বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
প্রচ্ছদআরো খবর......মালয়েশিয়ার পেরাক প্রদেশে অনুষ্ঠিত হলো রোড শো এন্ড ব্রান্ডিং বাংলাদেশ

মালয়েশিয়ার পেরাক প্রদেশে অনুষ্ঠিত হলো রোড শো এন্ড ব্রান্ডিং বাংলাদেশ

২৭ জুন ২০১৯ তারিখ বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার পেরাক প্রদেশে অনুষ্ঠিত হলো ‘রোড শো এন্ড ব্রান্ডিং বাংলাদেশ’। অনুষ্ঠানে পেরাক প্রদেশের ইনভেস্টমেন্ট এন্ড করিডোর ডেভেলপমেন্ট এর প্রধান দাতো সেরি হাজি মোহাম্মদ নিজার বিন জামালুদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। চাইনিজ চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট, পেরাক মালয়েশিয়া চেম্বারস অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট, স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, শিল্প মালিক এবং নিয়োগকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অভ্যুদয়, অদম্য অগ্রযাত্রা এবং বিশ্বে বাংলাদেশের ভূমিকা সম্পর্কে ভিডিও প্রেজেন্টেশন করা হয়।FB_IMG_1561644488214

হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা সম্পর্কে বিশদভাবে তুলে ধরেন এবং প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন এ মুহুর্তে বাংলাদেশ সৃজনশীল নেতৃত্বে উপযুক্ত ম্যাক্রোইকনমিক পলিসি এবং উন্নয়নের সঠিক অগ্রাধিকার নির্ধারন করে এগিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘ, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক এবং আইএমএফ বাংলাদেশকে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৮.১৩% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। অন্যান্য উদীয়মান অর্থনীতির তুলনায় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ‘আউট স্ট্যান্ডিং’। বাংলাদেশে ব্যবসা করার ব্যয় তুলনামূলক কম।

তিনি বলেন দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ অনেক সুবিধাজনক ভৌগোলিক অবস্থানে আছে। বঙ্গোপসাগর কন্যা বাংলাদেশ থেকে শুধু স্থল ও আকাশ পথে নয়, সমুদ্র পথে সহজেই দক্ষিণ, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং আমেরিকা, আফ্রিকা ও ইউরোপের সাথে বাণিজ্য করা যায়।

বিশ্বে উৎপাদনের মূল শ্রমশক্তির এক বিশাল অংশ এখন বাংলাদেশে অবস্থান করছে। বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় বাংলাদেশে শ্রম মূল্য কম। ইতোমধ্যে শ্রমব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করায় ইউরোপ-আমেরিকার ভোক্তাদের নিকট সমাদৃত হয়েছে। পরিশ্রমী এ জনশক্তির রয়েছে সৃজনী ক্ষমতা এবং অল্প সময়ের মধ্যে দক্ষতা অর্জন করে।

তিনি বলেন দেশে বৃহত্তর ভোক্তা বাজার, জ্বালানী ক্ষেত্রে উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, বিনিয়োগ বান্ধব আইন ও নীতি রয়েছে। বাংলাদেশ হতে উৎপাদিত পণ্য ইতোমধ্যে ডিউটি ফ্রি প্রবেশাধিকার পেয়েছে ভারত, ইউরোপিয় ইউনিয়ন, জাপান এবং প্রধান উন্নত দেশগুলোতে। অধিকন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে রয়েছে কোটা ফ্রি প্রবেশ সুযোগ।

৮ টি রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল ছাড়াও সরকার মোট একশ’টি স্পেশাল ইকনমিক জোন স্থাপন করছে বিনিয়োগকারিদের জন্য। দি ফরেন প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট (প্রমোশন এন্ড প্রটেকশন) এক্ট করে বিদেশী বিনিয়োগের শতভাগ সুরক্ষা দেয়া হয়েছে।

তিনি বাংলাদেশের ট্যুরিজম শিল্পে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান। বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থাপনা, ঐতিহাসিক ঘটনা, ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সহাবস্থান, সৃংস্কৃতি এবং বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত, পাহাড়, সমতল এবং সাগর রয়েছে। দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ এবং শান্ত গ্রামীন জীবন ও পরিবেশ। ছয় ঋতুতে ফুটে ওঠা বাংলার ছয়টি প্রকৃতি। আছে নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া।

ঐতিহাসিক ঘটনাগুলোরমধ্যে বিশ্বে এককভাবে স্থান দখল করে আছে মাতৃভাষা আন্দোলন এবং শহীদ মিনার। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্মৃতিসৌধ এবং জাতির পিতা বংবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবন বিশ্বের অন্যতম স্থাপনা। বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।

তিনি কৃষি ভিত্তিক শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন। আছে সুস্বাদের সাদা পানি ও সামুদ্রিক উভয় প্রকার মাছ। এছাড়াও আছে কাঁকড়া ও চিংড়ি । ভিন্ন স্বাদের বিশ্বখ্যাত ইলিশ রয়েছে বাংলাদেশের।

বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব মোকাবিলা করবার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পাট এর গুরুত্ব তুলে ধরেন। পাট পণ্য পরিবেশ বান্ধব। পাট পাতার পানীয় স্বাস্থ্যসম্মত যা জার্মানিতে রপ্তানি করা হচ্ছে। পাট শিল্পকে কেন্দ্র করে স্পেশাল ইকনমিক জোন করেছে।

আরো কিছু পণ্য যেমন বাংলার রেশম ও মসলিন সম্পর্কে ধারনা প্রদান করে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।

অপ্রচলিত পণ্য যেমন বাঁশ, বেত, মাটি, কচুরিপানা ও কাঠ থেকে তৈরি অপ্রচলিত অনেক পণ্য তথা কারুপণ্য ও নকশীকাঁথা বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। প্লাস্টিকের আগ্রাসন থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করতে এসব খাতে বিনিয়োগের বিকল্প নেই বলে জানান।

এছাড়াও পরিবহন, তথ্য যোগাযোগ, শিক্ষা, চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ করার সুযোগের তথ্য তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ