শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়বিএনপি ক্ষমতায় থেকে গড়েছিলো কালো টাকার পাহাড় : প্রধানমন্ত্রী

বিএনপি ক্ষমতায় থেকে গড়েছিলো কালো টাকার পাহাড় : প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট (বিডি সময় ২৪ ডটকম)

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিরোধী দল ক্ষমতায় আসলে সব উন্নয়ণ বন্ধ হয়ে যাবে। তারা ক্ষমতায় থেকে গড়েছিলো কালো টাকার পাহাড়। শনিবার বিকালে আড়াইহাজার উপজেলায় স্থানীয় শহীদ মঞ্জুর স্টেডিয়ামে উপজেলা পরিষদের পক্ষ্য থেকে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনা এ কথা বলেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ১৪টি নিমার্ণ কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্ত স্থাপন করেন। এর মধ্যে রয়েছে, ১০০ একক জমির উপর উপজেলার বিশ্বনন্দী ইউনিয়নে মেঘনা ফেরিঘাট এলাকায় বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষন ইনস্টিটিউটের (বারটান) প্রধান কার্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্ত স্থাপন, আড়াইহাজার উপজেলা কমপে¬ক্সের স¤প্রসারণ, উপজেলার সদর পৌরসভাধীন ঝাউগাড়া এলাকায় এগ্রিকালচারাল টেনিং ইনস্টিটিউট এর উদ্বোধন, ৫০০ আসন বিশিষ্ট উপজেলা সদরে মুক্তিযুদ্ধা এস.এম মাজহারুল হক অডিটরিয়াম এর উদ্বোধন, দয়াকান্দা চিলি নদীর ওপর ১০০মি: আর.সি.সি ,ও দয়াকন্দা খালের ওপর ৭৫ মি: দুইটি পিসি গার্ডার ব্রীজ উদ্বোধন, নারায়ণগঞ্জে সার্কিট হাউজ উদ্বোধন, প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষন ইনস্টিটিউট, সোনারগাঁওয়ে শ্রী জ্যোতি বসু স্মৃতি পাঠাগার ও সেমিনার হল, বন্দর উপজেলারস্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ৩১ শষ্যা থেকে ৫০ শষ্যায় উন্নীতকরণ, সিদ্ধিরগঞ্জ ৩৩৫ মে:ও কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভিত্তি প্রস্ত স্থাপন, মুড়াপাড়া ফেরিঘাট এলাকায় রাস্তা ও শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর ৫৭৬ মি: দীর্ঘ পিসি গার্ডার ব্রীজের ভিত্তি প্রস্ত স্থাপন, উপজেলা কমপ্লেক্সে ৫০৯ সম্প্রসাণ ও প্রশাসনিক ভবনের ভিত্তি প্রস্ত স্থাপন । এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী এদিন হরিপুরে ৪১২ মে;ও কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্ত স্থাপন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মাথাপিছু আয় বাড়িয়েছি। কিন্তু বিরোধী দল ক্ষমতায় এলে বন্ধ হয়ে যাবে সব। তারা নতুন ধরণের সরকারের কথা বলেছেন। আসলে তারা নতুন হাওয়া ভবন গড়বে, বিরোধী দলীয় নেতা তার দুই ছেলেকে লেলিয়ে দিবেন দূর্নীতি করতে। তারা দূর্নীতির নতুন দিগন্ত সূচনা করবেন।
নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে বলেন, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র একদিন নারায়ণগঞ্জের মানুষের মুখে অফুরন্ত হাসি ফোটাবে। এমন আরো সেবার ধারা অব্যাহত রাখতে আপনারা আবার নৌকা মার্কায় ভোট দিন। ডিজিটাল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়ণ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বাংলাদেশকে ডিজিটাল করার কথা বলেছিলাম। আমরা সে লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা উপজেলা পর্যায়ে ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়েছি। মোবাইল সহজলভ্য করেছি। অথচ বিএনপি সরকার এই মোবাইলের খরচ আকাশ ছোঁয়া করে রেখেছিলো। তাদের আমলে এক মিনিট কথা বললে ১০ টাকা খরচ করতে হতো। করলেও টাকা, ধরলেও টাকা।”
দেশের উন্নয়ণ বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা দেশে অসংখ্য সেতু-কালভার্ট নির্মাণ করেছি। যেগুলো দেশের মানুষের অশেষ উপকার সাধন করেছে। আমরা শিক্ষা ব্যবস্থার বহু উন্নয়ণ করেছি। মাধ্যমিক পর্যায়ে পর্যন্ত অবৈতনিক পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছি। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য উচ্চ শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত করেছি।
বিগত বিএনপি জামায়াত সরকারের কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিগত সরকার দেশের কোনো রকম উন্নয়ণ করেনি। তারা কেবল কালো টাকার পাহাড় গড়েছিলো। তারা আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ণ ধ্বংস করেছে। আমরা দেশজুড়ে কমিউনিটি ক্লিনিক গড়েছিলাম, সেগুলো বিএনপি বন্ধ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা মোবাইলের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। ওয়েব ক্যামেরার মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি। আমরা রোজার মধ্যে দ্রব্য মূল্যের দাম কমিয়েছি। ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রেখেছি সব কিছুর দাম। আমরা মাদক মহামারি ঠেকাতে উদ্যোগ গ্রহন করেছি।
আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনা বলেছেন, হাওয়া ভবন বাংলদেশের মানুষ আর চায় না । বঙ্গবন্ধুর সোঁনার বাংলা গড়ে তুলতে হলে আওয়ামীলীগকে আবারও রাষ্ট্রক্ষমতায় আনতে হবে। আওয়ামীলীগ সরকার আবার ক্ষমতায় আসলে অসম্পূর্ণ কাজ গুলো শেষ করতে পারবে। তার না হলে দেশের উন্নয়ন আবার থেমে যাবে। বিএনপি দেশের উন্নয়ন ভালোবাসে না। তারা ভালোবাসে লুটপাট। বিএনপি আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত হয়ে বিরোধী দল দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের কে প্রতিহত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনা অবতরন করেন। তাকে উপজেলা প্রশাসনসহ আওয়ামলীগীগের নেতাকর্মীরা স্বাগত জানান। বেলা ২ পনের মিনিটে উপজেলা উপজেলা সদরের ঝাউগাড়া এলাকায় পুরাতন বিমান বন্দরে বিশেষ বিমানে করে অবতরন করেন। এখান থেকে তিনি বিশেষ নিরাপ্তায় সরাসরি উপজেলা আধুনিক ডাক বাংলায় উঠেন। দুপুরের খাবার শেষে মন্ত্রী স্থানীয় শহীদ স্টেডিয়ামে জনসভায় যান। এ সময় আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যড. রশিদের সভাপতিতে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, এ.জি.ই.ডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফ, সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন জাহাঙ্গীর কবির (নানক), বিদ্যুৎ ও জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী বিগ্রেডিয়ার এনামুল হক, জ্বালানী উপদেষ্ঠা তৌফিক ই এলাহী, স্থানীয় এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, নাসিম ওসমান এমপি, গোলাম দস্তগীর এমপি,কাউসার হাসনাত এমপি, প্রধান প্রকৌশলী এহসানুল হক, প্রমূখ।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে বিএনপি নানাভাবে চেষ্টা করেও সুবিধা করতে পরেনি। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যু নিয়ে মাঠ গরমের চেষ্টা করছে বিরোধীদলের নেতারা। বাংলাদেশের মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় না । এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ২১ আগষ্ট ঢাকা আওয়ামীলীগের ২২ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। সেই অনুষ্ঠানে আইভী কে খুন করা হয়েছে। ১৫ আগষ্ট জাতীর পিতা কে স্বপরিবারে হত্যা কর হয়েছিল । তিনি বলেন, এদেশে বার বার আওয়ামীলীগ নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে। প্রতিটিজেলা কে নিরক্ষর মুক্ত করার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। বিরোধীদলে নেত্রী তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু তৈরি দেশে অসাংবিধানিক সরকার ব্যবস্থা চালু করার নীল নকশা করছেন। আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসলে তাকেই আগে জেলে যেতে হবে । তার গুনধর ছেলেদের দুর্নীতির কারণে আরো মামলা হবে। এ সরকারের অধীনে আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। ইতি মধ্যে সরকার প্রমাণ করেছে আ.লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব। আ.লীগ সরকার পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসবে না। জনগণ ভোট দিলে আবার ক্ষমতায় আসবে। আড়াইহাজারে আ.লীগের সকল নেতাকর্মীকে বিবাদ ভুলে গিয়ে কাজ করার আহবান জানান ।
স্থানীয় এমপি নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, ২০০৯ সালের ১ লা জানুয়ারী থেকে ৩০জুন ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৭৫ কোটি ৩৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকার কাজ হয়েছে ১৬ কোটি ৯৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো নির্মাণ, সড়ক নির্মাণে ব্যয় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা, ব্রীজ কালবার্ট ও পূর্ণ নির্মাণে ব্যয় ১৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা, পল্লী অবকাঠামো সড়ক রক্ষনাবেক্ষণ ব্যয় ১৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ ও হল রুম ৩ কোটি ৬৩ লাখ ৪৪ হাজার টাকা, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ ব্যয় ৪ কোটি ৮ লাখ টাকা, বার্ষিক উন্নয়ন সহযোগীতা তহবিল ১০৫টি ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি বাবদ ব্যয় ১৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা । এমপি বলেন, গত ৪০বছরে আড়াইহাজারে উল্লেখ্যযোগ্য উন্নয়ন হয়েছে। আগামীতে আওয়ামীলীগ নির্বাচিত হতে পারলে উন্নয়নের দ্বারা অব্যাহত থাকবে। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে দেশে সব সময় উন্নয়ন হয়। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে দেশের টাকা বিদেশে পাঁচার হয়। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাস হয়। মেয়েরা রাস্তায় অবাদে চলাচল করতে পারে না। বিএনপি ক্ষমতায় আমলে মৌলবাদের উন্থান হয় । আগামী নির্বাচনে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি’র মদদদাতাদের ভোট দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসালে দেশের খুন খারাপী বেড়ে যাবে। দেশের আইনশৃঙ্খলার অবনতি হবে। চুরি,ডাকতি বেড়ে যাবে। স্কুলে মেয়েরা নিরাপদে যেতে পারবে না। কলেজে সন্ত্রসীদের রাজত্ব কায়েম হবে। সাধারণ মানুষের জমিজমা জোরপূর্বক দখল হয়ে যাবে। বিএনপি-জামায়াত আবার ক্ষমতায় আসলে যুদ্ধাপরাধীরা পার পেয়ে যাবে। তাদের বিচার হবে না।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ