মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়সব সহ্য করা যায়, কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করলে কিছুতেই সহ্য করব...

সব সহ্য করা যায়, কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করলে কিছুতেই সহ্য করব না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সব সহ্য করা যায়, কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করলে এটা আমরা কিছুতেই সহ্য করব না।  তিনি আরো বলেন, ‘আমি জনগণের কাছে বিচার চাই যে আজ পাকিস্তানের সঙ্গে কেন তুলনা করবে? পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কেন তুলনা করবে? ওই হুমকি আমাকে দিয়ে লাভ নাই। সোমবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ১৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর খামার বাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলোচনা সভায় ষোড়শ সংশোধনীর বাতিলের রায়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার করা মন্তব্যের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের আদালত বড় আদালত। জনগণের আদালতকে কেউ অস্বীকার করতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান রায় দিল বলে কেউ ধমক দিবে; আমি জনগণের কাছে বিচার চাই। আমরা আইয়ুব খান দেখেছি, ইয়াহিয়া খান দেখেছি, দেখেছি জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়াকে। ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ভোট চুরি করে যারা সংসদ সদস্য হয়েছিল তার মধ্যে একজন তো এখন বিচারক। খালেদা জিয়া তাঁদেরও বিচারক বানিয়েছেন। কই চিফ জাস্টিস তো তাঁকে বের করে দেননি।?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানকে আমরা যুদ্ধ করে হারিয়েছি। যে পাকিস্তান ব্যর্থ রাষ্ট্র। সে পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের তুলনা করবে। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। আজ দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। কারো কারো বক্তব্য কী? কয়টা রাস্তাঘাট ও ফ্লাইওভার হলেই উন্নয়ন হলো না। আজ যে দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। ৪৭ ভাগ ছিল, ২২ ভাগে নামিয়ে এনেছি। মাথাপিছু আয় বেড়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে এত কথা। সেখানে তো আপিল বিভাগের প্রত্যেক জজ সাহেব তাঁরা স্বাধীন মত কতটুকু দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তা আমি জানি না। সে সুযোগটা বোধহয় প্রধান বিচারপতি তাঁদের দেন নাই। রায়টা পড়লে অনেক কিছু বোঝা যায়। রায়টা পড়ছি। আরো বাকি আছে। এরপর এটা নিয়ে আমরা পার্লামেন্টে আলোচনা করব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেলকে একজন কোনো এক আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আইনজীবী তিনি যে জঘন্য ভাষায় গালি দিলেন, কোনো ভদ্রলোকের সন্তান এভাবে গালি দিতে পারে, এটা আমার জানা নাই। ড. কামাল হোসেনের মতো মানুষ অ্যাটর্নি জেনারেলকে যে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়েছেন, যে ভাষা ব্যবহার করেছেন তা বলতে আমার লজ্জা হয়। আজ কোর্টের অবস্থা কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন তারা। আজ জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছেন। সেজন্যই তো দেশে আদালত, উচ্চ আদালত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধান বিচারপতি এবং প্রধানমন্ত্রী এ দুইটি পদ রাষ্ট্রপতির ইচ্ছেমতো নিয়োগ হয়ে থাকে। রাষ্ট্রপতি যাকে নিয়োগ দিলেন, তিনি আবার রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা কেড়ে নিতে চাইছেন। যে ক্ষমতা সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে। সে ক্ষমতা কেড়ে নেন কীভাবে? সেটা দেওয়া হচ্ছে না বলেই যত রাগ ও গোস্বা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করা তো উচ্চ আদালতের দায়িত্ব না। পার্লামেন্টের মেম্বার দিয়ে অশালীন মন্তব্য করা তো উচ্চ আদালতের দায়িত্ব না। আমরা সবাই বিচার চাইতে যাই। আশা করি ন্যায় বিচার হবে।

রায়ে প্রধানবিচারপতির করা মন্তব্যের প্রসঙ্গে টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি আরেকটি ভুল মন্তব্য দিয়েছেন তাঁর রায়ে, যে কেবিনেট সিদ্ধান্ত নেয় পার্লামেন্ট কত দিন চলবে, কখন চলবে। সেটা সম্পূর্ণ ভুল। পার্লামেন্ট কতদিন চলবে এটা নিয়ে কেবিনেটে আমরা কখনোই আলাপ করি না। আসলে পার্লামেন্ট প্র্যাকটিস সম্পর্কে যার এতটুকু সামান্য ধারণা থাকে সে এ ধরনের কথা লিখতে পারে না। পার্লামেন্ট চলে সংবিধান অনুযায়ী। আর সংবিধানের ভিত্তিতে কার্যপ্রণালি বিধি আছে। সে কার্যপ্রণালি বিধিতে কার্য উপদেষ্টা কমিটি আছে। কার্য উপদেষ্টা কমিটির প্রধান হলেন মাননীয় স্পিকার। কার্য উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সংসদের সকল দলের সদস্য। প্রত্যেক পার্লামেন্ট বসার আগে পার্লামেন্টের কী কী বিজনেস, কী কী কার্যক্রম হবে, সেটা উপদেষ্টা কমিটিতে আলোচনা করে ঠিক করা হয়। কখন পার্লামেন্ট বসবে, কতক্ষণ বসবে- সব আলোচনা কমিটিতে হয়। মাননীয় স্পিকার সিদ্ধান্ত নেন। কেবিনেটের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। এ রকম বহু অবান্তর কথা ওই রায়ে দেওয়া আছে। রায়টা আরো ভালো ভাবে পড়ার দরকার। এর প্রতিটি জায়গায় কিন্তু অনেক কথা বলার অবকাশ আছে। সময় মতো অবশ্যই বলব। জাতির সামনে এগুলো তুলে ধরতে হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ