মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনএক মঞ্চে মাহতাব, নাছির ও নওফেল । ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি

এক মঞ্চে মাহতাব, নাছির ও নওফেল । ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি

মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর দলের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষা দিবসে আনন্দ সম্মিলন সমাবেশ করেছেন। বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে মহানগর আওয়ামীলীগের এই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

তিনি মহানগর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়রের সাথে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, কোন ভাবেই প্রতিপক্ষ অপশক্তিকে দুর্বল ভাবা যাবে না। কারণ তাদের পেট্রোডলার আছে। এরা আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আমার বাবা দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। এই যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে দলীয় শ্রদ্ধেয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়রের সাথে নিজেকে নিবেদিত করবে।

নওফেল বলেন, গণতন্ত্র রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে সুদৃঢ় করতে আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। মনে রাখতে হবে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি এখনো তৎপর। এই অশুভ শক্তির কালো হাত ভেঙে দিতে হবে। গতকাল বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ শহীদ মিনার চত্বরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ এই কর্মসূচি পালন করে।

ব্যারিস্টার নওফেল বলেন, কিছু রাজনৈতিক অপশক্তি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাচ্ছে। তারা বিশ্বব্যাপী যেমনি পরাজিত হয়েছে, বাংলাদেশেও পরাজিত হয়েছে। মিথ্যা রাজনীতির মাধ্যমে যারা রাজাকার আলবদরদের সহযোগিতায় ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল তারা পরাজিত হয়েছে। তারা আজ ঐক্যবদ্ধভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক মাধ্যমে আমাদের সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করবার জন্য, আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য অনেক চেষ্টা করছে।

সভাপতির বক্তব্যে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধ থেকে আমরা ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলব। কঠিন চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলার শক্তি আওয়ামী লীগ রাখে। গণতন্ত্র স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অতীতের মত রাজপথে থাকবো। তিনি দলীয় পদ–পদবী নিয়ে যারা নিষ্ক্রিয় হয়ে আছেন তাদের সক্রিয়ভাবে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানান।

নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচন না হলে গণতন্ত্র ও সংবিধান মুছে যেত। তখন অগণতান্ত্রিক সরকার আসতো এবং জাতিকে অপশক্তি গ্রাস করতো। আমরা সেই বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, বিএনপি আজ গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করছে। জাতি জানে বিএনপি গণতন্ত্রের দুষমন। তারা বন্দুকের নলের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ছিনতাই করেছিল। এই জাতীয় শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই–সংগ্রাম অব্যাহত রেখে সামনের জাতীয় নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন হতে না পারার জন্য একটি রাজনৈতিক দল সক্রিয় ছিল। দলটির প্রতিষ্ঠাতার সমালোচনা করে মেয়র নাছির বলেন, তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন এটি আমরা স্বীকার করি। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন কিনা সেটির চেয়ে বড় কথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেন কিনা। এ মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেননি। উনি বন্দুকের নলের মাধ্যমে রাতের অন্ধকারে গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে একনায়ক সরকার কায়েম করেছিলেন, রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন। আমরা বিশ্বাস করি, দলটি কখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী হতে পারে না। তারা জঙ্গিবাদের বীজ রোপণ করেছিল। দেশকে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিল। অকার্যকর রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিল। তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের মাধ্যমে সরকার গঠন করতে হবে। সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।

সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, সহ–সভাপতি আলহাজ্ব নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট সুনীল কুমার সরকার, এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন, জহিরুল আলম দোভাষ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম.এ. রশীদ, উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগ নেতা আলহাজ্ব সফর আলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, নির্বাহী সদস্য এম.এ. জাফর, থানা আওয়ামী লীগের আলহাজ্ব শাহাবুদ্দিন আহমেদ, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ ইয়াকুব।

সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বাদ্যবাদন সহযোগে একটি আনন্দ র‌্যালী পুরাতন রেল স্টেশন হয়ে দারুল ফজল মার্কেট চত্বরে এসে শেষ হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ