ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড-এর এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ সেলিম উদ্দিন, এফসিএ, এফসিএমএ সম্প্রতি চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স, জাপান বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এবং চিটাগাং এওটিএস এলামনাই সোসাইটি-এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে ‘এসএমই’স : দি মেইন ড্রাইভিং ফোর্স অব ওয়ার্ল্ডস ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোস্যাল প্রোগ্রেস’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন ও সেমিনারে উপস্থাপিত তিনটি প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন। সেমিনারে চার শতাধিক অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।
প্রফেসর ড. মো. সেলিম উদ্দিন, এফসিএ, এফসিএমএ বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে প্রায় ৩৬.৫ থেকে ৪৪.৫ কোটি এসএমই যার মধ্যে ২.৫ থেকে ৩ কোটি আনুষ্ঠানিক এসএমই, ৫.৫ থেকে ৭ কোটি আনুষ্ঠানিক ক্ষুদ্র উদ্যোগ এবং ২৮.৫ থেকে ৩৪.৫ কোটি অনানুষ্ঠানিক উদ্যোগ রয়েছে। বিশ্বে প্রায় ১১.৫ কোটি ক্ষুদ্র উদ্যোগ রয়েছে। মোট কর্মসংস্থানের ৬০% এবং জিডিপির ৪০% আনুষ্ঠানিক এসএমই’র মাধ্যমে হয়ে থাকে। তিনি বলেন, আগামী ১৫ বছরে এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলের দেশগুলোতে ক্রম-বর্ধনশীল জনগোষ্ঠীর প্রায় ৬০ কোটি কর্মসংস্থান প্রয়োজন দেখা দিবে। এসএমইর মাধ্যমেই এর বড় অংশ পূরণ করা সম্ভব।
তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের ৭০ ভাগই ঋণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকে। বর্তমানে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক এসএমইর ঋণ বৈষম্য প্রায় ২.৬ ট্রিলিয়ন ডলার যদিও ৬০ থেকে ৭০ ভাগ কর্মসংস্থান এসএমই’র মাধ্যমেই হয়। তিনি বলেন, উৎপাদনমুুখী এসএমই’র ১০ থেকে ৪০ ভাগ আন্ত : দেশীয় লেনদেনের মাধ্যমেই হয়ে থাকে। বর্তমানে বিশ্বে ২৫-৩৫ ভাগ রপ্তানী বাণিজ্য ও বিদেশি বিনিয়োগে এসএমইর অবদান রয়েছে।
ড. সেলিম বলেন, এসএমই উন্নয়নশীল বিশ্বের অর্থনীতির চালিকাশক্তি যা কর্মসংস্থান ও জিডিপির বড় অংশকে প্রভাবিত করে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এসএমই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক শিল্পের বিকাশে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূর করতে নিয়ামক ভূমিকা পালন করে। উন্নয়নশীল দেশসমূহে এসএমইকে অর্থনীতির শক্তিশালী স্তম্ভ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নে কর্মসংস্থান ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নেও এসএমই’র গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
দেশের বাজার অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি এসএমই যা চাকরির বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিক স্থিতিশীলতা আনয়ন করে এবং স্বাধীন ও অভিনব উদ্ভাবনীকে উৎসাহ যোগায়। তিনি বিশ্ব অর্থনীতিতে এসএমইর গুরুত্ব ও চিত্র তুলে ধরেন। তিনি জাপানের এসএমই সেক্টরের উপর আলোকপাত করেন এবং তার থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নে এসএমই’র ভূমিকা তুলে ধরেন।