বুধবার, মে ১৫, ২০২৪
প্রচ্ছদটপডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সাংবাদিক সমাজ বিস্মিত হতাশ ও মর্মাহত

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সাংবাদিক সমাজ বিস্মিত হতাশ ও মর্মাহত

প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া দেশের সংবিধান ও তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সাংবাদিক সমাজ এটি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। সাংবাদিকদের আপত্তি আমলে না নিয়ে সম্প্রতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ডাক টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি চূড়ান্ত করার পর সম্পাদক পরিষদ রোববার বিবৃতিতে এটি প্রত্যাখ্যান করল।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে- আইনের চূড়ান্ত খসড়া দেখে সাংবাদিকরা বিস্মিত, হতাশ ও মর্মাহত। দেশের গণতন্ত্রের স্বার্থে জাতীয় সংসদকে এ আইন পাস না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এর আগে ডেইলি স্টার ভবনে বৈঠক করেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ২০টি পত্রিকার সম্পাদক।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা হলেও এ আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২ ও ৪৩ ধারায় মৌলিক কোনো পরির্বতন আনা হয়নি। আইনের প্রস্তাবিত খসড়া মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য বড় ধরনের হুমকি।

তারা বলেন, তথ্য অধিকার আইনে ৩ ধারা যুক্ত করায় আমরা সাধুবাদ জানাই। একই সঙ্গে ঔপনিবেশিক যুগের মতো অফিসিয়াল গোপন আইনের বিষয়টি যুক্ত করায় আমরা উদ্বিগ্ন। এটি পরিষ্কারভাবে তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ আইন নিয়ে এর আগে আইনমন্ত্রী এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রীর সঙ্গে সাংবাদিকদের বৈঠক হয়েছিল। সেখানে দুই মন্ত্রীই উদ্বেগের বিষয়টি আমলে নিয়ে তা পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

সম্পাদকরা বলেন, সংসদীয় কমিটির প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ যে তারা সম্পাদক পরিষদ, সাংবাদিক ইউনিয়ন ও অ্যাটকোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক করেছেন। সেখানেও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে আইনের খসড়া নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছিল। আইন চূড়ান্ত করার আগে আরও একবার বসার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ওই বৈঠক আর হয়নি।

সম্পাদক পরিষদের পরিষ্কার বক্তব্য, এ খসড়া সংবিধানের ৩৯(২) অনুচ্ছেদ অনুসারে মত প্রকাশের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পরিপন্থী। একই সঙ্গে এটি স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চর্চা এবং সাংবাদিকতার মৌলিক নীতিমালা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিপন্থী। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জনমানুষের প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় সংসদ এ আইন পাস করা থেকে বিরত থাকবে। এ আইন পাস হলে দেশের সংবাদপত্র ও গণতন্ত্র ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সম্পাদক পরিষদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ টুডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, নিউএজের সম্পাদক নুরুল কবির, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দীন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, আজাদীর সম্পাদক এমএ মালেক, করতোয়ার সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট সম্পাদক এম শামসুর রহমান, সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান, বণিকবার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি এবং ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শহিদুজ্জামান।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ