বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
প্রচ্ছদটপবাংলাদেশেও স্বাস্থ্য বীমা কার্যকর করা হবে : স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম

বাংলাদেশেও স্বাস্থ্য বীমা কার্যকর করা হবে : স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম

20180522_150933 (1)স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, বিশ্বের  অন্যান্য  দেশের  মতো বাংলাদেশেও স্বাস্থ্য বীমা কার্যকর করা হবে। তিনি বলেন, অর্থের অভাবে দেশের কোনো মানুষ চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে না, দরিদ্র জনগোষ্ঠি  চিকিৎসা  করাতে  গিয়ে যাতে করে আরও নি:স্ব না হয় সে লক্ষ্যে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বীমা কার্যকর করা হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী  আজ মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার  অধিবেশনে স্বাস্থ্যখাতের বিশ্ব নেতাদের সামনে নির্ধারিত বক্তব্যে এমন লক্ষ্য ও অঙ্গিকারের কথা তুলে ধরেন।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা ব্যয় মেটানোই আমাদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের ধারায় আমরা ইতোমধ্যেই ইউনিভার্সেল হেলথ কাভারেজ কার্যক্রমের পরীক্ষামূলক কাজ শুরু করেছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দরিদ্র মানুষের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। আমরা তিনটি উপজেলায় বিশেষ হেলথ স্কীম চালু করেছি। সেই সঙ্গে জাতীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্যবীমা ব্যবস্থা কার্যকর করতে কর্মকৌশল নির্ধারন করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠির দোড় গোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌছে দিতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। যেটা এখন বিশ্বের কাছে রোল মডেল হয়ে উঠেছে। এছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্যতম অংশ হিসাবে পুষ্টির উন্নয়নকেও আমরা অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে চলছি। অপুষ্টি দল করার ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিক নির্দেশনার আলোকে কর্মপরিকল্পনাকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।

এছাড়া জাতীয় সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধে সরকারি ও বেসরকারিভাবে কাজ চলছে। মা ও শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আগের চেয়ে অনেক অগ্রগতি ঘটেছে, শিশু ও মাতৃ-মৃত্যু হার কমিয়ে আনা গেছে, সংক্রামক রোগেও মৃত্যু কমেছে।

এসময় মোহাম্মদ নাসিম রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে ঐ দেশ থেকে বিতারিত হওয়া ১০ লাখের বেশি মানুষকে মানবিক কারনে আমরা বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বের কাছে মানবতার এক অনন্য উদাহরণ সৃস্টি করেছি। তাঁদেরকে কেবল আশ্রয়ই নয়, খাবার ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এ কাজে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতো আরও কিছু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আমাদেরকে সহায়তা করছে।

বাংলাদেশে ওষুধ খাত সম্পর্কে স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখন কম দামে উচ্চ মানসম্পন্ন সব ধরনের ওষুধ ও ভেকসিন তৈরি হচ্ছে।  এক্ষেত্রে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মহলের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। এর আগে গতকাল সকালে বিশ্বব্যাংকের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা কার্যক্রম বিষয়ক পরিচালক ফাদিয়া সাদাহ্ জাতিসংঘ ভবনের এক সভাকক্ষে বৈঠকে মিলিত হন বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। এ সময়ে বিশ্বব্যাংক পরিচালক জানান রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম অব্যহত রাখতে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে আগামী মাসে ৫০ মিলিয়ন ডলার সাহায্য প্রস্তাব বিশ্বব্যাংক কর্তৃক অনুমোদিত হবে। মোহাম্মদ নাসিম এসময় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে অর্থায়নসহ বিভিন্ন সহায়তায় বিশ্বব্যাংকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন,বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বব্যাংকের সহয়তায় চতুর্থ স্বাস্থ্য সেক্টর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। জাতীয় পুষ্টিনীতির আলোকে একটি স্বাস্থ্যবান ও উৎপাদনক্ষম জাতি গঠনের লক্ষ্যে সরকার জনগণের মাঝে পর্যাপ্ত পুষ্টি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

এছাড়া গতকাল অধিবেশনের বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক অন্যান্য সভাগুলোতে বাংলাদেশে পক্ষে অংশ নেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মোঃ সিরাজুল হক খান, বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এনায়েত হোসেন, বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. এস কে রায়, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের চেয়াম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায়, কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রকল্প পরিচালক ডা. আবুল হাসেম খান,  মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব মীর মোশারফ হোসেন। সাইড মিটিংগুলোতেও বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক, আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির স্বাস্থ্যসেবা, অসংক্রামিত রোগের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ