বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
প্রচ্ছদদেশজুড়েখুলনা বিভাগসংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য'র মেয়েকে ছুরিকাঘাত

সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য’র মেয়েকে ছুরিকাঘাত

বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান দেখে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে বাগেরহাটের সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য হেপী বড়ালের মেয়ে ব্যারিস্টার অদিতি বড়াল (২৭) জখম হয়েছেন। শনিবার সন্ধ্যায় বাগেরহাট শহরের কে আলী রোডের আমলাপাড়া বিদ্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে। তাকে উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নারী সংসদ সদস্যে মেয়ের উপর হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস, পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায়সহ আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মীরা হাসপাতালে দেখতে যান। তবে পুলিশ এখনো ওই হামরাকারীকে ধরতে পারেনি। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অদিতি বড়াল বার এ্যাট ল শেষ করে উচ্চ আদালতে আইনপেশায় নিয়োজিত রয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অদিতি বড়াল সাংবাদিকদের বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে শহরের আমলাপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নারীদের সমাবেশ ছিল। সেই অনুষ্ঠানে আমি আমার মা হেপী বড়ালের সাথে যাই। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগে আমি মাকে বলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হই। বিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসে দাড়ালে অপরিচিত এক ব্যক্তি আমার সামনে এসে দাড়ায়। আমি নারী সংসদ সদস্য হেপী বড়ালের মেয়ে কিনা তা জানতে চায়। আমি হ্যাঁ সূচক জবাব দিতেই তিনি ছুরি বের করে আমার পেটে আঘাত করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

কেন তার উপর হামলা হলো তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০০০ সালের ২০ আগস্ট আমার বাবা হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ, আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট কালিদাস বড়ালকে প্রকাশ্য বিদালোকে শহরের সাধনার মোড়ে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে। ২০১৩ সালে সেই হত্যাকারীদের আদালত সাজা দিয়েছে। ওই দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। প্রায় আট মাস আগে আমার বাড়িতে দুর্বৃত্তরা আমার উপর হামলা চালিয়েছিল। ওই সময়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়।

পুলিশ ওই সময়ে অপরাধীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করেনি বলে তারা আবারও আমার উপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। আগে আমি পিতৃহারা হয়েছি। মা আমাদের তিন বোনকে আগলে রেখেছেন। তাই এখন আর মা হারা হতে চাই না। তাই আমার পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।

নারী সংসদ সদস্য হেপী বড়াল সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামী কালিদাস বড়ালের হত্যাকারীদের বিচার হওয়ায় আসামিরা ক্ষুব্দ। তারা আমাদের সব সময় হত্যার পরিকল্পনা করে আসছে। আমার স্বামীর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন। আমি সাংসদ হওয়ায় দলের অনেকেই তা ভালোভাবে নিতে পারেনি। একারণেও আমার মেয়ের উপর হামলা হয়ে থাকতে পারে বলে তিনি মনে করছেন। আমি ও আমার পরিবার এখন নিরাপত্তাহীন।

বাগেরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন ডা. অরুণ চন্দ্র মন্ডল সাংবাদিকদের বলেন, অদিতির পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি এখন আশংকামুক্ত।

বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা বলেন, যারা আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি হেপী বড়ালের মেয়ে অদিতি বড়ালের উপর প্রকাশ্য দিবালোকে হামলা চালিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করাতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।

বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের বলেন, নারী সংসদ সদস্য হেপী বড়ালের মেয়ে ব্যারিস্টার অদিতি বড়ালের হামলাকারীকে চিহ্নিত করতে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। কারা কেন এই হামলা চালিয়েছে তা উদঘাটন করতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। খুব শিগগির তা বের করতে পারব বলে মন্তব্য করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা

আরও পড়ুন

সর্বশেষ