শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
প্রচ্ছদলাইফস্টাইলআন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস : সংসদীয় গণতন্ত্রের পথেই সমাধান

আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস : সংসদীয় গণতন্ত্রের পথেই সমাধান

রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ সকল ক্ষেত্রে সকল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থাতেই নিহিত-এ মৌলিক প্রতিপাদ্যকে গুরুত্ব দিয়ে জাতিসংঘ ২০০৮ সালে ‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস’ এর ঘোষণা দেয়।
আইপিইউ বা ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন এই দিবসটির উদ্যোক্তা। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য Strengthening voices for democracy.
গণতন্ত্রের ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। প্রাচীন গ্রিসকে বলা হয় গণতন্ত্রের সূতিকাগার। তবে এর বিকাশ পর্ব শুরু হয় ইউরোপের শিল্পবিপ্লবের সাথে সাথে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্র বিচিত্ররূপে উদভাসিত হয়েছে, তবে এর মূল নির্যাসটি বেরিয়ে এসেছে আব্রাহাম লিঙ্কনের সেই অজেয় ঘোষণা থেকে, Democracy is a Government of the People, by the people and for the people.ব্যক্তি ও সমষ্টির বাকস্বাধীনতা, বিভিন্ন মত ও পথের সমন্বয় এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকাণ্ডে জনসাধারণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই গণতন্ত্রের আবশ্যিক কাজ।
আমাদের দেশটি পাকিস্তানি আমলে কখনোই গণতন্ত্রের মুখ দেখেনি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরও দেশটি দীর্ঘসময় পর্যন্ত গণতান্ত্রিক শাসন থেকে দূরে ছিল ফলে আমাদের দেশে গণতান্ত্রিক-রাজনৈতিক সংস্কৃতি, গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক ইনস্টিটিউশন যথার্থভাবে বিকশিত হতে পারেনি। এর প্রভাবও পড়েছে আমাদের জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে। আমাদের রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চেতনা পুষ্ট হওয়ার পরিবর্তে সংঘাত, অসহিষ্ণুতা, দুর্বৃত্তায়ন, বিপুল অর্থনৈতিক বৈষম্য, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
গণতন্ত্রের লালন ও বিকাশ কেন্দ্র হচ্ছে সংসদীয় সরকারব্যবস্থা, অথচ ক্রমাগত সংসদ বর্জন, সংসদে অর্থহীন, অরুচিকর আলোচনা বেশি হয়। এটি পরিহার করা গণতন্ত্রের স্বার্থেই প্রয়োজন।
সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা, আইনের শাসন, জনগণের কাছে জবাবদিহিতা এবং নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন আধুনিক গণতান্ত্রিক চেতনার বৈশিষ্ট্য আবার গণতন্ত্রের নামে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার নামে অগণতান্ত্রিক এবং স্বৈরাচারী শাসন কাম্য নয়। গণতন্ত্রের সুযোগ নিয়ে জনস্বার্থবিরোধী কার্যকলাপ, ধর্মান্ধতা, প্রতিক্রিয়াশীল ভাবাদর্শের প্রচার গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করে।
গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করতে সংসদকে কার্যকর রাখা, সংসদে গণতন্ত্র, সমাজপ্রগতি ও জনগণের কল্যাণ সাধনায় ব্রতী ব্যক্তি গোষ্ঠীর আরো বেশি প্রতিনিধি থাকা বাঞ্ছনীয়। বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা গণতন্ত্র তথা সংসদীয় ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়।
গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেয়ায় শিক্ষা ও সংস্কৃতির যেমন ভূমিকা রয়েছে তেমনি সকল মানুষের সামাজিক-অর্থনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করে গণতন্ত্রকে অর্থবহ ও বিকশিত করার পথে রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী গ্রুপ ও নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা রয়েছে। গণতন্ত্র যত শক্তিশালী হবে সমাজও তত বেশি সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ