আওয়ামী লীগ ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চায় না। তবে অনির্বাচিত সরকারের অধীনে আর নির্বাচন হতে দেয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে মাদারিপুরের তৃণমূল নেতাদের সাথে বৈঠকে তিনি আরো বলেন, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে যেভাবে নির্বাচন হওয়ার কথা সেভাবেই নির্বাচন হবে। মাদারীপুরের আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সাথে মত বিনিময় কালে আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান। দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক এগারো পরবর্তী সময়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের দৃঢ় অবস্থানের কারণেই দেশে গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হয়। শেখ হাসিনা আরও বলেন,আওয়ামী লীগ জনগনের ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে,অধিকারে বিশ্বাস করে কখোনো অধিকারে হস্তক্ষেপ করে না। আর সংসদীয় গণতন্ত্রের আওতায় এবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।কারণ আমাদের দেশে নির্বাচন নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে যা জনগনের জন্য অনেক জুলুম সৃষ্টি করে।
দেশে আর যেন ওয়ান ইলেভেনের পরিস্থিতি না আসে সেজন্য জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ওয়ান ইলেভেনের মত পরিস্থিতি ঠেকাতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সক্রিয় হতে হবে। আজ (বৃহস্পতিবার) গণভবনে মাদারীপুর তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় কলেছেন,
“লুটেরা, জঙ্গিবাদী এবং বিদেশে অর্থ পাচারকারীরা আর যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে- সে ব্যাপারেও দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে।” বিরোধী দলের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে পাশ কাটিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারো বরেছেন, কোনো অনির্বাচিত ব্যক্তি আর ক্ষমতায় যেতে পারবেন না। বিশ্বের প্রতিটি সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন হবে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে, সেভাবেই আমরা আগামী নির্বাচন করব। নির্বাচনকে আমরা জনগণের অধিকার হিসেবে দেখি। জনগণ যাকে ভোট দেবে তারাই ক্ষমতায় আসবে।” শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, “আমাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। জনগণ সঠিকভাবে ভোট দিতে পারেনি। সংখ্যালঘুরা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেনি। বর্তমান সরকারের আমলে পাঁচ হাজার ৬শ’ নির্বাচন হয়েছে। কেউ কোনো নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ তুলতে পারেনি।”
হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ইসলামী দলের প্রসঙ্গে টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যারা ধর্মে বিশ্বাস করে না, পবিত্র কুরআন শরীফ পোড়ায়, তারা আবার কিসের ইসলামের কথা বলে? তারা ইসলামের কথা বলে ফায়দা লুটতে চায়। মানুষকে ধোঁকা দিতে চায়। বাংলাদেশের মাটিতে আর ধর্ম নিয়ে ধোঁকাবাজি, মানুষকে বিভ্রান্ত করতে দেয়া হবে না।”
বিরোধী দলকে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি পরিহার করে সংসদে আসার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এসব নৈরাজ্য পরিহার করুন, সংসদে আসুন, কথা বলুন।
বিরোধী দলের নেত্রীর তীব্র সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা নির্বাচনী অঙ্গিকার পুরণে যুদ্ধাপরাধীর বিচার শুরু করেছি। তখন বিরোধী দলীয় নেত্রী মানুষ হত্যা করে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে চাচ্ছেন। ওনার কাজ মানুষ হত্যা করা, দেশে নৈরাজ্য চালানো।”
স্বভাবসুলভ আক্রমনাত্মক ভঙ্গিতে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি ডাকলাম তাকে সংলাপে উনি উত্তর দিলেন, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে। আমাকে বললেন আমি নাকি পালাবার পথও খুজে পাব না। কিন্তু ওনার আল্টিমেটাম তো ব্যর্থ হলো। এবার বলি কে পথ হারা পথিক হলো?”
শেখ হাসিনা বলেন, “হেফাজতের নৈরাজ্য সমর্থন দিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা ঢাকাবাসীকে তাদের সহায়তা করতে বললেন। কিন্তু ঢাকাবাসীতো এগিয়ে আসলে না। হেফাজতের ওপর ভর করে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নও পূরণ হলো না।”
এ সময় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন আহমেদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, হাবিবুর রহমান সিরাজ, আব্দুল মান্নান খান, মৃণাল কান্তি দাস, এনামুল হক শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।