা দোভাষ বেবীসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ