রবিবার, মে ৫, ২০২৪

মসলার বাজার সরগরম

মুসলিমদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা দরজায় কড়া নাড়ছে। ফলে মাংস পাকানোর অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ গরম মসলার বাজার এখন বেশ সরগরম। খাতুনগঞ্জ-মধ্যম চাকতাইয়ের ব্যবসায়ীরা দুহাতেই জিরা, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচি ইত্যাদির বিকিকিনিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দেশে কোনো গরম মসলা উৎপাদন না হওয়ায়, পুরোটাই আমদানি নির্ভর। মধ্যম চাকতাইয়ে সড়কের দুপাশেই সারি সারি মসলার দোকান। প্রত্যেকটি দোকানেই উপচেপড়া সব গরম মসলা সাজানো। এসব দোকানে মালবাহী বড় বড় ট্রাক, পিকআপ, ঠেলা গাড়ি, ভ্যানগাড়িতে করে আরও নতুন নতুন মসলা যুক্ত হচ্ছে। দেশের নানা জায়গা থেকে খুচরা বিক্রেতারা তাদের প্রয়োজনীয় মসলা কিনে নিতে ভিড় করছে দোকানগুলোতে।

গতকাল বিকেলে কথা হয় খাতুনগঞ্জের অন্যতম বৃহৎ মসলা আমদানিকারি প্রতিষ্ঠান শাপলা স্টোরের কর্ণধার সুবিমল দাশের সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘ঝড়-বৃষ্টি-বন্যা যাইহোক বছরের এ সময়টাতে এসে মসলার বাজার বেশ জমে উঠে। এ বছরও তাই তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। অন্যান্য বছর এমন সময় গরম মসলার বাজার বেশ চড়া হয়ে গেলেও এ বছর দাম বেশ সহনশীলই আছে। সুবিমল দাশ, সালাউদ্দিন, নন্দন বড়-য়া, শাখাওয়াত হোসেনসহ আরও বেশ কয়েকজন মসলা ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা গেছে গরম মসলার অনেক আদ্যোপান্ত তথ্য।

তারা জানান, দেশে জিরা আমদানি করা হয় প্রধানত তুরস্ক, সিরিয়া এবং ভারত থেকে। বিশ্বের মোট জিরা উৎপাদনের ৭০ শতাংশই ভারতের দখলে। দারুচিনি আমদানি করা হয় ইন্দোনেশিয়া, চীন এবং ভিয়েতনাম থেকে। লবঙ্গ আমদানি করা হয় ইন্দোনেশিয়া, মাদাগাস্কার ও তানজানিয়া থেকে। বিশ্বের মোট উৎপাদনের ৮০ শতাংশই ইন্দোনেশিয়ার দখলে। এলাচি আমদানি করা হয় গুয়াতেমালা, ভারতের কেরালা ও তামিলনাড়- থেকে। গুয়াতেমালা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এলাচি উৎপাদক দেশ।

গতকাল প্রতিকেজি জিরা বিক্রি হয়েছে দোকানভেদে ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকায়, গত সপ্তাহে যা বিক্রি হয়েছিল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। দারুচিনি বিক্রি হয়েছে ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকায়, গত সপ্তাহে যা ছিল ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে। লবঙ্গ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৫০০ টাকায়, গত সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে। এলাচি বিক্রি হয়েছে ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে, গত সপ্তাহে যা বিক্রি হয়েছিল ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকার মধ্যে। ব্যবসায়ীরা বলছেন এ বৎসর তারা আর গরম মসলার দাম বাড়াবেন না। অবশ্য ব্যবসায়ীদের এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কারণ সম্পর্কে সচেতন মহল বলছেন- এক বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে কোন গরম মসলারই দাম বাড়েনি; বরং কিছু কমেছে। তাই কোন অজুহাতে এদেশীয় ব্যবসায়ীদের দাম বাড়ানোর কোন সুযোগই নেই।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ