বাংলাদেশের অর্থনীতির উত্তরোত্তর উত্থান ঘটছে। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলে বাংলাদেশে চলমান এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। ১৯ ডিসেম্বর জাপানভিত্তিক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক জার্নাল নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ’ বাংলাদেশ বিষয়ে এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে এমন অভিমত দিয়েছে। বাংলাদেশের উত্তরোত্তর উত্থান’ শীর্ষক ওই প্রচ্ছদ প্রতিবেদনটি লেখেন জার্নালটির এডিটর অ্যাট লার্জ গোয়েন রবিনসন। প্রতিবেদনে বলা হয়, অপেক্ষাকৃত কম আন্তর্জাতিক মনোযোগ পেলেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্যও বিশ্বের অন্যতম সাফল্যগাথায় রূপান্তর হয়েছে।
পরপর দুইবার ক্ষমতায় থাকার কারণে ভোটারদের মধ্যে ক্ষমতাসীনদের প্রতি কিছুটা বিরোধিতা থাকলেও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অনেকেই একমত যে আওয়ামী লীগ সামনের নির্বাচনে বিজয়ী হলে অধিকতর উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে এবং ক্ষমতাসীনরা বিজয়ী হলে বাংলাদেশ এক দীর্ঘমেয়াদী আকর্ষণীয় সাফল্যগাথা রচনা করবে। এ বছরের গোড়ার দিকে বাংলাদেশ ২০২৪ সাল নাগাদ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জাতিসংঘের নির্ধারিত শর্তাবলী পূরণ করায় দেশের ভাবমূর্তি বেড়েছে।
এই ডিসেম্বর মাসে নিক্কেই এশিয়ান জার্নালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এলডিসি থেকে বের হয়ে আসা আমাদের এক ধরনের শক্তি ও আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে, যা শুধু রাজনৈতিক নেতৃত্ব নয়, দেশের মানুষের জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এলডিসিভুক্ত থাকলে আপনাকে অপরের দয়ার ওপর নির্ভর করতে হয়। আর সেখান থেকে উত্তরণ ঘটলে আপনাকে আর কারও ওপর নির্ভর করতে হয় না। কারণ তখন আপনার নিজের অধিকার রয়েছে।
বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কেবল অব্যাহতই থাকবে না, বরং আরও গতিশীল হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা নিক্কেই এশিয়ানকে বলেন, আগামী পাঁচ বছরে আমরা ৯ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আশা করছি এবং ২০২১ সাল নাগাদ তা ১০ শতাংশ ছোঁবে বলেও আশা রাখছি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের পোশাকশিল্প বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে। গত এক দশক ধরে দেশটি গড়ে ৬ শতাংশের বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং এ বছর ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২০০৯ সালের পর থেকে বাংলাদেশের মানুষের মাথা পিছু আয় তিন গুণ বেড়েছে, যা বর্তমানে ১৭৫০ মার্কিন ডলার। এ ছাড়া অতি দারিদ্র্যের হার ১৯ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশে নেমে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের রফতানির পরিমাণ রেকর্ড ৩৬ দশমিক ৭ বিলিয়নে পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সাল স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এটিকে ৫০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যেতে শিল্পখাতকে আহ্বান জানিয়েছেন। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সূচিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রকল্পের কারণে দেশটির আইটি খাত ছোট হলেও বর্তমানে উদীয়মান একটি খাত। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে এ কারণেই বাংলাদেশ এখন এই খাত নিয়ে বলিষ্ঠভাবে কথা বলতে পারে। ওষুধ তৈরিতেও বাংলাদেশের গতি ঊর্ধ্বমুখী।