শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়প্রবাসীদের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : দলীয় নেতা-কর্মীদের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের তাগিদ...

প্রবাসীদের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : দলীয় নেতা-কর্মীদের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের তাগিদ দিয়েছে

received_1942127869391695 দলীয় নেতা-কর্মীদের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের তাগিদ দিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি আমার এমপিদের বলেছি, আপনারা দেখেন, শেখেন। কীভাবে ভোটারের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করা যায়। ওই বড় বড় গাড়ি-বাড়ি হলেই ভোটাররা ভোট দেবে না।  তিনি বলেন, ভোটারের সমস্যা জানতে হবে। সেগুলোর সমাধান করতে হবে। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদের আপনজন ভাবতে হবে। আগামীতে নির্বাচন। এই ইলেকশনটা বিরাট চ্যালেঞ্জ, এটা মনে রাখতে হবে। মঙ্গলবার রাতে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে ম্যারিয়ট হোটেলে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি সভায় দেশের বিভিন্ন খাতে অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন এবং বিএনপি-জামায়াত জোটের নানা কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ও বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার কথা মিয়ানমারকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া এবং মেয়েদের ধর্ষণ করা হয়েছে। সেখানে এমন পরিবেশ-পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যে সেখান থেকে দলে দলে মানুষ এসেছে। মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিতে হয়েছে। কক্সবাজারে নিজের চোখে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখে আসার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সেখানে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমার কেবল নিজেদের কথা মনে হয়েছে। আমাদেরও একদিন এভাবে হানাদার পাকিস্তানিদের কারণে এ ঘর থেকে ও ঘরে আশ্রয় খুঁজে বেড়াতে হয়েছে। আমাদের ঘরবাড়ি সব জ্বালিয়ে ছারখার করেছে। মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছে। আমাদের দেশের মানুষও আশ্রয় নিয়েছিল। ভারতে প্রায় এক কোটি শরণার্থী ছিল। আজকে যখন তারা (রোহিঙ্গা) বিপদে পড়েছে, অবশ্যই তাদের জায়গা দিতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, এত মানুষের খাবার দেবেন কীভাবে? আমি তাদের একটা কথাই বলেছি; ১৬ কোটি মানুষ আমাদের। এই ১৬ কোটি মানুষকে যদি খাবার দিতে পারি, তাহলে এই সাত-আট লাখ লোককে খাবার দিতে পারব না? বাংলাদেশের মানুষ অনেক উদার মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রয়োজনে তারা একবেলা খাবে। অন্যবেলার খাবার এই আশ্রিত মানুষকে তুলে দেবে, সেই মানসিকতা তাদের আছে। আমরা সেখানে লঙ্গরখানা খুলে দিয়েছি, চিকিৎসা, থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কিন্তু মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতেই হবে।   শেখ হাসিনা বলেন, কোনো দেশে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটুক, তা বাংলাদেreceived_1942128146058334শ চায় না। বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে প্রতিবেশী কোনো দেশে কাউকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে দেওয়া হবে না। রোহিঙ্গা বিষয়ে আন্তর্জাতিক জনমত গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধন্যবাদ জানাতে চাই। জাতিসংঘে যাদের সঙ্গেই দেখা হচ্ছে, প্রত্যেকেই কিন্তু এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। তিনি বলেন, জাতিসংঘে ওআইসির এক বৈঠকে আমি প্রশ্ন রেখেছি, আজকে মুসলমানরা কেন রিফিউজি হয়ে ঘুরে বেড়ায়? আপনারা সবাই কেন এক হন না? কেন সবাই ঐক্যবদ্ধ হন না?

৫৫ ফুট দীর্ঘ একটি নৌকার ওপর স্থাপিত হয় সমাবেশ মঞ্চ। পেছনে ছিল মুক্তিযুদ্ধের জন্যে শুরু হওয়া আন্দোলনের ৬ দফা এবং টানা তৃতীয় টার্মের জন্যে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার প্রত্যয়-প্রতীক। এ উপলক্ষে ২০ মিনিটের একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়। গত কয়েক বছরে আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামাত-শিবিরের নাশকতামূলক তৎপরতার আলোকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের তৈরী করা এ চিত্রে ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড প্রতিহত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কীভাবে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে-তা চমৎকারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি ৮ পৃষ্ঠার একটি বুকলেট প্রকাশ করা হয়েছে শেখ হাসিনার রূপকল্পের পরিপূরক হিসেবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী মন্ত্রী, এমপি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরি কমিটির সকল সদস্য, মহানগর আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আমেরিকার বিভিন্ন স্টেট কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ও অঙ্গসংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ। মঞ্চে আরো ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইটি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজিদ জয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম মাহমুদ চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিজাম চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদিকা আইরীন পারভীন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম বাদশা, ফারুক আহমেদ, আব্দুল হাসিব মামুন, মহিউদ্দিন দেওয়ান, চন্দন দত্ত, কাজী কয়েস, হিন্দাল কাদির বাপ্পা, হাজী এনাম প্রমুখ।

সমাবেশে নিউজার্সি, পেনসিলভেনিয়া, কানেকটিকাট, বস্টন, ওয়াশিংটন মেট্র, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, মিশিগান, শিকাগো, লসএঞ্জেলেস থেকেও এসেছিলেন নেতা-কর্মীরা। নিউইয়র্ক মহানগর এবং নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ছিলেন সরব। অনুষ্ঠান শুরুই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিঠক থেকে পাঠ করা হয়। এছাড়া জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের খতিব মওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ ‘জাতির পিতা’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিজবুর রহমান সহ সকল শহীদের বিদেহী আতœার শান্তি কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করেন। এরপর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালনের পর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রথীন্দ্র নাথ রায়, শহীদ হাসান ও ফকির আলমগীরের নেতৃত্বে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। সমাবেশে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নিজাম চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক আইরিন পারভীন, সাংগঠনিক সম্পাদক যথাক্রমে ফারুক আহমেদ, আব্দুল হাসিব মামুন, মহিউদ্দিন দেওয়ান, আব্দুর রহিম বাদশা ও চন্দন দত্ত, প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম, জনসংযোগ সম্পাদক কাজী কয়েস, আইন বিষয়ক সম্পাদক শাহ বখতিয়ার, উপ দপ্তর সম্পাদক আব্দুল মালেক শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।

বক্তব্য রাখেন মহানাগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এমদাদ চৌধুরী, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হারুণ ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল, মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মমতাজ শাহনাজ, ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন নবী বাকি, শ্রমিক লীগের সভাপতি কাজী আজিজুল হক খোকন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সদস্য মুজিবুল মাওলা, আব্দুল করিম প্রমুখ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ