বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনছাত্রলীগ -যুবলীগের মধ্যে এতো প্রতিযোগিতা কেন?

ছাত্রলীগ -যুবলীগের মধ্যে এতো প্রতিযোগিতা কেন?

চলমান অবস্থাকে অস্থিরতা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন, আমিতো ছাত্রলীগ করতাম। আমার নামে বিতর্ক নাই কেন? আমি নিজে একজন বাংলাদেশ। আমি টিউশনি করে, লজিং থেকে লেখাপড়া করেছি। আমারতো টাকা পয়সা ছিল না। আমার এলাকার লোকজন আমাকে টাকা পয়সা দিয়েছে। সেই জায়গা থেকে আমি যদি অর্থমন্ত্রী হতে পারি, তাহলে এখন ছাত্রলীগ -যুবলীগের মধ্যে এতো প্রতিযোগিতা কেন? এই প্রতিযোগিতা কিসের প্রতিযোগিতা? নিজকে নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য, দেশকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্যে। তোমরা সফল হবে না। সফল হবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সবশেষে সফল হবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সফল হবে তারা, যারা নিবেদিত প্রাণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ রয়েছে, যারা দেশপ্রেমে বিশ্বাস করে এবং স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করে।

বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম এলজিইডি ভবন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান খান কায়সারের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা একটি অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। মিসম্যাচ, যেটা হওয়ার কথা ছিল না। আমি বিশ্বাস করি এ অস্থিরতা কেটে যাবে। যারা ছাত্রলীগ করে, যারা যুবলীগ করে তাদের একটা বিশেষ দায়িত্ব আছে। তাদের দায়বদ্ধতা অনেক বেড়ে গেছে। তাদের কর্মকাণ্ডে কোথাও যেন বিতর্ক সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। জ্ঞানী গুণী মানুষরা বিনয়ী হন। আতাউর রহমান খান কায়সার একজন গুণী মানুষ, তিনি কখনো রাগ করেও কথা বলেননি।

মহানগর-উত্তর-দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, কায়সার কন্যা আয়েশা ওয়াসিকা খান এমপি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালাম, নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নইমউদ্দিন চৌধুরী, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন বাচ্চু, দক্ষিণ জেলা সহ-সভাপতি মো. ইদ্রিস, উত্তর জেলা যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তাফা কামাল বলেছেন, যে মানুষের দেশপ্রেম নেই, দেশকে ভালবাসেন না, সে সঠিক মুসলমান নয়। আতাউর রহমান খান কায়সার মানুষকে ভালবেসে জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়নে মুক্তি সংগ্রামে, স্বাধীনতায় নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। পরবর্তীতে জাতির পিতার রক্তের উত্তরাধীকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আদর্শকে বাস্তবায়ন করার জন্য তিনি কাজ করে গেছেন। আতাউর রহমান খান কায়সার ক্ষণজন্মা মানুষ, তাদের মৃত্যু হয় না। কায়সার ভাইয়ের সাথে আমার মিল ছিল। আমি অনেকদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলাম। পরবর্তীতে কায়সার ভাইয়ের রেখে যাওয়া দায়িত্বটা আমার কাঁধে আসে। আমিও আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক হই। দীর্ঘদিন এই দায়িত্বে ছিলাম।

মন্ত্রী বলেন, স্বপ্নের বাংলাদেশ ৯ বছর আগের জায়গায় নেই। আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। আজকে সারা বিশ্ব আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বের কাছে অনুকরণের জায়গা। বিশ্বব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী, উন্নয়নের অর্জনে সারা বিশ্বের সবাইকে পেছনে ফেলেছি। গত ১০ বছরে আমরা যা করেছি, আগামী ৫ বছরে তার চাইতে বেশি করে আমরা আবার আসবো। চট্টগ্রামকে নিয়ে আমাদের অনেক সুন্দর সুন্দর চিন্তা আছে। চট্টগ্রামের জন্য অসংখ্য প্রকল্প দিয়েছি, কিন্তু কাজগুলো হয় নাই। সবগুলো আনটাস রয়ে গেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ব অর্থনীতির ৩০তম দেশ। ২০২৮ সালে আমরা ২৭ নম্বরে পৌঁছব, একইভাবে ২০৩৩ সালে ২৪তম স্থানে যাব। আমাদের কর্মপরিকল্পনা স্থির।

আমিনুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নেতাকর্মীরা তাঁর জীবন থেকে একটু শিক্ষা নিলে নিখাদ মানুষ হওয়া যায়। ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ অথবা ‘কারাগারের রোজনামচা’ ওখান থেকে দুইটা লাইন আমাদের জীবনে লাগাতে পারি তাহলে কিছুই লাগে না। এখন নেতারা রাজনীতি করেন কামানোর জন্য। আর কর্মীরা খরচ করছে দল টিকিয়ে রাখার জন্য। আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ইঞ্চি ইঞ্চি গড়ছেন, আর আমরা আওয়ামী লীগের নামধারীরা মাইল মাইল ধ্বংস করছি। আমাদের মধ্যে কোন অনুভূতি কাজ করে না। আমরা পাষাণ হয়ে যাচ্ছি। আবরার আমাদের কাছে ফেরত আসবে না। কিন্তু তাকে মারতে গিয়ে যে ১৯ জন আসামী হয়েছে, তাদের বিচার কি হবে জানি না, তারা হয়তো বড় ব্যবসায়ী হবে, মাস্তান হবে, কিন্তু তারা কখনো তাদের মা-বাবার স্বপ্নের ধারেকাছেও যেতে পারবে না।

ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি বলেন, আমার বাবা আমাদের রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বজায় রাখার, বড়কে, ছোটকে, সহকর্মীকে সবসময় সম্মান করার শিক্ষা দিতেন। সবসময় বলতেন, মানুষের হৃদয়ে কষ্ট দেওয়া, মসজিদ ভাঙার চেয়েও গর্হিত কাজ। আমার বাবার এই উপদেশ আমরা প্রতিদিন স্মরণ করি। আমার পিতা-মাতার মতো আমিও যাতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারি হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মী হয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিতে পারি।
এমএ সালাম বলেন, কায়সার ভাইয়ের কোন গ্রুপ ছিল না। তার পক্ষে স্লোগান দেওয়ার জন্য কাউকে উৎসাহ দিতে দেখিনি। তিনি আপাদমস্তক অজাতশত্রু মানুষ। চট্টগ্রামের রাজনীতির নানান ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে কায়সার ভাইকে আমি কোন পক্ষ নিতে দেখিনি। সবসময় গ্রুপ হলে সেটাকে মিলিয়ে দেওয়ার ভূমিকা নিতেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ