রবিবার, মে ৫, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়রিফাত হত্যায় স্ত্রী মিন্নি গ্রেপ্তার

রিফাত হত্যায় স্ত্রী মিন্নি গ্রেপ্তার

বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে, বরগুনা পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, ‘রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। যেহেতু মিন্নি প্রধান সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শী মিন্নি তাই দীর্ঘদিন ধরেই তাকে পুলিশের নজরদারিতে রাখা হয়। পরে, আজ সকালে তার বক্তব্য রেকর্ড ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনা পুলিশ লাইনে আনা হয়। সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে পাওয়া তথ্য থেকে রিফাত হত্যায় তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে গ্রপ্তার দেখানো হয়েছে।

এর আগে,  মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় মামলার প্রধান সাক্ষী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বরগুনা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেয়া হয় মিন্নিকে। সে সময়, মিন্নির সঙ্গে তার বাবা-মাও ছিলেন। তবে, তখনও মিন্নিকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়নি বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

সে সময় পুলিশ সুপার জানান, তার বক্তব্য রেকর্ড ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে। এর আগে, গেল শনিবার রাত ৮টার দিকে, বরগুনা প্রেসক্লাবে রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন রিফাত হত্যাকাণ্ডের সাথে তাঁর পূত্রবধূ মিন্নি জড়িত। সিসিটিভি ফুটেজে পুত্রবধু মিন্নির গতিবিধি সন্দেহজনক বলে দাবি করে তিনি বলেন, রিফাতকে সন্ত্রাসীরা আক্রমণের প্রথম দিকে মিন্নির তৎপরতা ছিল স্বাভাবিক।

পরবর্তীতে, সে দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করতে চাইলেও বিষয়টি ছিল পরিকল্পিত। তিনি, মিন্নিকে এ ঘটনার পরিকল্পনায় যুক্ত দাবি করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

তবে, পরদিন রবিবার পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে শ্বশুরের এ বক্তব্যকে বানোয়াট বলে দাবি করে রিফাতের স্ত্রী মিন্নি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মিন্নি বলেন, আমার শ্বশুর বর্তমানে অসুস্থ। তিনি তার একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি যা বলেন তার কিছুই তার মনে থাকেনা। আসামিরা বিচারকে অন্যদিকে প্রভাবিত করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে আমাকে হয়রানির চেষ্টা করছে। এমনকি তারা আমার ছবি এডিট করে নয়ন বন্ডের সঙ্গে যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করছে। আর যারা ০০৭ নামে ম্যাসেঞ্জার গ্রুপটি তৈরি করেছে তারা খুবই ক্ষমতাবান।

রিফাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১০ আসামি হত্যার দায় স্বীকার করেছে। গ্রেপ্তার অন্য তিন আসামি রিমান্ডে রয়েছে। এজাহারভূক্ত পাঁচজনকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

প্রসঙ্গত,গত ২৬শে জুন স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে নিয়ে বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে ফেরার পথে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজীসহ আরও দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। এ সময়, ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারা। রিফাতকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায় তারা। পরে, স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় গুরুতর আহত রিফাত শরীফকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত শরীফের মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ