শনিবার, মে ৪, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়এক কোটি ১৮ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশিও পেপাল সুবিধায় দেশে টাকা পাঠাতে পারবেন...

এক কোটি ১৮ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশিও পেপাল সুবিধায় দেশে টাকা পাঠাতে পারবেন : জয়

অনলাইন ভিত্তিক অর্থ পাঠানোর প্ল্যাটফর্ম পেপালের জুম সার্ভিস উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন, তার নিজেরও এই সার্ভিসে অ্যাকাউন্ট আছে। ১৯ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই সেবার উদ্বোধন করেন করেন জয়। বিশ্বের ২০৩টি দেশে পেপাল সেবা চালু আছে। এর মধ্যে মাত্র ২৯টি দেশে পেপালের পূর্ণাঙ্গ সেবা চালু আছে এবং ১০৩টি দেশে শুধু ইনবাউন্ড সেবা চালু রয়েছে। বাংলাদেশও ইনবাউন্ড সেবায় যুক্ত হলো। ফ্রিল্যান্সাররা দীর্ঘ দিন দেশে পেপাল সার্ভিসের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এই সার্ভিসের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে খুব সহজেই দেশে টাকা আসে। পেপাল এই সার্ভিসের উদ্বোধনের পর জয় বলেন, আমাদের তরুণেরা অনলাইনে যে আয় করছে, সেই টাকা পাঠাতে বিরাট সমস্যা ছিল। ৩-৭ দিন সময় এবং টাকার ৩০ শতাংশের বেশি পাঠানোর খরচেই চলে যেতো। ফ্রিল্যান্সারদের দাবি ছিল পেপাল চালু করা।

আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা দিতে চাই, আজকে সেই সার্ভিস বাংলাদেশে চালু হলো। পেপাল অ্যাকাউন্ট থেকে, অ্যাপ থেকে সরাসরি টাকা পাঠাতে পারবে। ৪০ মিনিট থেকে টাকা দুই ঘণ্টার মধ্যে চলে আসবে। বছরে কোনো ফি দিতে হবে না। সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা যে কোনো সময় টাকা পাঠানো যাবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এক কোটি ১৮ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশিও এই সুবিধায় দেশে টাকা পাঠাতে পারবেন বলে জানান জয়। নিজেরও একটি পেপাল অ্যাকাউন্ট রয়েছে জানিয়ে জয় বলেন, আমারও পেপাল অ্যাকাউন্ট আছে, আমিও চেক করে দেখেছি যে কোনো সময় বাংলাদেশে টাকা পাঠাতে পারি। সরাসরি পেপাল চালু না হওয়ায় এর ইনবাউন্ড সেবা জুম চালু নিয়ে সমালোচনা করে আসছেন অনেকেই। কারণ, এই সেবায় দেশের বাইরে টাকা পাঠানো যাবে না।

জবাবে জয় বলেন, এটা ব্যর্থতা নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনে দেশের বাইরে টাকা পাঠানো নিষিদ্ধ। ২০০৯-১০ সালে বিশ্বে যে অর্থনৈতিক ক্রাইসিস পড়েছে, বাংলাদেশে তার প্রভাব পড়েনি। বাংলাদেশ থেকে টাকা যেন স্বাধীনভাবে না যেতে পারে, সেটা আমাদের পলিসি। তবে ভবিষ্যতে এই সীমাবদ্ধতা থাকবে না।

এই সেবার মধ্য দিয়ে রেমিটেন্স এবং ফ্রিল্যান্সারদের আয় আগে যে হুন্ডির মধ্য দিয়ে আসতো সেটা বন্ধ হয়ে যাবে জানিয়ে জয় বলেন, এখন লিগ্যাল চ্যানেল দিয়ে সেটা আসবে। এতে দুর্নীতির সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। টাকা চুরি হওয়ার সম্ভাবনা আর থাকছে না। ভবিষ্যতে অর্থ লেনদেনে নিজের স্বপ্নের কথা তুলে ধরে জয় বলেন, আমাদের দেশের ভেতর যতো লেনদেন হবে, সরকারি বিভিন্ন ফি, লাইসেন্স ফি, বিদ্যুৎ-গ্যাস বিল- সব টাকা লেনদেন অনলাইনে হবে। মোবাইলের মাধ্যমে হবে।

‘আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে আমরা মোবাইল ফাইন্যান্সিং সিস্টেম বানিয়ে, এটা থাকবে বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে। ভাতার টাকা, সেবার টাকা মেরে দেওয়ার সুযোগ, ঘুষ নেওয়ার সুযোগ থাকবে না। ইন্টারনেটের খরচ প্রসঙ্গে জয় বলেন, এক সময় এক এমবিপিএস ৮০ হাজার টাকার মতো ছিল, এটা কমিয়ে ৬০০ টাকায় এনেছি। আমার ওয়াদা, আমরা কয়েক বছর পর পর দাম কমাতে থাকবো। ইনফো সরকার-৩ এর মাধ্যমে ২৬শ ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক নিয়ে গেছি। লাস্ট মাইল সল্যুশন হবে ওয়ারলেস ব্রডব্যান্ড দিয়ে। আমরা যে সব ওয়াদা করেছিলাম, তা পালন করেছি। আওয়ামী লীগ সরকার যখন থাকে তখন উন্নয়ন হয়।

পেপালের এই সেবা চালুর মধ্য দিয়ে আগামী ছয় মাসের মধ্যে রেমিটেন্সের একটি বড় পরিবর্তন ঘটবে বলে মনে করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ। বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ফজলে কবীর বলেন, পেপালের মাধ্যমে রিয়েল টাইমে অর্থ জমা হবে। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়বে। পাঁচ লক্ষাধিক ফ্রিল্যান্সার বৈধ পথে অর্থ দেশে আনতে পারবে। পেপালের দাবি দীর্ঘ দিনের উল্লেখ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ফ্রিল্যান্সিং খাতে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ আসে তার রিপোর্টটা আসছে না, কারণ বিচ্ছিন্নভাবে আসে। এখন দিন রাত ২৪ ঘণ্টা স্বল্প খরচে টাকা পাঠাতে পারবেন। তিনি বলেন, তরুণদের নিয়ে অন্য কোনো দল ভাবেনি, যেটা ভেবেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়ই ভেবেছেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ