শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনভর্তি বানিজ্যে অভিযুক্ত বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সামাজিকভাবে বয়কটে প্রচারণা কর্মসূচি শুরু

ভর্তি বানিজ্যে অভিযুক্ত বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সামাজিকভাবে বয়কটে প্রচারণা কর্মসূচি শুরু

জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম, জেলা শিক্ষা অফিস, শিক্ষা বোর্ড ও ক্যাব প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত মনিটরিং টিমের তদন্তে প্রাথমিক ভাবে ৪৬টি প্রতিষ্ঠান অভিযুক্ত হয়ে পরবর্তীতে তারা অতিরিক্ত অর্থ ফেরত/সমন্বয় করতে রাজি হলেও ভর্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভর্তি নীতিমালা অনুসরণ না করে অতিরিক্ত ফিস আাদায়, পূনঃ ভর্তিতে বিপুল পরিমান অর্থ আদায়, টিসি গ্রহনে পুরো বছরের ফিস আদায়সহ নামে-বেনামে বিপুল পরিমান অর্থ আদায়ে অভিযোগ প্রমানিত ০৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সর্বশেষ পর্যায়ে একাডেমিক স্বীকৃতি বাতিল ও ০৫টিকে কারন দর্শানো প্রদান করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা বোর্ডের একাডেমিক স্বীকৃতি বাতিলকৃত প্রতিষ্ঠানগুলো হলোঃ মেরন সান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চকবাজার, মেরিট বাংলাদেশ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চিটাগাং আইডিয়াল স্কুল, জামালখান, চিটাগাং ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুল(চকবাজার), মির্জা আহম্মেদ ইস্পাহানী উচ্চ বিদ্যালয়, পাহাড়তলী, এলিমেন্টারী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, দামপাড়া এবং চট্টগ্রাম ক্যান্টমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চিটাগাং ক্যান্টমেন্ট ইংলিশ স্কুল, হালিশহর ক্যান্টমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বিএএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজকে স্বীকৃতি কেন বাতিল হবে না তার ব্যাখ্যা জানানোর জন্য কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছেন। পরবর্তীতে এ সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের মুল্যবান শিক্ষা জীবনের কথা বলে মাননীয় হাইকোর্টে গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসেন। হাইকোর্টে মামলা চলাকালীন সময়ে এসমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ২০১৮ শিক্ষা বর্ষে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর উদ্যোগ নিতে পারেন। ভর্তি বানিজ্যে অভিযুক্ত ও এ বিষয়ে হাইকোর্টে মামলা চলাকালীন প্রতিষ্ঠানে আপনার সন্তান ভর্তি হলে আপনার সন্তানের শিক্ষা জীবন হুমকিতে পতিত হতে পারেন। একই সাথে এসমস্ত অভিযুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সামাজিক ভাবে বয়কটের আহবান জানানো হয়েছে। ২৫ নভেম্বর ২০১৭ইং চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ভর্তি বানিজ্যে অভিযুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সামাজিক ভাবে বয়কটে প্রচারণা কর্মসুচি ্উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ আহবান জানান দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব) চট্টগ্রাম নগর ও বিভাগীয় কমিটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ক্যাব মহানগর কমিটির সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, ক্যাব দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব মহানগর সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক এ এম তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব নেতা জান্নাতুল ফেরদৌস, ফারহানা জসিম, হারুন গফুর ভুইয়া, সেলিম জাহাঙ্গীর, সেলিম সাজ্জাদ, জানে আলম, জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।

চট্টগ্রামে ভর্তি বানিজ্যে অভিযুক্ত ৪৬টি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ইং এর মধ্যে ভর্তি নীতিমালার নির্ধারিত অতিরিক্ত ফেরৎ প্রদানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্ঠি করতে দিনব্যাপী প্রচারণা কর্মসুচি পরিচালনা করেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব) চট্টগ্রাম নগর কমিটি। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ইং সকাল ১০.০০ মিঃ ভর্তি বানিজ্যে অভিযুক্ত সিডিএ চান্দগাঁও পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে চট্টগ্রামে ভর্তি বানিজ্যে অভিযুক্ত ৪৬টি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সময় অতিরিক্ত অর্থ ফেরৎ প্রদানে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা বাস্তবায়নে অভিভাবকসহ সংস্লিষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্ঠিতে দিনব্যাপী প্রচারণা কর্মসুচি পরিচালনা করেন। কর্মসুচির আওতায় পর্যায়ক্রমে নগরীর ৪৬টি স্কুল পরিদর্শন ও অভিভাবকদের সাথে মতবিনিময়ের জন্য প্রচারনা কর্মসূচির আওতায় পর্যায়ক্রমে অভিযুক্ত (৪৬) সকল স্কুল পরির্দশন করবেন। প্রচারণা কর্মসূচিতে নেতৃত্ব প্রদান করছেন ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি হাজী ইকবাল আলী আবকর, ক্যাব মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস,যুগ্ন সম্পাদক জানে আলম,ক্যাব চান্দঁগাও থানার সহ-সভানেত্রী ফারহানা জসিম প্রমুখ।

প্রচারনা কর্মসুচির আওতায় সিডিএ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিডিএ গার্লস স্কুল, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়, কাজেম আলী উচ্চ বিদ্যালয়, মেরন সান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মেরিট বাংলাদেশ স্কুল অ্যান্ড কলেজ,কর্নফুলী পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ন্যাশনাল পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, এশিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বেপজা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইস্টার্ন রিফাইনারী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বাংলাদেশ নৌবাহিনী উচ্চ বিদ্যালয়, টিএসপি কমপ্লেক্স মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রমুখ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন এবং অভিভাবক ও স্কুল কর্তপক্ষের নিকট লিফলেট বিতরন করেন। অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভর্তি নীতিমালা, জেলা প্রশাসক ও সরকারের অন্যান্য নির্দেশনা মোতাবেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করবেন বলে জানান।

উল্লেখ্য ভর্তি নীতিমালা ২০১৬ অনুযায়ি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ৩০০০/- (তিন হাজার) টাকার বেশী অর্থ আদায় করতে পারবে না। একই স্কুলে পুণঃ ভর্তির টাকা নেয়া যাবে না(অনেকে পুনঃ ভর্তি নাম না দিয়ে উন্নয়ন ফিসসহ বিভিন্ন নামে ফিস আদায় করছে, যা আইন নিষিদ্ধ)। টিউশন ফিস আদায়ের বেলায় ও অভিভাবকদের সামর্থ বিবেচনা আনতে হবে। সেশন ফিস বৃদ্ধি করতে হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহকে আগে অভিভাবকদের সাথে আলোচনা করতে হবে এবং পরবর্তীতে আয় ব্যয় খাতগুলি বিস্তারিত যৌক্তিক কারন ব্যাখ্যা করে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে হবে। সরকার নির্ধারিত ভর্তি ফিস এর বাইরে অতিরিক্ত টাকা টাকা আদায়ের প্রমান পেলে নিবন্ধন বাতিল, সরকারী পাঠ্যবই দেয়া বন্ধ, সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশ নেয়া বন্ধ, ম্যানেজিং কমিটি, এমপিও বাতিলসহ শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ১৭ জানুয়ারি ২০১৭ইং চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক এর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেলা প্রশাসনের নির্র্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে ৫টি মনিটরিং কমিটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন, যেখানে ক্যাব প্রতিনিধিও অর্ন্তভুক্ত ছিলেন। কমিটি চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে ৪৬টি প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত করা হয়। এই ৪৬টি প্রতিষ্ঠিানকে নিয়ে বিগত ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ইং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত গৃহিত হয় যে, অতিরিক্ত ফিস গ্রহনকারী প্রতিষ্ঠানগুলিকে অতিরিক্ত অর্থ আাগামী ১০ (২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ইং) দিনের মধ্যে ফেরত দিতে হবে নতুবা সমন্বয় করার জন্য বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ