শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদইন্টারভিউজামায়াতের সাথে সরকারের সমঝোতার চেষ্টা!

জামায়াতের সাথে সরকারের সমঝোতার চেষ্টা!

ডেস্ক রিপোর্ট (বিডি সময় ২৪ ডটকম)

আসন্ন সংসদ নির্বাচন ও সম্ভাব্য আন্দোলন মোকাবেলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বেশ কয়েকটি বিকল্প নিয়ে ভাবছে। তার মধ্যে একটি হলো রাজপথের একমাত্র সক্রিয় সরকার বিরোধী দল জামায়াতকে “ম্যানেজ” করা। জানা গেছে, জামায়াতকে ম্যানেজ করার জন্য সরকার সর্বোচ্চ ছাড় দিতেও রাজি। সরকারের নীতি নির্ধারনী পর্যায়ের নেতাদের এ ব্যাপারে কৌশলী কথা ও বিবৃতি দিয়ে আবহ তৈরি করার জন্যও দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, সমঝোতা প্রস্তাব অনুযায়ী জামায়াতের ওপর সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আসবে। তাদেরকে স্বাভাবিকভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে দেওয়া হবে। এমনকি তাদের বন্ধ হয়ে যাওয়া দলীয় কার্যালয়গুলোও খুলে দেওয়া হতে পারে।

এজন্য অবশ্য জামায়াতকে সরকারের প্রস্তাবে রাজি হতে হবে। অর্থাৎ, আগামী সংসদ নির্বাচনে জামায়াতকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের  বাইরে এককভাবে অংশ নিতে হবে। তবে, জামায়াত চাইলে আলাদা জোট গঠন করতে পারবে।

একই সাথে জামায়াতের সাথে সমঝোতায় এসে বিএনপিকে আলাদাভাবে মোকাবেলা সরকারের জন্য কোনো ব্যাপার হবে না বলে মনে করছে সরকারের নীতি নির্ধারণী মহল।

বিষয়টির সত্যতা জামায়াতের কোনো সূত্র স্বীকার না করলেও সরকারের সাথে তাদের আলোচনার বিষযটি তারা অস্বীকার করেননি। তাছাড়া বেশ কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভীর সাথে জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ও সাবেক এমপি ডাঃ সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের -এর প্রারম্ভিক আলোচনা হয়। আর এতে মধ্যস্ততা করেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা।

বিষয়টিকে বিএনপিও গভীর গুরুত্বের সাথে দেখছে বলে জানা গেছে। দলটির একাংশ শংকিত, অপর অংশটি সন্ধিহান। শংকিত অংশ মনে করছে, জামায়াতের দুর্দিনে জোটের প্রধান হিসাবে বিএনপি তাদের সাথে কাঙ্খিত ও সহানুভূতিশীল আচরণ না করাতে জামায়াতের নেতা কর্মীরা বিএনপির ওপর ক্ষুব্ধ। এছাড়া আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে কথা না রাখায় জামায়াত এবং জোটের ইসলামপন্থি শরিকরা বিএনপিকে সন্দেহের চোখে দেখছে। এমতাবস্থায়, জামায়াত কর্মীদের চাপে নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিতেই পারে।

অন্যদিকে, বিএনপির অপর অংশ যারা হাইকমান্ডকে জামায়াত থেকে একটা দূরত্ব বজায় রাখতে পরামর্শ দিয়েছিল, তারা এটাকে সরকারের সাথে জামায়াতের আতাত বলে হাইকমান্ডকে বোঝানোর চেষ্টা করছে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বলেন, ‘সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করছে জামায়াতকে ১৮-দলীয় জোট থেকে বের করে নিতে। বিভিন্ন রকমের প্রলোভনও দেখাচ্ছে। কিন্তু জামায়াত শেষ পর্যন্ত যাবে কিনা সেটা তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। তবে এ ব্যাপারে নিজের দলের নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকারও আহ্বান জানান তিনি’।

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী কী করবে-না করবে জানি না। তবে এতে আর সরকারের কোনো লাভ হবে না।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জামায়াত নেতা সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের কথা অস্বীকার না করে বলেন, এখনো এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বিএনপির পক্ষ  থেকে তাদের সংগঠনের দুঃসময়ে সহযোগিতার পরিবর্তে অবজ্ঞা প্রদর্শনের অভিযোগ করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

জামায়াতের ঢাকা মহানগরীর আরেক নেতা দাবি করেন, সরকার সমর্থিত কয়েকটি পত্রিকা এসব বিভ্রান্তি ছড়াতে ও সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে উঠে পড়ে লেগেছে। আমরা কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন করব সেটা একান্তই আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। কোনো জোট যদি আমাদের সঠিক মুল্যায়ন না করে তবে আমরা সম্মানজনকভাবেই আমাদের প্রার্থীদের মাঠে নামাবো। জাতি এটাও দেখেছে, আমরা কোনো আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে পিছিয়ে আসিনি।

জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমেই আমরা আমাদের অধিকার আদায় করে ছাড়ব। পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে তা দেখার জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ