শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
প্রচ্ছদদেশজুড়েচট্টগ্রাম বিভাগদুর্নীতির অভিযোগে কুতুবদিয়া থানার সাবেক ওসি আলতাফ কারাগারে

দুর্নীতির অভিযোগে কুতুবদিয়া থানার সাবেক ওসি আলতাফ কারাগারে

কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও ফেনী জেলা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. আলতাফ হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়া, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ছিল তার বিরুদ্ধে। সেই পরোয়ানায় ১৯ জুন হাজির হলে তাকে কক্সবাজার কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ মীর শফিকুল আলম।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২০ জুলাই তৎকালীণ কুতুবদিয়া থানার ওসি আলতাফ হোসেন ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) এবিএম কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে ঘুষ গ্রহণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা করে কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ছিন্নি খাইয়ার পাড়া এলাকার ইস্কান্দার মির্জার স্ত্রী জামিলা আকতার।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে ২০১৪ সালের ১৮ জুন সকালে ছিন্নি খাইয়ার পাড়ায় মৃত নজির আহম্মদের ছেলে উপজেলার ভূমি অফিসের কর্মচারী ফরিদুল আলমকে হত্যা করে তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম ডেজি ও ছেলে অহিদুল আলম (রিয়াদ)। এ ঘটনায় নিহতের মা নূর জাহান বেগম বাদী হয়ে মামলা করতে গেলে কুতুবদিয়া থানার ওসি আলতাফ হোসেন এক লাখ টাকা দাবি করেন। ছেলে হত্যার ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় এসআই এবিএম কামাল উদ্দিনের মাধ্যমে আলতাফ হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা দেন ওই বৃদ্ধা।

কিন্তু ওসি আলতাফ হোসেন নূর জাহানের দায়ের করা এজাহারটি আমলে নেয়নি। উল্টো নিহতের ছেলে মোহাম্মদ তৌহিদুল আলমের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ গ্রহণ করে মামলা গ্রহণ করেন। ওই মামলায় নিহতের বৃদ্ধ মা নূর জাহান, দুই ভাই ইস্কান্দর মির্জা ও মাহবুব আলমকে আসামি করা হয়। সেই মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিল দুই ভাই। এ নিয়ে ইস্কান্দর মির্জার স্ত্রী জামিলা আকতার বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে কুতুবদিয়া থানার ওসি আলতাফ ও এসআই এবিএম কামাল উদ্দিনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আবদুর রহিম বলেন, বাদীনির লিখিত অভিযোগ পেয়ে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের তৎকালীণ বিচারক সাদিকুল ইসলাম তালুকদার মামলাটি আমলে নিয়ে দুদককে তদন্তের নির্দেশ দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ ওসি এবং এসআই দু’জনকেই অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় তদন্ত কর্মকর্তা অজয় ঘোষ। এরপর তাদের বিরুদ্ধে আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সেই গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলে মঙ্গলবার আদালতে আত্নসমর্পণ করেন ওসি আলতাফ হোসেন।

তিনি আরো বলেন, ওসি আলতাফ আত্মসমর্পণের সময় সঙ্গে বাদীনিকে নিয়ে আসেন। বাদী মামলাটি সামাজিকভাবে সুরাহা করা হয়েছে বলে আদালতে লিখিত আবেদন করেছেন। তবে আদালত ওসির জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৬ জুন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ