মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়নির্বাচনকালীন সরকার অক্টোবরের শেষে

নির্বাচনকালীন সরকার অক্টোবরের শেষে

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যতোই ঘনিয়ে আসছে ততোই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকার এর বিষয়টি। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, অক্টোবরের শেষ দিকে গঠিত হবে নির্বাচনকালীন সরকার। এ সরকারের আয়তন ছোট হয়ে বর্তমান মন্ত্রিসভার অর্ধেকে নেমে আসবে। নির্বাচনকালীন এ সরকার গঠিত হবে জাতীয় সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে। আর এ সরকারের নেতৃত্ব দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চলতি বছর ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী নভেম্বরের প্রথম দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলেও সম্প্রতি ইসি থেকে জানানো হয়েছে। সে অনুযায়ীই নির্বাচনের সব প্রস্তুতি এগিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে কাছাকাছি সময়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে। ইসি বলেছে, সেই হিসেবে অক্টোবরের শেষ দিকে অথবা নভেম্বরের শুরুতে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এ সরকার গঠনের নির্দিষ্ট কোনো সময়ের কথা সংবিধানে উল্লেখ নেই। গত নির্বাচনে ইসির তফসিল ঘোষণার তিন দিন আগে ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়।

বর্তমান দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। সে অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি বর্তমান সংসদের মেয়াদ ৫ বছর পূর্ণ হবে। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের ৯০দিনের মধ্যে অর্থাৎ ২৯ অক্টোবরের পর থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত যে কোনো দিন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা যায়, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে নির্বাচনের ভোট গ্রহণের উপযুক্ত সময় মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে ২৭ ডিসেম্বর এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন হিসেবে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের আলোচনায় রয়েছে।
এদিকে সংবিধান অনুযায়ী পূর্ববর্তী সরকারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেই নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে। তবে এ সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা কমে অর্ধেকে নেমে আসবে। সরকার ও আওয়ামী লীগের ওই সূত্রগুলো থেকে জানা যায়, এ নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ৩০ সদস্যের বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বর্তমান মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত, উপদেষ্টাসহ সদস্য সংখ্যা ৫৯ জন। অর্থাৎ বর্তমান মন্ত্রিসভার অর্ধেকের বেশি নির্বাচনকালীন সরকারে থাকবেন না। নতুন দুই একজনকে এ মন্ত্রিসভার সদস্য করা হতে পারে। তবে সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রিসভায় শুধুমাত্র নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই থাকবেন।

গত নির্বাচনের আগে যে নির্বাচনকালীন সরকার হয় তাতে মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন ২৯জন এবং প্রত্যেকেই ছিলেন নির্বাচিত প্রতিনিধি। তৎকালীন সরকারের ৫৮ সদস্যের মন্ত্রিসভাকে ছোট করে অর্ধেকে নামিয়ে নিয়ে আসা হয়। তখন ওই মন্ত্রিসভায় ৬ জন মন্ত্রী এবং ২ প্রতিমন্ত্রীকে নতুন অন্তর্ভুক্ত করা হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এ একই ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করে অগ্রসর হচ্ছেন সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, অক্টোবরে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ীই এ সরকার গঠিত হবে এবং রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। সরকারের মন্ত্রিসভাও ছোট হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের সময়সীমার ব্যাপারে সংবিধানে কিছু বলা নেই। পূর্ববর্তী সরকারই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনকালীন সরকার গঠন যে সরকার বর্তমানে আছে সেই সরকারের উপরই নির্ভর করে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, জাতীয় সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার হবে। অনির্বাচিত কাউকে নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় থাকার সুযোগ নেই। সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকারের টেকনোক্র্যাট কোটায় কথা বলা নেই। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচনকালীন সরকার হবে, সেটা অক্টোবরেই হতে পারে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ