শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
প্রচ্ছদটপঐক্য পক্রিয়ার আড়ালে ড:কামাল, রব ও মান্নাদের পলিটিক্যাল ষ্ট্যান্ডবাজি : নিজাম চৌধুরী

ঐক্য পক্রিয়ার আড়ালে ড:কামাল, রব ও মান্নাদের পলিটিক্যাল ষ্ট্যান্ডবাজি : নিজাম চৌধুরী

আমার পুর্ববর্তী লেখা দুটি আপনাদের প্রশংসা অর্জন করায় আনন্দিত হয়েছি। আজকের বিষয় : ঐক্য পক্রিয়ার আড়ালে ড:কামাল, রব ও মান্নাদের পলিটিক্যাল ষ্ট্যান্ডবাজি:
FB_IMG_1539923054961বাংলাদেশের ৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্য্যন্ত রাজনিতির সার্বিক পরিস্তিতি পর্যালোচনা করলে যে কোন সচেতন রাজনৈতিক ব্যাক্তি আমার আজকের লেখার তাৎপর্য উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন।
এক: জাতির পিতার এক সময়কার স্নেহের আ:স:ম রব মেজর জলিল, সিরাজুল আলম খান ও আরিফ আহমেদদের রাজনৈতিক উচ্ছভিলাস জাসদ নামক রাজনৈতিক দলের সৃষ্টি হাজার অনাসৃষ্টির জন্ম দিয়েছে।বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ভুয়া শ্লোগান দিয়ে তৎকালীন অপার সম্ভাবনাময়ী যুব সমাজকেই শুধু ধ্বংস করেনাই তাদের নিজেদের সম্ভাবনাময়ী রাজনৈতিক জীবনের ও অকাল মৃর্তু্ ঘটিয়েছে। জাসদের উত্থানের ফলেই মোস্তাক গংরা জিয়ার সহযোগিতায় জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যার দু:স্বাহস পেয়েছিল বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস । প্রিয় পাঠক ,আমার এ থিওরিতে একমত না হওয়ার পুর্ন এখতিয়ার আপনার
রয়েছে।
দুই: কর্নেল তাহেরের তথাকথিত সিপাহী জনতার বিপ্লব শুধুমাত্র জিয়াকেই ক্ষমতাসীন করেনাই, ৩০ লক্ষ্য শহীদ ও দুই লাখ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত মহান স্বাধীনতার সকল মুল্যবোধকে জিয়া তীলে তীলে ধ্বংস করে দিয়ে গেছেন। এ ছাড়া আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  ৭৭ থেকে ৮২ সাল কালীন সময়ে নিজের চোখে দেখা জাসদপন্থী ছাত্র নেতাদের মাঝে মান্না – আখতারের ঈর্ষান্বিত জনপ্রিয়তার কথা আপনাদের অনেকেরই স্বরন  থাকার কথা । কিন্ত দেখুন আজ যখন আমি মান্নাকে বর্তমান পৃথিবীর একমাত্র ব্যার্থ রাষ্ট্র পাকিস্তানের উন্নয়নের বন্দনায় মাতোয়ারা দেখি আর বিশ্বনন্দিত বাংলাদেশকে রোল মডেল হিসাবে স্বীকার করতে অস্বীকৃতি দেখি – তখন আমার খুব ঘৃনা হয় তার প্রতি । যেখানে সারা পৃথিবীর মানুষ আজ বাংলাদেশের অভুতপূর্ব উন্নয়নের ভুয়সী প্রশংসায় উচ্চমান এবং পাকিস্তানের শুশীল সমাজের ও আকুতি ইমরান খানের নিকট – আগামী দশ বছরের মাঝে তিনি যেন পাকিস্তান কে বর্তমান বাংলাদেশর মত উন্নত বানিয়ে দেন – সুইজারল্যান্ড বানানোর দরকার নেই ।
তিন: আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস মেট ও একসময়কার ঘনিষ্টজন প্রাক্তন ছাত্র লীগ ও আওয়ামীলীগ নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর কে যখন বি এন পি-র  সভামঞ্চে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের লেবাস পরে অনুষ্টান পরিচালনা করতে দেখি – তখন আমি তার এ অধ:পতনে  খুবই দু:খ পাই। রাজনিতির কাছে তার আর কি প্রাপ্য বাকী আছে সেটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
চার: আপনাদের অনেকের মনেই হয়তোবা একটা প্রশ্ন জাগতে পারে যে আমি কি ইচ্ছে করেই জাসদের এক অংশের নেতা হাসানুল হক ইনু , বর্তমান আওয়ামীলীগ নেতা আক্তারুজ্জমান এবং জাসদ থেকে ইতিমধ্যেই অতীতের ভুল রাজনীতি বুঝতে পেরে  যারা আমাদের দলে পুন:রায় যোগ দিয়েছেন তাদের সম্পর্কে কিছু বলছিনা কেন ? আসলে আমরাতো সবাই মানুষ ,আর ভুলতো হতেই পারে । আমরাতো আর বি এন পি -র মতো শয়তানদের সাথে ঐক্যের উদাত্ব আহবান জানাইনি । বি এন পি -র আহবানে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যেই যারা  জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট নাম নিয়ে বি এন পি -র নেতৃত্বে ঐক্য জোটে যোগ দিয়েছেন তাদের সবাইকে শয়তান
আখ্যা দেয়ার সেই দু:সাহস আমার নেই।
উপসংহার : দলবদল সাধারণত দুই কারনে ঘটে থাকে – ক. নিজ দল যদি মুল আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয় ।
খ. বর্তমান দলে চাওয়া পাওয়ার মাঝে হের ফের হলে।
আমাদের দেশের বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই দলবদল ঘটে থাকে দ্বীতীয় কারনেই । ফলশ্রুতিতে তারা নিজের নাম সর্বশ্য দলটিকে পুঁজি করে নিজের মুল্যহীন ব্যক্তীত্বকে নির্বাচন কালীন সময়ের গরম বাজারে বিক্রীত হওয়ার চতুর চেষ্টায় মত্ব হয়। এবং মাঝে মাঝে বড় দল গুলোর দু একটা   ইতিমধ্যেই দেউলিয়া হয়ে নিজের অস্তিত্ব সংকটে ভুগার কারনে তারা তখন যা পায় তাকেই আশ্রয়স্থল মনে করে। আর প্রবাদ তো আছেই – রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই।
লেখক: নিজাম চৌধুরী
রাজনীতি ও অর্থনীতি বিশ্লেষক।
আরও পড়ুন

সর্বশেষ