বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪
প্রচ্ছদইসলাম ও জীবনইদানিং সমাজ ব্যবস্থা ও সুদ-ঘুষ সম্পর্কে কোরআন-হাদিসের উদ্ধতিসমূহ: মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন

ইদানিং সমাজ ব্যবস্থা ও সুদ-ঘুষ সম্পর্কে কোরআন-হাদিসের উদ্ধতিসমূহ: মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন

বিস্মিল্লাহির রাহ্মানির রাহিম। বেশ কয়েকটি বছর ধরে আমাদের দেশে সীমাহীন অন্যায়-অবিচার, ঘুষ-দূর্নীতিসহ বিভিন্ন রকম ধর্মবিরোধী মাত্রাতিরিক্তভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সমাজে এতো অন্যায়, অবিচার ও অপরাধ বৃদ্ধি পেলেও মানুষ যেন কিছুই বলছে না! মনে হচ্ছে দেশের মানুষ যেন বোবা হয়ে গেছে! দেশবাসীর আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, তারা যেন প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করতে ভুলে গেছে! তাহলে কি ধরে নেব যে, সকলে সব কিছু মেনে নিয়েছে! প্রতিবাদের ভাষা কি মানুষ ভুলে গিয়ে সব কিছু আপোষের পথ ধরেছে! এক সময় দেশের ছাত্র সমাজ সকল অন্যায়, অত্যাচার, অনাচারসহ সব অনিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতো, প্রতিবাদ করতো কিন্তু সে ছাত্র সমাজও যেন ঝিমিয়ে পড়ছে। মনে হচ্ছে- তারাও সব কিছুর সাথে তাল মিলিয়ে আপোষ করছে। তবে সাধারণ মানুষ যেন অসহায়! তারা কিছু বলতে চায় কিন্তু বলছে না। তারা নিরবতার মধ্য দিয়ে ‘নিরব’ প্রতিবাদ জানাচ্ছে! তবে নিরব প্রতিবাদ সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ, যদি তা অন্যায়কারীরা বোঝে…..! কথার সারাংশ হলো দেশের সার্বিক অবস্থা ভাল নয়। তবে এতো খারাপ অবস্থার মধ্যে থেকেও দেশবাসী প্রতিবাদমুখর হচেছ না কেন! এর জবাবে বলবো, দেশে গ্রহণযোগ্য কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় নেতা নেই বলেই দেশের মানুষ নিরব এবং তাই তাদের ‘নিরব’ প্রতিবাদ চলছে। তবে ‘নিরব’ প্রতিবাদের লক্ষণ ভাল নয় এবং এর ফলাফল অতি খারাপ। যদি দেশে গ্রহণযোগ্য কোন রাজনৈতিক বা ধর্মীয় নেতা থাকতো তবে তার নেতৃত্বে দেশবাসী রাস্তায় নেমে এসে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতো এবং এ সুযোগটা শাসকগোষ্ঠী নিয়ে দূর্নীতি, অনিয়ম এবং ঘুষ বাণিজ্য এমনভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে যা সীমাহীন। তবে এরও যে একটা পরিসমাপ্তি নেই, তা নয়; তবে তা একটু ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে।
ঘুষ যারা ভক্ষণ করে তারা সমাজে চরমভাবে ঘৃণীত ব্যক্তি। এক সময় ঘুষখোরদের মানুষ ঘৃণা করতো। তাই তারা অতি গোপণে এ কাজটি করতো। এক সময় ঘুষ লেনদেন অতি গোপনে চালাচালি হলেও আস্তে আস্তে ঘুষ লেনদেন ওপেন টু অল হয়ে গেছে। ঘুষ নেয়াকে এখন আর কেউ কোন অপরাধ বা অন্যায় মনে করছে না। এমন কোন কাজই যেন নেই যা ঘুষ ব্যতিরেকে সমাধা হবে। ঘুষ ছাড়া কোন কাজ যে হতে পারে তা যেন মানুষ বিশ্বাসই করতে পারছেন না। ঘুষ যে গ্রহণ করছে এবং যে দিচ্ছে তা সমাজের মানুষ দেখেও দোষ বা অপরাধ মনে করছে না। কোন চাকুরী, ঠিকাদারী, তদবির বা যে কোন কাজের জন্য পূর্ব থেকেই ঘুষের একটা বাজেট করে রাখতে হচ্ছে। দেশবাসীর মনে বদ্ধমূল ধারণা জন্মেছে ঘুষ দিতেই হবে এবং তা কোন কাজে কত ঘুষ দিতে হবে তার একটা রেট পর্যন্ত ঠিক হয়ে গেছে। ব্যাংক লোন তুলতে ঘুষ, চাকুরী নিতে ঘুষ, ছাত্র-ছাত্রী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করতে ঘুষ, কোন কিছুর বিল তৈরীতে ঘুষ, টেন্ডারে ঘুষ দিতে হচ্ছে। এমনকি কোন একটা আবেদনে এমপি, মন্ত্রীর সুপারিশ নিতেও ঘুষ দিতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ লাইন, গ্যাস লাইন নিতে ঘুষ, জমি রেজিষ্ট্রী করতে ঘুষ এবং ঘুষ ছাড়া কোন কাজই হয় না। এমনকি ভিক্ষার বা খয়রাতির সাহায্য নিতেও ঘুষ দিতে হচ্ছে। সর্বশেষ কথা হলো, এমন কোন কাজ নেই- যাতে ঘুষ লাগে না। হারাম কাজটা যেন তারা জায়েজ করে নিয়েছে। যে ঘুষের বিরুদ্ধে কথা বলে বা বলতে চেষ্টা করে তাকে বলা হয় পাগল বা বোকা…..।
তাহলে আমরা চলছি কোথায় এবং কোন পথে? অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমাদের সমাজটা ধ্বংসের দিকে এগুচ্ছে! ঘুষ সম্পর্কে হাদীসে সুস্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, ঘুষদাতা এবং ঘুষখোর উভয়ই দোযখে জ্বলবে।’ -(বুখারী ও মুসলিম)।
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ্ তায়ালা পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারা এর ১৮৮ নং আয়াতে বলেছেন, ‘তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। এবং মানুষের ধন সম্পত্তির অংশ জেনে-বুঝে অন্যায়ভাবে গ্রাস করার উদ্দেশ্যে বিচারকদের উৎকোচ দিও না।’-এ সম্পর্কে সূরা বাকারা এর ২৭৫ নং আয়াতে মহান আল্লাহ্পাক এরশাদ করেন- ‘যারা সুদ খায় তারা সেই ব্যক্তির ন্যায় দাঁড়াবে, যাকে শয়তান স্পর্শ করেই পাগল করে দেয়। এটা এজন্য যে, তারা বলে বেচা-কেনাতো সুদেরই মতো। অথচ আল্লাহ্ তায়ালা ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন। তাই তোমাদের যার কাছে মালিকের পক্ষ থেকে এ উপদেশ পৌঁছেছে। সে অত:পর সুদের কারবার থেকে বিরত থাকবে। আগে যে সে সুদ খেয়েছে তা তো তার জন্য অতিবাহিত হয়েই গেছে। তার ব্যাপার একান্তই আল্লাহ্ তায়ালার সিদ্ধান্তের ওপর; কিন্তু যে ব্যক্তি (আবার সুদী কারবারে) ফিরে আসবে, তারা অবশ্যই জাহান্নামের অধিবাসী হবে, যেখানে তারা চিরকাল থাকবে।’ এ সম্পর্কে আল্লাহ্ তায়ালা একই সূরার ২৭৬, ২৭৮ ও ২৭৯ নং আয়াতে বলেন, ‘আল্লাহ্ তায়ালা সুদ নিশ্চিহ্ন করেন। (অপরদিকে) দান-সদকাকে তিনি বৃদ্ধি করেন। আল্লাহ্তায়ালা অকৃতজ্ঞ পাপিষ্ঠ ব্যক্তিদের কখনো পছন্দ করেন না।’ হে ঈমানদার লোকেরা, তোমরা (সুদের ব্যাপারে) আল্লাহ্কে ভয় করো, আগের (সুদী কারবারী) যে সব বকেয়া আছে তোমরা তা ছেড়ে দাও, যদি সত্যিই তোমরা আল্লাহ্র ওপর ঈমান আনো।’- ‘যদি তোমরা এমনটি না করো, তাহলে অত:পর আল্লাহ্ তায়ালা ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে (তোমাদের বিরুদ্ধে) যুদ্ধের (ঘোষণা থাকবে)। আর যদি (এখনো), তোমরা (আল্লাহ্র) দিকে ফিরে আসো তাহলে তোমরা তোমাদের মূলধন ফিরে পাবার অধিকারী হবে, (সুদী কারবার দ্বারা) অন্যের ওপর যুলুম করো না, তোমাদের ওপরও অত:পর (সুদের) যুলুম করা হবে না।’ -ঘুষ ও সুদ সম্পর্কে পবিত্র র্কোআন এর সূরা রুম এর ৩৯ নং আয়াতে আল্লাহ্পাক এরশাদ করেন, -‘মানুষের ধন-সম্পদে তোমাদের ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে, এ আশায় যা কিছু তোমরা সুদে দিয়ে থাকো; আল্লাহ্র কাছে তা বর্ধিত হয় না। পক্ষান্তরে, আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের আশায় পবিত্র অন্তরে যারা দিয়ে থাকে, অতএব, তারাই দ্বিগুণ লাভ করে।’ এখন দেখা যাক সুদ ও ঘুষ সম্পর্কে হাদীসে কি বর্ণিত হয়েছে- হযরত আব্দুল্লাহ্ ইব্নে আমর (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেছেন, ‘ঘুষ গ্রহণকারী এবং ঘুষ দানকারী উভয়ের ওপর আল্লাহ্র লানত।’-(বুখারী ও মুসলিম)। আমর ইব্নে আস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল করীম (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে সমাজে জ্বেনা-ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়ে তারা দুর্ভিক্ষের কড়াল গ্রাসে নিপতিত না হয়ে থাকে না। আর যে সমাজে ঘুষ লেন-দেন ছড়িয়ে পড়ে সে সমাজে ভীতি ও সন্ত্রাস সৃষ্টি না হয়ে থাকে না।’ -(মুসনাদে আহ্মদ)। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলে পাক বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন কাউকে ঋণ দেয়, আর গৃহিতা যদি তাকে কোন তোহ্ফা দেয়, কিংবা তার যানবাহনে আরোহণ করতে বলে, তখন সে যেনো তার তোহ্ফা কবুল না করে এবং তার সওয়ারীতেও আরোহণ না করে। অবশ্য পূর্ব থেকেই যদি উভয়ের মধ্যে এরূপ লেন-দেনের ধারা চলে আসে তবে তা ভিন্ন কথা।’- (ইবনে মাজাহ্)।
অন্য এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, ‘জাহিলিয়াতের সুদী কারবার রহিত করা হলো। আর সর্বপ্রথম আমি রহিত করছি আমাদের নিজেদের, অর্থাৎ আব্বাস ইব্নে আবদুল মুত্তালিবের সুদী কারবার, তা সম্পূর্ণ রহিত হয়ে গেল।’ -‘যে ব্যক্তি জেনে-শুনে সুদের একটি টাকা খায়, তার এ অপরাধ ছত্রিশ বার ব্যভিচারের চেয়েও অনেক কঠিন।’ সুদের তিয়াত্তরটি দরজা। তন্মধ্যে সহজতর দৃষ্টান্ত হচ্ছে, ‘যে কোন ব্যক্তি তার মাকে বিয়ে করল। আর সর্বোচ্চ সুদের কাজটি হচ্ছে, মুসলিম ব্যক্তির সম্মান ও ধনমাল হরণ।’
অন্য এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, বুয়াদা (রা.) বলেন, নবীজি বলেছেন, ‘আমি যাকে ভাতা দিয়ে কোন কাজের দায়িত্ব প্রদান করেছি, সে যদি ভাতা ব্যতিত অন্য কিছু গ্রহণ করে তাহলে তা হবে খিয়ানত।’ -(আবু দাউদ ও মিশকাত)। খাওয়ালাহ্ আনসারী (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয় কিছু লোক আল্লাহ্র সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে, কিয়ামতের দিন তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম।’-(বুখারী ও মিশকাত)।
সুদের মত ঘুষ গ্রহণ এবং প্রদান একটি কবীরা গুণাহ্। এবং তার পরিণাম জাহান্নাম। প্রজাতন্তের বা বেসরকারী কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী কিংবা কোন দায়িত্বশীলকে ঘুষের মাধ্যমে প্রভাবিত করে হকদারকে তাদের ন্যায্য অধিকার হতে বঞ্চিত করে কোন অর্থ গ্রহণ করা হলে তা হারাম। এ সম্পর্কে সুরা বাক্কারা এর ১৮৮ নং আয়াতে আল্লাহ্পাক ইরশাদ করেন, ‘তোমরা একে অন্যের অর্থ-সম্পদ অন্যায়-অবৈধভাবে আত্মসাৎ করো না, (আবার) জেনে-শুনে অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ ভোগ করার জন্যে এর একাংশ বিচারকদের ঘুষ- (কিংবা উপঢৌকন) হিসেবে পেশ করো না।’
সত্তবান (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঘুষ গ্রহণকারী ও ঘুষ প্রদানকারীর মধ্যে মধ্যস্থতা করবে, তার ওপর আল্লাহ্তায়ালা লানত প্রদান করেছেন।’-(আহম্মদ, বাইহাকী ও মিশকাত শরীফ)। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ‘ঘুষ আদান-প্রদানে যে ব্যক্তি মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করে, তার উদ্দেশ্য যদি সৎ হয় তবে সে লানত হতে মুক্ত থাকবে, আর উদ্দেশ্য যদি অসৎ হয়- তবে তার ওপরও লানত বর্তিবে।’ -(আবু দাউদ, তিরমিজী ও কিতাবুল কাবায়ির)।
আবু উসামা বাহিলী (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কারও জন্য সুপারিশ করলো, সে সুপারিশকারীদের প্রতিদান স্বরূপ তাকে কিছু উপহার বা উপঢৌকন দেয়া হল (সে যদি তা গ্রহণ করে) সে ক্ষেত্রে সে সুদের দরজাসমূহের একটি বড় দরজায় উপস্থিত হল।’ -(আবু দাউদ)। সমগ্র দুনিয়াতে সৎ আর অসৎ এবং দুর্নীতির চলছে প্রতিযোগিতা। কে কত দুর্নীতিবাজ তার তত অর্থ-সম্পদ বেশী। তাকে সমাজের মানুষ ছালাম দেয় বেশী কিন্তু আল্লাহ্তায়ালা তাঁর পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘মুনাফিক নর ও নারী একে অপরের অনুরূপ। তারা অসৎ কর্মের নির্দেশ দেয়। সৎকর্ম থেকে বারণ করে এবং নিজেদের হাত বন্ধ রাখে দান থেকে। তারা আল্লাহ্কে বিস্মৃত হয়েছে, ফলে তিনি ও তাদের বিস্মৃত হয়েছেন। নিঃসন্দেহে মুনাফিকরা সত্যত্যাগী।’ -(সূরা আত্ তাওবা: আয়াত নং ৬৭)।
ওই সূরার ৭১ নং আয়াতে মহান সৃষ্টিকর্তা বলেন, ‘বিশ্বাসী নর-নারী একে অপরের বন্ধু, তারা সৎ কাজের নির্দেশ দেয় এবং অসৎ কাজ থেকে বারণ করে, নামাজ কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ্ ও তার রাসূলের আনুগত্য করে; আল্লাহ্ এসব লোকদের কৃপা করবেন, তিনি পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।’ এ প্রসঙ্গে সূরা হাজ্জ এর ৪১ নং আয়াত প্রযোজ্য-, আল্লাহ্পাক বলেন, ‘তারা এরূপ লোক যে, যদি আমি তাদেরকে দুনিয়াতে ক্ষমতা দান করি তবে তারা নামাজ কায়েম করবে, যাকাত দেবে, সৎকর্মের আদেশ দেবে এবং অসৎ কর্ম হতে বারণ করবে এবং সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহ্র এখতিয়ারে।’
সমাজে যারা ধন-সম্পদের মালিক, তাদের এই ধন সম্পদের ওপর গরীব, অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতদের রয়েছে অধিকার কিন্তু তারা তাদের ওপর দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করছে না। এ সম্পর্কে আল্লাহ্তায়ালা সূরা আয-যারিয়াতের ১৯নং আয়াতে বলেন, ‘তাদের ধন-সম্পদে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতদের অংশ রয়েছে।’ আমার লেখার কলেবর আর বৃদ্ধি করতে চাই না। একটি মাত্র ঘটনার কথা উল্লেখ করে আমার লেখার যবনিকাপাত ঘটাবো। হযরত আবু বকর (রা.) এর খেলাফত কালে আরবে ভয়ানক দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ঠিক তখনই ১০০০ পণ্যবাহীর একটি উটের কাফেলা সিরিয়া হতে মদিনা আসে। এ পণ্যবাহীর মালিক ছিলেন হযরত ওসমান (রা.)। পণ্যবাহী কাফেলা মদিনায় পৌঁছামাত্র স্থানীয় সব ব্যবসায়ীরা উপস্থিত হয়ে দামদস্তুর শুরু করে। হযরত ওসমান (রা.) কোন দামে পণ্য বিক্রি করলেন না। ব্যবসায়ীরা তাকে বললেন যে, যতই দাম হোক তারা পণ্য কিনতে রাজী আছেন। হযরত ওসমান তাদের কারো কথায় কর্ণপাত না করে সব পণ্য আল্লাহ্র ওয়াস্তে গরীব ও অসহায় লোকদের মাঝে দান করে দিলেন। হযরত ওসমান একমাত্র আল্লাহ্কে খুশী করার জন্য এরূপ কাজ করেছিলেন।
আজ মুমিন বান্দাদের প্রয়োজন ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, বনখেকো, ভূমিদস্যু, জনগণের হক আত্মসাৎকারী আমলা-কামলা, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক টাউট-বাটপারদের বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে শায়েস্তা করা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ