শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশে পরিণত করব : প্রধানমন্ত্রী

২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশে পরিণত করব : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের প্রতি যে দৃঢ় আস্থা রেখেছে তার পরিপূর্ণ মূল্যায়ন করা হবে। তিনি বলেন, ‘সদ্যসমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে বিপুলভাবে বিজয়ী করেছে। আমরা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশে পরিণত করব, ইনশাআল্লাহ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে একথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে ১০ জানুয়ারি এক ঐতিহাসিক দিন।

জাতির পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৭০-এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু পাকিস্তানি সামরিক জান্তা জনগণের এ রায়কে উপেক্ষা করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখে। জাতির চূড়ান্ত মুক্তির লক্ষ্যে জাতির পিতা ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে ঘোষণা করেন, ‘‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’’ স্বাধীনতা ঘোষণা করার পরপরই পাকিস্তানি বাহিনী তাঁকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের নির্জন কারাগারে প্রেরণ করে। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস নিভৃত কারাগারে তিনি অসহনীয় নির্যাতনের শিকার হন। প্রহসনের বিচারে ফাঁসির আসামি হিসেবে তিনি মৃত্যুর প্রহর গুণতে থাকেন। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও তিনি বাঙালির জয়গান গেয়েছেন। পরাজিত পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাধ্য হয় বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে।

জাতির পিতা ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ঐদিন তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বিশাল জনসমুদ্রে এক ভাষণে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি সামরিক জান্তার নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দেন। বাঙালি জাতি ফিরে পায় জাতির পিতাকে। বাঙালির বিজয় পূর্ণতা লাভ করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সদস্যদের দ্রুত দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বন্ধু দেশসমূহ দ্রুত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে ওআইসির সদস্য হয়। বঙ্গবন্ধুর ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে অতি অল্পদিনের মধ্যেই বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান তৈরি হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে ধ্বংসস্তূপ থেকে টেনে তুলে সোনার বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী চক্র জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে।

সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৯৯৬ সালে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন জাতীয় ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল সময় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। বাঙালি জাতি দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ২০০৮ সালে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণ পুনরায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করে সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে।

তাঁর সরকার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশ ও জনগণের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বিগত ১০ বছরে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, কূটনৈতিক সাফল্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধিসহ প্রতিটি সেক্টরে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে পৃথিবীর ৫৭তম দেশ হিসেবে স্যাটেলাইট-প্রযুক্তির অভিজাত দেশের কাতারে যুক্ত হয়েছি। আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.৮৬ শতাংশ, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। দেশের দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়ে বর্তমানে ২১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের হার ১১ দশমিক ৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের মাথাপিছু আয় ১৭৫১ মার্কিন ডলার। শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে বই পাচ্ছে। শিক্ষার হার ৭৩ শতাংশ। দেশের ৯৩ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে এবং আশা করছি, স্বল্প সময়ের মধ্যেই তা শতভাগে উন্নীত হবে। প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ