রবিবার, মে ৫, ২০২৪
প্রচ্ছদদেশজুড়েযুক্তরাষ্ট্রে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ

যুক্তরাষ্ট্রে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ

us alজাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন সংগঠনের নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এ উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশন এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে পৃথক তিনটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

নিউইযর্কে জ্যাকসন হাইটসে পালকি পার্টি সেন্টারে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আযোজিত ১৫ আগস্ট জাতীয শোক দিবসে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন অনুষ্ঠিত হয। সভায সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুদ্দিন আজাদ। সভা পরিচলনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ , সম্মানিত অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জাহিদ হাসান রাসেল এমপি, এডভোকেট আবু জাহির এমপি, রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আক্তার হোসন. সৈয়দ বশারত আলী, মাহাবুর রহমান, লুৎফর করিম,সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নিজাম চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক আইরিন পারভিন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহাম্মেদ ,মহিউদ্দিন দেওয়ান, আব্দুল হাসিব মামুন,আব্দুর রহিম বাদশা. চন্দন দত্ত, ডা: মাসিদুল হাসান . ড. প্রদীপ কর. আব্দুল জলিল.হাজী এনাম . জাহাংগীর হোসন . মেজবাহ আহাম্মেদ , ফরিদ আলম, মুজাহিদুল ইসলাম .আব্দুল মালেক . তৈয়বুর রহমান টনি ,শাহীন আজমল । নিউইযর্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, সাধারন সম্পাদক ইমদাদ চোধরী .যুক্তরাস্ট্র আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য মেজবাহ আবেদিন,আতাউর গনি , আব্দুল হামিদ , আলী গজনবী,আশরাফ মাসুক , শরিফ কামরুল আলম হিরা,  মহিলা আ: লীগের সভাপতি মমতাজ শাহানাজ , নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন, শেখ আতিক যুবলীগ নেতা সেবুল মিয়া , রহিমুজ্জীমান সুমন, গনেস কির্তনিয়া ,হুমাযন চৌধরী. ,.সেবক লীগের সাওখায়াত বিশ্বাস . সভাপতি নুরজ্জমান সরদার . কবির আলী . গোলাম কিবরিয়া . আনিসুজ্জান সবুজ. শ্রমীক লীগের সাধারন সম্পাদক জুযেল আহাম্মদ. খান শওকত . ছাত্রলীগের জাহিদ হাসান সহ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ও সহ-সভাপতিবৃন্দ মোট ৬৫ জন বক্তব্য রাখেন সভা চলে গভীর রাত পর্যন্ত । এ সমাবেশে সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর সমাগম ঘটে। বক্তারা যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের অবিলম্বে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার জন্য মার্কিন প্রশাসনের আন্তরিকতাপূর্ণ সহায়তা প্রত্যাশা করেন। একইসাথে, এই আমেরিকায় যারা বাংলাদেশ বিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করার কথাও বলেন সকলে। বক্তারা বলেন, সামনের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ যদি পুনরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে না পারে তাহলে গত ৮ বছরের সকল অর্জন ধুলিসাত হয়ে যাবে, আবারো জঙ্গিরাষ্ট্রের কালিমা লেপন করা হবে মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত বাংলাদেশকে। এজন্যে সকলকে সজাগ থাকতে হবে।  সম্মানিত অতিথি হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জাতীয় সংসদ সদস্য জনাব এ্যাড. আবু জহির তার বক্তব্যে বলেন, জাতির জনক ১৯৭১ সালের আগে থেকেই পাকিস্থানী হানাদারদের থেকে মুক্তি লাভে লক্ষ্যে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া দলের সকল নেতাকর্মীকে সাথে ধাপে ধাপে বাঙ্গালী জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন। তাঁর স্বপ্ন ছিলো স্বাধীন একটি বাংলাদেশ। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদেও উদ্দেশ্যে বলেন, জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে যে যেখানে আছেন তাকে সেখান থেকে দলের জন্য কাজ করতে হবে।
আহসান উল্লাহ মাষ্টারের পুত্র জাতীয় সংসদ সদস্য জাহিদ হাসান রাসেল তার বক্তব্যে বলেন, ১৫ই আগষ্ট বাঙ্গালী জাতির জন্য অত্যন্ত বেদনাময় একটি দিন। তিনি বলেন, আমার পিতা আহসান উল্লাহ মাষ্টারকে জামায়ত বিএনপি আর্শিবাদপুষ্টরা বাড়ির সামনে নির্মমভাবে হত্যা করে। আমার বাবাকে হত্যার পরে আমি বুঝতে পেরেছি প্রিয়জন হারানোর ব্যাথা কি। সেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পরিবারের সকল সদস্যকে হারিয়ে কিভাবে স্বাভাবিকভাবে মানুষের কল্যানে কাজ করে যাচ্ছেন বিষয়টি কল্পনাকেও হার মানায়। শেখ হাসিনার বলিষ্ট নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বনেতাদের কাছে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জাহিদ হাসান রাসেল আরও বলেন, জাতির জনকের হত্যাকান্ডের রায় কার্যকর হয়েছে। এখনও যারা দেশের বাইরে পালিয়ে রয়েছে তার অতিসত্বর দেশে ফিরিয়ে তাদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা জরুরী হয়ে পড়েছে। সোনার বাংলায় পাকিস্থান দের কোন স্থান নেই।

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থাযী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমিন তার বক্তব্যে বলেন, আজকে ১৫ই আগষ্ট একটি শোকের দিন। এই দিনে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। জাতি হারিয়েছে তার শ্রেষ্ট সন্তানকে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ আজ অনেকদূর এগিয়ে যেতো। আমরা জাতি হিসেবে বঞ্চিত হয়েছি তার যোগ্য নেতৃত্বে লাভের। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র বলিষ্ট নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সবক্ষেত্রে সফল ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি প্রবাসী বাঙ্গালীদের প্রতি আহ্বান জানান, আপনারা দূরপ্রবাসে থেকেও যেমন দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তাতে করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে । বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে নিতে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, ১৫ই আগষ্ট জাতির জন্য একটি মর্মাহত দিন। এই দিনে আমরা হারিয়েছি বাঙ্গালী জাতির শ্রেষ্ট্র সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ১৯২০ সালের ১৭শে মার্চ যে নেতার জন্ম হয়েছিলো টুঙ্গিপাড়ার অজপাড়া গায়ে সেই নেতার পথনির্দেশনায় ও নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উচুঁ করে দাড়িয়েছি। জাতি হিসেবে আমরা স্বাধীন হয়েছি। তিনি বলেন, যারা ১৯৭১ সালের আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে তারাই দেশ স্বাধীন হওয়ার পর একজোট হয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার নীলনকশা তৈরী করে। এই হত্যাকান্ডে তৎকালিন সময়ে আমরা ৭ কোটি বাঙ্গালী পরাজিত হয়েছিলাম। সেই পরাজয়ের গ্লানি আজও আমাদের বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন পরে ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কণ্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন কিভাবে দেশ ঘুরে দাড়িয়েছে। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে জামায়ত বিএনপি গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে বাংলাদেশকে আবার অন্ধকারে নিমজ্জিত করে। তিনি বলেন, জননেত্রী হাত ধরে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তিনি নেতাকর্মীদের সাবধান করে দিয়ে বলেন, এখন আপনাদের সাবধান হতে হবে। কারণ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কাছে থেকে ক্ষমতা চলে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে দেশে আবার হাওয়া ভবন তৈরী হবে। দেশে ট্রাক ট্রাক অস্ত্র প্রবেশ করবে। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজ আমাদের সকল ভেদাভেদ ভুলে একসাথে কাজ করতে হবে। আমরা আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করতে হবে। কোন ষড়যন্ত্র আমাদের শেখ হাসিনার উন্নয়ন পথ বন্ধ করতে পারবে না। তিনি এসময় সুষ্টূ ও সুন্দরভাবে শোকদিবসের অনুষ্ঠান শেষ করায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়াশীল নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান।

 

আরও পড়ুন

সর্বশেষ