শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়রোহিঙ্গারা এ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি : প্রধানমন্ত্রী

রোহিঙ্গারা এ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। তিনি আরো বলেন, এ হুমকির গুরুত্ব অনুধাবন করে আমি বিশ্বসম্প্রদায়কে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেছেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য রোহিঙ্গা সংকটের আশু সমাধান হওয়া উচিত। আঞ্চলিক সমৃদ্ধির জন্য শান্তি ও সম্প্রীতি জরুরি। সোমবার সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ঢাকা গ্লোবাল ডায়ালগ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ও ভারতের অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) যৌথভাবে এ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।  বৈশ্বিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা, বিতর্ক ও ধারণা বিনিময়ের এই আয়োজনে ৫০টি দেশের দেড় শতাধিক প্রতিনিধি অংশ অংশ নিচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়ে আমি বলতে চাই, দমন-পীড়নের মুখে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে, এই রোহিঙ্গারা কেবল বাংলাদেশের জন্য নয়, গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্যও হুমকি। সেজন্য আমি এই হুমকির তাৎপর্য অনুধাবনের মাধ্যমে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাই। এত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়ার পরও সংঘাতে না জড়িয়ে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, এটা নিয়ে আমরা তাদের (মিয়ানমার) সঙ্গে ঝগড়া করছি না। বরং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা মিয়ানমারকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই সমস্যার আশু সমাধান হওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়- বঙ্গবন্ধু নির্দেশিত এই মূলনীতিই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি। জাতির পিতার প্রদর্শিত এই পথে আমরা আন্তর্জাতিক ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক স্থাপনে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী থাকলে সমস্যা থাকবে। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান সম্ভব। আমরা ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় করেছি। এটা বিশ্বের একটি উদাহরণ। শান্তি ও নিরাপত্তা ছাড়া কোনো দেশেরই উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এই সংকট নিরসনে এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সব দেশকে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান।

প্রতিযোগিতার পরিবর্তে পরস্পরের প্রতি সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, সমুদ্রসীমা ও সামুদ্রিক অর্থনীতির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ মনে করে, পরস্পরের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতা বা ‘জিরো-সাম গেম’ বঙ্গোপসাগর বা ভারত মহাসাগরের ‘নীল অর্থনীতি’ বিকাশের জন্য সহায়ক নয়। বরং তা এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধক।

প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন ও ইন্দো-প্যাসিফিক’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুরু হওয়া এ আলোচনায় বিভিন্ন দেশের ১৫০ জনেরও বেশি আলোচক অংশ নেবেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ও ওআরএফ প্রেসিডেন্ট সমির সরণ। এর আগে বিআইআইএসএস মহাপরিচালক এ কে এম আবদুর রহমান স্বাগত বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ