শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনআগামী মাসে খুলে দেয়া হবে পটিয়া বাইপাস সড়ক

আগামী মাসে খুলে দেয়া হবে পটিয়া বাইপাস সড়ক

পটিয়া বাইপাস সড়ক আগামী মাসে (এপ্রিল) যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। চট্টগ্রাম-দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীন প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। তবে এর দু’মাস পূর্বে সড়কের কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। জানা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানজট নিরসনে পটিয়ায় ইন্দ্রপুল থেকে চক্রশালা গিরিশ চৌধুরী বাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার বাইপাস সড়ক নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। চট্টগ্রাম-দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিলাইবেল বিল্ডার্সকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। ২০১৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বাইপাস নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হয়। সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কাজের উদ্বোধন করেন। কিন্তু নাথপাড়ায় জায়গা জটিলতা নিয়ে ’১৮ সালের ৩০ জুনের মধ্যে এ সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করার চুক্তি থাকলেও তা করা সম্ভব হয়নি। নাথপাড়া এলাকার মন্দিরের পাশসহ কিছু ঘরবাড়ির উপর দিয়ে রাস্তার নকশা তৈরি করা হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ও মন্দির, শ্মশান রক্ষা করার জন্য এলাকাবাসী এ নকশা পরিবর্তনের দাবি জানায়। ফলে সড়ক বিভাগসহ স্থানীয় এমপি, চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি এলাকাবাসীর সাথে সমঝোতা বৈঠক করে মন্দিরের উত্তর পাশ দিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ জটিলতায় সড়কের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকা কাজ সম্পন্ন করা হলেও ভাটিখাইন নাথপাড়া এলাকায় প্রায় অর্ধ কিলোমিটার জায়গায় কাজ শুরু করা যায়নি। পরবর্তীতে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতবছর নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে নাথপাড়া মন্দিরের উত্তর পাশের জায়গা দিয়ে সড়ক নির্মাণের নির্দেশ দেন। বর্তমানে ওই জায়গা দিয়ে সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত জায়গার মালিকেরা তাদের কোন ক্ষতিপূরণ পাননি বলে জানান।

এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম মজুমদার জানান, ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১৮ মিটার প্রস্থের সড়কে ২০টি কালভার্ট ও শ্রীমাই খালের উপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। এখন জায়গার ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সর্বশেষ এ প্রকল্পের বরাদ্দ প্রায় ৯৯ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যে ৫ কিলোমিটার সড়কের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করা হয়েছে এ প্রকল্পের নাথপাড়া জায়গায় ইতিমধ্যে এলাকাবাসী ও কর্তৃপক্ষের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে জায়গা জটিলতা নিরসন করা হয়েছে। এ সমস্ত জায়গার মালিকদের চট্টগ্রাম এল এ শাখার কাজ থেকে তাদের ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে সড়ক বিভাগ কর্তৃক আগামী ১৯ সালের ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য আরো ১ বছর সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। আশা করি এ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম-দোহাজারী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহেদ হোসেন জানান, ২০১৮ সালের ৩০ জুনের মধ্যে পটিয়া বাইপাস সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও জায়গা জটিলতায় নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে জায়গার জটিলতা নিরসন করে নাথপাড়া এলাকার প্রায় ৫০০ মিটার এলাকার কাজ করা হয়েছে। ফলে আগামী ১ বছরের জন্য এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। বর্তমানে প্রকল্প কাজ ৯০% শেষ হয়েছে। বর্তমানে সড়কে ৩ স্তরের কার্পেটিং, ডিভাইডার স্থাপন, বিদ্যুৎ খুঁটি স্থাপন, প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ চলছে। তিনি বলেন, চলতি বছরের এপ্রিলের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হবে।

উল্লেখ্য যে, পটিয়া বাইপাস সড়ক নির্মাণের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার মনসা বাদামতল থেকে চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজাহারী পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের গত ২০০৭-০৮ অর্থবছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে টেন্ডার দেয়া হয়। এতে রাস্তার দুপাশের জায়গার হুকুম দখল, বাঁক সোজা করণসহ বাইপাস সড়ক নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া হয়। ইসলাম ট্রেডিং নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ প্রকল্পে’র টেন্ডার গ্রহণ করেন। প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর থাকলেও নির্দিষ্ট মেয়াদে উক্ত ঠিকাদার কাজ সমাপ্ত করতে পারেনি। তন্মধ্যে ভাটিখাইনের শ্রীমাই খালের উপর ব্রিজ নির্মাণ কাজ এবং চক্রশালী গীরিশ চৌধুরী বাজার এলাকায় কালভার্ট ও করল এলাকায় একটি ব্রিজসহ কিছু রাস্তার কাজ করা হয়। এতে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় বাকি প্রায় ৮০ কোটি টাকা ফেরত যায়। ফলে সেই প্রকল্প আর বাস্তবায়ন হয়নি। পরবর্তীতে পটিয়ার এমপি সামশুল হক চৌধুরী’র প্রচেষ্টায় সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ে শুধুমাত্র পটিয়ার ইন্দ্রপুল থেকে গিরিশ চৌধুরী বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়ক পটিয়া বাইপাস সড়ক নির্মাণ কাজের জন্য ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়ে গত ২০১৭ সালে টেন্ডার দিয়ে কাজ শুরু করেন। এ কাজ ২০১৮ সালের ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার সময় থাকলেও জায়গা জটিলতায় নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি। এ প্রকল্পে’র মেয়াদ আরো ২০১৯ সালের ৩০ জুন পযর্ন্ত ১ বছর বৃদ্ধি করে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ