শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনচট্টগ্রামে আপিল করেছেন ১০ জন বাকিরা আজ করবেন

চট্টগ্রামে আপিল করেছেন ১০ জন বাকিরা আজ করবেন

চট্টগ্রামে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসিতে আপিল করেছেন ১০ জন। চট্টগ্রামের ১৬ আসনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাইকালে বিএনপি, জাসদ, এলডিপিসহ বিভিন্ন দলের ৪৬জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছিল। আজ আপিলের শেষ দিন। বাতিল হওয়া বিএনপির সব হেভিওয়েট প্রার্থী আজ আপিল করবেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও অন্যান্য দলের সংক্ষুব্ধ এবং স্বতন্ত্র অনেকেই আজ শেষদিনে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন। গত দুইদিনে চট্টগ্রামের দুই রিটার্নিং কর্মকর্তা-চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেনের কাছ থেকে ২৬ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র বাতিলের আদেশ কপি সংগ্রহ করেছেন। গত সোমবার প্রথমদিন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও তার ছেলে ব্যারিস্টার মীর হেলাল নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছিলেন। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত তিনদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ কমিশন আপিলের ওপর শুনানি করে সিদ্ধান্ত দেবেন। সেখানে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তারা উচ্চ আদালতে যেতে পারবেন। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীদের যারা আপিল করছেন তাদের প্রতিটি কেস (আপিল) মেরিট অনুযায়ী দেখা হবে। আপিল শুনানিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কারো প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করবে না। শুনানিতে যা কিছু হবে, তা আইনানুগভাবেই হবে। কমিশন সব ব্যাপারেই একটা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে। চট্টগ্রামের সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান আজাদীকে জানান, গত সোমবার ১২ জন প্রার্থী আপিলের জন্য রিটার্নিং অফিসার থেকে মনোনয়নপত্র বাতিলের আদেশ কপি সংগ্রহ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার করেছেন ১৪ জন। এদের মধ্যে চট্টগ্রাম-১ মিরসরাই আসনের বিএনপি প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, চট্টগ্রাম-২(ফটিকছড়ি) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াস উদ্দীন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৩ সন্দ্বীপ আসনে বিএনপির মো. মোস্তফা কামাল পাশা ও জাসদের মো. আবুল কাশেম, চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুন্ড ) আসনের বিএনপির আসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে বিএনপির মীর মো. নাছির উদ্দিন ও তার ছেলে মীর হেলাল উদ্দিন, জমিয়তে উলামায়ের মো. নাসির উদ্দিন ও স্বতন্ত্র এ্যাডভোকেট মাসুদুল আলম বাবলু, চট্টগ্রাম-৬ রাউজান আসনে বিএনপির মো. সামির কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৭ রাঙ্গুনিয়া আসনে বিএনপির আবু আহমেদ হাসনাত ও বিএনএফের মো. আব্দুল আলীম, চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী) আসনে বিএনপির এম মোরশেদ খান ও এরশাদ উল্লাহ, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাসান মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনে ইসলামী ঐক্যজোটের মো. দুলাল খান, জাতীয় পার্টির মোরশেদ সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম-১০ (পাহাড়তলী-ডবলমুরিং) আসনে জাতীয় পার্টির মো. ওসমান খান ও জাতীয় পার্টির (জেপি) আজাদ দোভাষ এবং চট্টগ্রাম-১১( বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা আবু সাঈদ আপিল করার জন্য মনোনয়নপত্র বাতিলের আদেশ কপি সংগ্রহ করেছেন।
চট্টগ্রাম-১২ পটিয়া আসনে এলডিপির এম এয়াকুব আলী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবু তালেব হেলালী, চট্টগ্রাম-১৩ আনোয়ারা-কর্ণফুলী আসনের বিএনএফের নারায়ন রক্ষিত, চট্টগ্রাম-১৫ লোহাগাড়া-সাতকানিয়া আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল জব্বার এবং চট্টগ্রাম-১৬ বাঁশখালী আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম আপিলের জন্য রিটার্নিং অফিসার থেকে মনোনয়নপত্র বাতিলের আদেশ কপি সংগ্রহ করেছেন।
উল্লেখ্য চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনে মোট ১৮০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এর মধ্যে গত ২ ডিসেম্বর বাছাইকালে ঋণ খেলাপী, বিল খেলাপী, হলফনামায় তথ্যের গড়মিল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এক শতাংশ ভোটের তালিকায় তথ্যের গড়মিল থাকার কারনে রিটার্রিং কর্মকর্তা ৪৬ জনের মনোনয়ন পত্র বাতিল করেন। এখন চট্টগ্রামের ১৬ আসনে বৈধ প্রার্থী রয়েছে ১৩৪ জন। আপিল শুনানিতে যাদের মনোনয়ন বৈধ হবে তারা আবার নির্বাচনী মাঠে আসবেন।
ওদিকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার গতকাল আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আপিল দাখিল কার্যক্রম পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘নিরপেক্ষতা আপেক্ষিক। কোন কোন ক্ষেত্রে একজন সাজাপ্রাপ্ত হন, পরে আবার তিনি খালাসও পান। সেক্ষেত্রে আমি বলব, ন্যায়বিচার বিষয়টি পুরোপুরি আপেক্ষিক।’ উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে কি না এবং আপিলে কমিশন নিরপেক্ষতার পরিচয় দেবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা আপিল করেছেন বা করছেন, শুনানিতে তারা তাদের তথ্যগুলো উপস্থাপন করবেন। এ বিষয়ে ব্যক্তিগত কোন অভিমত নেই।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ আছে কি নেই, যদি দুই পক্ষই (আওয়ামী ও বিএনপি) অভিযোগ করে, আমরা এখন কী বলব? নির্বাচনী পরিবেশ আছে কি নেই সে বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে দেখতে পারি। এই মুহূর্তে আমি কোনো কিছু বলার জন্য প্রস্তুত নই।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ