শনিবার, মে ৪, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনআনোয়ারায় গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি আব্দুর নূর বন্দুকযুদ্ধে নিহত

আনোয়ারায় গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি আব্দুর নূর বন্দুকযুদ্ধে নিহত

আনোয়ারার আলোচিত গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি আব্দুর নূর (২৮) ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। রবিবার সকালে আনোয়ারা উপজেলা হাজিগাঁও পাহাড়ে চায়না ইকোনোমিক জোন এলাকা হতে পুলিশ তার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি দেশীয় তৈরি এলজি, দুটি কার্তুজ, দুটি গুলির খালি খোসা, তিনটি ছোরা উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে আনোয়ারা থানায় হত্যা ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। নিহত আব্দুর নূর আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ এলাকার মৃত আব্দুস সত্তারের পুত্র। সে আনোয়ারা কোরিয়ান ইপিজেডের গার্মেন্টস কর্মী গণধর্ষণের মূল হোতা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ জানান, হাজিগাঁও পাহাড়ের ভেতর থেকে ধর্ষণ মামলার আসামি আব্দুর নূরের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়। তিনি আরো জানান, ধারণা করা হচ্ছে ছিনতাই করা টাকা ভাগবাটোয়ারা করার সময়কালে দু’ পক্ষের মধ্যকার গোলাগুলিতে আব্দুর নূর মারা গেছে। নিহতের বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলাসহ থানায় কয়েকটি মামলা রয়েছে। নিহত আব্দুর নুরের লাশ রবিবার (গতকাল) বিকেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে পুলিশ তার স্ত্রীর কাছে স্থানান্তর করেছে। রাতেই তাকে দাফন করা হয়। নিহত আবদুর নুর পরিবারের একমাত্র ছেলে। তার মা, স্ত্রী ও ৩টি কন্যা সন্তান রয়েছে। তার আর্থিক অবস্থাও তেমন ভাল না। তার স্ত্রী কোরিয়ান ইপিজেডের গার্মেন্টসে কর্মরত। পেশায় সে সিএনজি ট্যাক্সিচালক। এলাকার মানুষের কাছে তার স্বভাব চরিত্র ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। সিএনজি ট্যাক্সি চালক থেকে সে ছিনতাইকারী হিসেবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে পরিচিত।

উল্লেখ্য, গত ০৩ জুলাই রাত ৮ টায় কোরিয়ান ইপিজেড কারখানা ছুটি হওয়ার পর চন্দনাইশে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে গার্মেন্টস কর্মী চাতরী চৌমুহনীতে পৌঁছলে সিএনজি ট্যাক্সিতে তুলে নিয়ে দুর্বৃত্তরা চায়না রোডের নির্জন স্থানে পালাক্রমে তাকে গণধর্ষণ করে। পরবর্তীতে থানায় এ ব্যাপারে ধর্ষণ মামলা রুজু হয়। ধর্ষণের মামলায় জড়িত সিএনজিট্যাক্সি চালক মো. মামুন (১৮) ও মো. হেলাল উদ্দীনকে (৩০), পুলিশ গত শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করে। শনিবার গ্রেপ্তারকৃতদের কোর্টে তুললে নিজেদেরকে ঘটনায় জড়িয়ে ১৬৪ ধারায় তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ধর্ষণের ঘটনায় চারজনকে পুলিশ শনাক্ত করে।
এদিকে গতকাল (রবিবার) ভোরে ধর্ষণ মামলার মূল হোতা হাজিগাঁও পাহাড়ে নিজেদের মধ্যে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) মাহাবুব মিলকী বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত চারজনের মধ্যে দু’ জন গ্রেপ্তার, একজন প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হয়। এ ঘটনায় থানায় হত্যা ও অস্ত্র আইনে পুলিশ বাদি হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছে। এসআই জালাল উদ্দিন বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা ও এসআই আকরাম বাদি হয়ে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার ০২ নং আসামি শহিদুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, সোমবারের (আজ) মধ্যে যে কোন উপায়ে পুলিশ শহিদকে গ্রেপ্তার করবে। গণধর্ষণ ঘটনার পর সর্বমহলে তোলপাড় সৃষ্টি হলেই পুলিশ বেকায়দায় পড়ে। ঘটনার ৪দিনের মধ্যে ১টি টেলিফোনের নম্বারের সূত্র ধরে পুলিশ ৪ জন গণধর্ষণকারীকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পুলিশের তড়িৎ একশনে এলাকায় পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ