শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
প্রচ্ছদটপপল্লীনিবাসেই হবে এরশাদের শেষ ঠিকানা

পল্লীনিবাসেই হবে এরশাদের শেষ ঠিকানা

রংপুরেই জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিজ হাতেগড়া পল্লীনিবাসেই হবে তার শেষ ঠিকানা। ১৬ জুলাই বিকেলে ‘পল্লীনিবাসে’ বসেই  জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও এরশাদের ছোটভাই জি এম কাদের এ কথা জানান। এ সময় জাপার মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, সংসদ সদস্য আবু হোসেন বাবলাও উপস্থিত ছিলেন।

জিএম কাদের বলেন, রংপুরে জানাজা শেষে আমরা চেয়েছিলাম তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে। কিন্তু রংপুরবাসীর আবেগের কাছে আমরা হার মেনেছি। এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদও এ সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছেন। এ সময় রাঙ্গা বলেন, রংপুরের মানুষের ভালোবাসা ও আকুতির কাছে আমরা পরাজিত হয়েছি। আমরা চেয়েছিলাম জাতীয় এ নেতার সমাধি ঢাকায় হবে। যাতে দেশ ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিরা তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন। আমরা এখানেও (রংপুর) তার কবরের পাশে মিউজিয়ামসহ যাবতীয় স্থাপনা করবো।

এর আগে জাতীয় পার্টির সদ্য প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের দাফন রংপুরে করার দাবিতে সেখানে তার শেষ জানাজায় হট্টগাল শুরু করেন নেতাকর্মীরা। বেলা ১২টার পর রংপুর শহরের কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দানে চতুর্থ ও শেষ জানাজার জন্য এরশাদের মরদেহ নেওয়া হয়। সেখানে লক্ষাধিক মানুষ জানাজা শরিক হয়। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৪ জুলাই সাবেক সামরিক শাসক এরশাদের মৃত্যু হয়। ওইদিন বাদ জোহর ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তার প্রথম জানাজা হয়।

১৫ জুলাই বিরোধী দলীয় নেতা এরশাদের দ্বিতীয় জানাজা হয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। এরপর বাদ আসর বায়তুল মোকররম জাতীয় মসজিদে তৃতীয় দফায় জানাজা হয়। এরশাদের মৃত্যুর দিন জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রয়াত এই নেতার দাফন হবে বনানীতে সামরিক কবরস্থানে। তবে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জাতীয় পার্টির নেতা মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাসহ স্থানীয় নেতারা রংপুরে এরশাদকে কবর দেওয়ার দাবি করেন। সোমবারও এই দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ঢাকা তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে এরশাদের কফিন নিয়ে রংপুরের উদ্দেশে রওনা হয়। কফিনের সঙ্গে রংপুর যান জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদের, এরশাদের ছেলে রাহগির আল মাহি শাদ এরশাদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা।

বেলা ১২টার পর রংপুর ঈদগাহ ময়দানে এরশাদের মরদেহ নেওয়া হয়। এরপর থেকেই সেখানে রাখা মাইকে এরশাদকে রংপুরে দাফনের দাবি ওঠে। জানাজার আগে বক্তৃতায় মেয়র মোস্তফা এই দাবি আবারও তোলেন। এরপর জি এম কাদের বক্তব্য শুরু করেন। কিন্তু তার বক্তব্যের মাঝেই দাফনের বিষয়টি উল্লেখ করে স্লোগান শুরু হয়। এ সময় নেতাকর্মীদের মাঝে হট্টগোল শুরু করেন তারা।

এক পর্যায়ে বক্তব্য শেষ না করেই বেলা ২টা ২৫মিনিটে এরশাদের জানাজা শুরু হয়। জানাজার পর শত শত কর্মী এরশাদের মরদেহ বহনকারী গাড়িটি ঘিরে ধরেন। তাদের দাবি, রংপুরেই প্রয়াত নেতার কবর দিতে হবে। তখন ওই গাড়িতে ওঠে যান রংপুর সিটি মেয়র মোস্তফা। এ সময় মাইক থেকে তার প্রতি আহ্বান জানানো হয়, মরদেহ যেন রংপুর থেকে ঢাকায় না যায়। এ অবস্থায় বেলা ৩টার দিকে এরশাদের মরদেহ রংপুর শহরের ‘পল্লীনিবাসে’র দিকে নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ