সোমবার, মে ৬, ২০২৪
প্রচ্ছদঅর্থ ও বানিজ্য সময়চট্টগ্রামের ভারী বর্ষণে বেশ বিপাকে পড়েছে চট্টগ্রামের মানুষ, ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি

চট্টগ্রামের ভারী বর্ষণে বেশ বিপাকে পড়েছে চট্টগ্রামের মানুষ, ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি

চট্টগ্রামের ভারী বর্ষণে বেশ বিপাকে পড়েছে এই অঞ্চলের মানুষ। সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩২ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস।  ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরীর জনজীবন। ভোগ্যপণ্যের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ-আসাদগঞ্জের নিচতলার আড়ত ও দোকানে পানি ঢুকে পড়েছে। আসাদগঞ্জ ও খাতুনগঞ্জের প্রধান সড়কের ওপর ছিল হাঁটুপানি। জোয়ারের পানি আটকানোর জন্য সামনে-পেছনে ইট-সিমেন্টের বাঁধ দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। অনেকে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন পানি সেচে। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ  বলেন, আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩২ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আজ রাতে আরও ভারী বর্ষণের শঙ্কা আছে।

তিনি বলেন, এতে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পাহাড় ধস ছাড়াও ভূমি ধসের শঙ্কা রয়েছে। এজন্য আবহাওয়া অফিস থেকে সরকারী অফিসের এই ব্যাপারে সতর্কতা জারি করে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আজ সকাল ৭টা ৩৮ মিনিটে জোয়ার শুরু হয়। বেলা ১টা ২৭ মিনিটে ভাটা শুরু হয় এবং রাত ৮টা ১৪ মিনিটে ফের জোয়ার শুরু হয়েছে। এতে করে নগরের নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে যেতে পারে। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবের কারণে সাগরে বাতাসের তীব্রতা বেশি। তাই চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

থাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগীর আহমদ দাবি করেন, বৃহত্তর খাতুনগঞ্জের নিচতলার প্রায় সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেই পানি ঢুকে গেছে। প্রাথমিক হিসাবে ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পোষানো কঠিন। এদিকে নগরীর আগ্রাবাদ, সিডিএ, এক্সেস রোড, শান্তিবাগ, বেপারিপাড়া, ছোটপুল, হালিশহর, ষোলশহর, প্রবর্তক, বাকলিয়া, চকবাজার, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও সব জায়গাতেই হাঁটু থেকে গলা পানি । এসব এলাকায় অনেকেই সড়কের উপর দিয়ে নৌকায় করে পারাপার হচ্ছেন এমন চিত্র এখন স্বাভাবিক।

এক্সেস রোডে নৌকায় করে বাড়ি ফেরা আজম আহমেদ বলেন, ছোট থেকে শহরেই মানুষ হয়েছি । কখনও গ্রামে গিয়ে নৌকা চড়া হয়নি। কিন্তু এই বছর বেশ কয়েকবার নৌকায় চড়েছি। আমাদের দুঃখ দেখার মানুষ শুধু নির্বাচন আসলেই দেখা যায়। তিনি বলেন, এই এলাকায় বাড়ি বানিয়েছিলেন আমার বাবা। এজন্য অন্য কোনো জায়গায় চলে যেতেও পারছি না।

এদিকে দেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ-আসাদগঞ্জে দোকানের ভেতরে পানি ঢুকে গেছে। এতে করে এই বাজারগুলোর নিচতলার আড়ত ও দোকানে পানি ঢুকে পড়েছে। আসাদগঞ্জ ও খাতুনগঞ্জের প্রধান সড়কের ওপর ছিল হাঁটুপানি। জোয়ারের পানি আটকানোর জন্য সামনে-পেছনে ইট-সিমেন্টের বাঁধ দিলেও শেষ রক্ষা হয়নি। অনেকে সারাদিন দোকানের মালামাল বাঁচাতে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন দোকানের পানি বাইরে বের করতে।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জামাল হোসেন বলেন, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাই বাণিজ্যিক এলাকায় আজকের পানির উচ্চতা গতকালের মতই ছিল। কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, যেহেতু পানি উঠানামা করছে সেহেতু ক্ষতির পরিমাণ সেই ভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। প্রতিবছর দেখছি পানির উচ্চতা বাড়ছে। এইভাবে চলতে থাকলে এখানে দীর্ঘদিন বাবসা বাণিজ্য করা সম্ভব হবে না।

খাতুনগঞ্জের পেয়াজ, রসুনের আড়তদার সাইফুল আলম বলেন, আমার ২ টি গুদামে পানি উঠে গেছে। অন্য স্থানে সরিয়ে রাখবো সেটাও পারছিনা। পানি বেশী থাকায় পেয়াজ, রসুন ও আদাতে পচন ধরে যাচ্ছে। একেতো বাজারে ক্রেতা নেই বললেই চলে।এ ক্ষতি পোষাবো কীভাবে বুঝতে পারছি না।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ