শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে মিয়ানমারকে বোঝাতে সিঙ্গাপুরের ভূমিকা চান শেখ হাসিনা

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে মিয়ানমারকে বোঝাতে সিঙ্গাপুরের ভূমিকা চান শেখ হাসিনা

দমন-পীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অনতিবিলম্বে স্বদেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে বোঝানোর জন্য সিঙ্গাপুরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিঙ্গাপুর সফররত শেখ হাসিনা দেশটির প্রেসিডেন্ট হালিমা ইয়াকুব ও প্রধানমন্ত্রী লি শিয়েন লুংয়ের সঙ্গে পৃথক বৈঠককালে এ আহ্বান জানান। ১২ মার্চ সকালে সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ‘ইস্তানা’য় বৈঠক দু’টি হয়। বৈঠক শেষে শেখ হাসিনার সিঙ্গাপুর সফরকালীন আবাসস্থল সাংগ্রিলা হোটেলে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক।

তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরের দুই নেতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়টি উঠে এসেছে। এসময় প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফেরত নেওয়ার জন্য মিয়ানমারকে বোঝাতে সিঙ্গাপুরের প্রতি আহ্বান জানান। গত আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনী দমন-পীড়ন শুরু করলে দেশটি থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় লাখো রোহিঙ্গা। মিয়ানমারের এ নির্যাতনকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ বলে আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা। সংস্থাগুলোর হিসাব মতে, আগস্টের পর এখন পর্যন্ত পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে ৭ লাখ রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের সময় রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে৷ সিঙ্গাপুর বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দশটি রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত জোট অাসিয়ানের চেয়ার, এ জোটের সদস্য মিয়ানমারও। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী সিঙ্গাপুরের প্রতি এ অাহ্বান জানিয়েছেন ৷

‘সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মিয়ানমার তাদের দেশ থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে অাসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে৷ কিন্তু নানাবিধ কারণে দেরি হচ্ছে৷ রোহিঙ্গা ইস্যুটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা৷ দ্রুত এর সমাধান হওয়া দরকার৷ তাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের সঙ্গে যে সমঝোতা হয়েছে তা ঠিক মত বাস্তবায়ন হচ্ছে না৷ মিয়ানমার যেন দ্রুত রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে সম্মত হয়, সেজন্য সিঙ্গাপুরকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ শেখ হাসিনার সঙ্গে শিয়েন লুংয়ের বৈঠকেও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে অালোচনা হয় বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব৷

সোমবার সকালে ‘ইস্তানা’য় পৌঁছানোর পর প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেয় সিঙ্গাপুরের সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল। এসময় বেজে ওঠে দু’দেশের জাতীয় সংগীত। পরে ইস্তানার ওয়েস্ট ড্রয়িং রুমে হালিমার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হয়। এরপর একই কক্ষে শিয়েন লুং ও শেখ হাসিনা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন। বৈঠকের পর দু’দেশের মধ্যে উড়োজাহাজ চলাচলে সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) সহযোগিতা বিষয়ে আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

এরপর শেখ হাসিনা অংশ নেন সিঙ্গাপুর প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে। সেখানেও তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন। সে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিঙ্গাপুরের শ্রমবাজারের প্রতি বাংলাদেশি কর্মীদের আগ্রহ বেশি। আমি আশা করি, সিঙ্গাপুর সরকার তাদের জন্য উপযোগী কাজের পরিবেশ তৈরি করবে এবং জনশক্তি রপ্তানির প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখবে। চার দিনের সরকারি সফরে ১১ মার্চ সিঙ্গাপুর গেছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ১৪ মার্চ তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ