শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনকর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মদদ দেয়ার অভিযোগ

কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মদদ দেয়ার অভিযোগ

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রমসহ বিভিন্ন সময় শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মদদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত ইয়াবা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জাফরের ক্রয়কৃত ফ্ল্যাটের প্রধান স্বাক্ষী থাকারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। সূত্রে জানা যায়, নগরীর আগ্রাবাদের শান্তিবাগ আবাসিক এলাকায় হিলটনের সাত তলা বিশিষ্ট ফেরারী টাওয়ারের নিচতলার ডি-১ ও দ্বিতীয় তলার সি-১ (১০৮৫ বর্গফুট) নামের দুটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেন ক্রসফায়ারে নিহত মোহাম্মদ জাফর। চুক্তিপত্র অনুযায়ী দুটি ফ্ল্যাটের ক্রয় মূল্য ৬০ লক্ষ টাকা দেখানো হয়।

ফ্ল্যাট  ক্রয়ের চুক্তিপত্র সূত্রে জানা যায়, নিহত জাফর হিলটন প্রপার্টিজের পরিচালক আশীষ রায় চৌধুরীর সাথে একটি চুক্তিপত্র করেন। সেখানে আশীষ ভূমির প্রধান মালিক মো. গিয়াস উদ্দিন মিলনের পক্ষে চুক্তিটি সম্পাদন করেন। ওই চুক্তির প্রধান স্বাক্ষীর জায়গায় বর্তমান কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরীর নাম দেখা যায়। সে চুক্তিপত্রে আরেক স্বাক্ষী ছিলেন দেওয়ানহাট এলাকার এস এম শওকতুল আলম।

সূত্রে আরও জানা গেছে, জাফরের কেনা দুটি ফ্ল্যাটের মধ্যে ডি-১ ফ্ল্যাটটি মাত্র ২০ লক্ষ টাকায় চাঁদপুরের সোহেল নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া সি-১ ফ্ল্যাটটি এখনো তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। আনোয়ারার সর্দার ইউসুফ নামের এক ব্যক্তি সেটি দেখাশোনা করছেন।

এ বিষয়ে দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ও বড় উঠান আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান মো. দিদারুল আলম  অভিযোগ করে বলেন, কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান বিভিন্ন সময় শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মদদসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে আসছেন। তার জন্য ত্যাগী নেতা-কর্মীরাও অবমূল্যায়িত হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন সময় বিএনপি- জামায়াতকেও সেল্টার দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টি থেকে এসে বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন। আমরা চাইবো সামনের দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যোগ্য ও ত্যাগীদেরকেই যেন এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়ে আসা হয়।

তবে অভিযোগের বিষয়গুলো অস্বীকার করে কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরী বলেন, রাজনীতিবীদ হিসেবে সবসময় আমরা মানুষদের সাহায্য সহযোগিতা করে আসছি। আমাদের কাছে অনেক লোকজনই আসে। সবাইকে তো আমরা চিনি না। কেউ যদি সেই সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন ধরণের অপরাধে নিজেদের জড়ায় তার দায়-দায়িত্ব কি আমরা নিব?

তিনি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে গত দুইবছরে আমি সবার জন্য কাজ করে গেছে। সারা দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমার বিরুদ্ধে যাদেরকে জড়িয়ে অভিযোগগুলো করা হচ্ছে তারা যে অপরাধের সাথে জড়িত ছিল তা আমরা তো আগে জানতাম না। সেই অপরাধীরা তো বিভিন্ন মন্ত্রীদের সাথেও ছবি তুলছে। তাই বলে কি ওই মন্ত্রীরা তাদের পৃষ্ঠপোষক হয়ে গেছে? এসময় তিনি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাকে এসব অভিযোগে জড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেন।

উল্লেখ্য, মোহাম্মদ জাফর ২০১৫ সালের ১৩ মে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গর থেকে উদ্ধার হওয়া ৫ লাখ পিস ইয়াবা মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান পলাতক আসামি ছিলেন। এ ঘটনায় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত সড়কে একই সালের ২৫ জুলাই জাফর র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হন। পরে ঘটনাস্থল থেকে ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও দুটি বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। নিহতের আগ পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা, গহিরা ও  পতেঙ্গা এলাকায় ইয়াবা ব্যবসা করতেন বলে জানা গেছে। জাফর (৩২) আনোয়ারা উপজেলার বদলপুরা গ্রামের কালামিয়া বাড়ির নুর মোহাম্মদ এর ছেলে। – সিভয়েস

আরও পড়ুন

সর্বশেষ