দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিত করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, আমার দায়িত্বকালের মধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়কে টপ ফাইভে (শীর্ষ পাঁচ) না নিতে পারলে নিজেকে ব্যর্থ বলে মনে করবো। ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে ঢাকা মহানগরসহ সমগ্র জেলায় শতভাগ ই-নামজারি কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
‘ই-নামজারি’ অ্যাপ্লিকেশনটি মূলত ‘জমি’ নামক জাতীয় ভূমি-তথ্য ও সেবা অনলাইন প্ল্যাটফর্মের (www.land.gov.bd) একটি অংশ। এই ফেব্রুয়ারিতে সারাদেশে ই-নামজারি কোর্স সমাপ্ত এবং আগামী জুনের মধ্যে দেশব্যাপী শতভাগ ই-নামজারি কার্যক্রম চালু করার কথা রয়েছে। একইসঙ্গে ভূমি সেবাগ্রহীতাগণের সুবিধার্থে অভিযোগ কেন্দ্র গঠনের জন্য হটলাইন, সরকারের সঙ্গে ভূমি সম্পর্কিত বিভিন্ন লেনদেনের জন্য ই-পেমেন্ট ব্যবস্থা চালুকরণের জন্য একটি পেমেন্ট গেটওয়ে স্থাপন এবং অনাবাসী বাংলাদেশিদের সেবা দেওয়ার জন্য একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করার বিষয়গুলোও প্রক্রিয়াধীন। এগুলো মূলত পুরো ভূমি ব্যবস্থাপনাকে ইন্টিগ্রেটেড অটোমেশনের ভেতর নেওয়ার পর্যায়ক্রমিক ধাপ।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে ভূমি ব্যবস্থাপনায় সু-শাসন নিশ্চিত করা সম্ভব। সুশাসন নিশ্চিত করতে পারলে আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। ভূমি ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন যেন টেকসই হয়, সেজন্য আমরা বদ্ধপরিকর। অনুষ্ঠানে দু’জন সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় শতভাগ ই-নামজারি পদ্ধতি কার্যকর করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে ই-নামজারি সম্পর্কিত সচেতনতামূলক নাটিকা প্রদর্শন করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়ার পর ৯০ দিনের প্রাথমিক কর্মসূচি গ্রহণ করি। এছাড়া, আমার মেয়াদের প্রথম দেড়বছর ‘স্বল্পমেয়াদী’, পরবর্তী দেড়বছর নিয়ে ‘মধ্যমেয়াদী’ এবং শেষ দুই বছর নিয়ে ‘দীর্ঘমেয়াদী’ পরিকল্পনা সাজিয়েছি। পুরো পাঁচ বছরের জন্য সাজিয়েছি কর্মপরিকল্পনার ‘ডেডলাইন’। ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই সম্যক ধারণা বেশ কম, যদিও সবার জীবন এবং পরিবারের সঙ্গে বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ভূমি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে স্কাউট সদস্য এবং স্থানীয় তরুণদের সম্পৃক্ত করে দেশব্যাপী শিগগির ভূমি সপ্তাহ এবং ভূমি উন্নয়ন মেলা পালন করা হবে। মন্ত্রী জানান তিনি টিমে বিশ্বাসী। তিনি আশা ব্যক্ত করেন সবাই মিলে ভালোভাবে কাজ করলে অবশ্যই ভূমিখাতের যাবতীয় সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, কাজের স্বার্থে আমার দরজা সবার জন্য খোলা। মাঠ পর্যায় থেকে আমরা আইডিয়া নিতে ইচ্ছুক। জনস্বার্থে যেকোনো কার্যকর আইডিয়া গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে বাস্তবায়ন হবে। মুজিববর্ষ (২০২০-২১) শুরু হওয়ার আগেই ভূমি মন্ত্রণালয়কে একটি পর্যায় নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী আমরা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাক্ছুদুর রহমান পাটোয়ারী এবং ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ। আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. নুরুন্নবী। সভাপতিত্ব করেন ঢাকার জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান।