গুলশান হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যায়ের সাবেক শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজা করিমের (হাসনাত করিম) জামিন আবেদন ফের নাকচ করেছে ঢাকার জজ আদালত। মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে জামিন আবেদনের শুনানির পর বুধবার তা নাকচ হয়। হাসনাত করিমের আইনজীবী আব্দুল মান্নান খান জামিন আবেদনটি করেছিলেন। মামলার এজাহারে হাসনাত করিমের নাম না থাকার বিষয়টি শুনানিতে তুলে ধরেন তার এই আইনজীবী। শুনানিতে মান্নান খান বলেন, “অন্য কোনো আসামি কোনো জবানবন্দিতে তার নাম বলেন নি। মোবাইল কললিস্টে তার সম্পৃক্ততার কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি। নর্থসাউথ থেকে আগেই তিনি পদত্যাগ করেছিলেন। তিনি শান্তিপ্রিয়; কুচক্রীমহল তাকে জড়িয়েছে। এছাড়া তিনি কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন।
অন্যদিকে জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষে পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী কমিশনার নাজিম উদ্দিন বলেন, “এটি হলি আর্টিজানের মামলা, এই মামলায় সে জড়িত। অভিযোগপত্রে তার নাম আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আর একটি বিষয়- আসামির বয়স বিবেচনায় এতগুলো অসুখ একসাথে থাকার কথা নয়। উভয় পক্ষের বক্তব্য শেষে জামিন আবেদন নাকচ করে দেন বিচারক। ওকালতনামায় আইনজীবী শাহদীন মালিকের নাম থাকলেও তিনি শুনানিতে ছিলেন না। আসামি হাসনাত করিমকেও আদালতে আনা হয় নি। গত বছরের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জন নিহত হন। পরদিন সকালে সেনা কমান্ডোদের অপারেশন থান্ডারবোল্টের ঠিক আগে সেখান থেকে উদ্ধার হয় ১৩ জন। পুলিশের হিসাবে, সকালের এই ১৩ জনসহ হামলার পর বিদেশি নাগরিক ও হোটেল কর্মচারীসহ মোট ৩২ জন জীবিত উদ্ধার পাওয়া যায়।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ সবাইকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বললেও হাসনাত করিম এবং কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তাহমিদ হাসিব খান বাসায় ফেরেননি বলে তাদের পরিবার জানায়। এরপর গতবছর ৩ অগাস্ট তাদের দুজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারের কথা জানায় পুলিশ। এর মধ্যে তাহমিদকে সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হলেও হাসনাতকে গুলশান হামলার মূল মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। হলি আর্টিজানে হামলার পরদিন ভোরে পাশের ভবন থেকে ধারণ করা একটি ভিডিও প্রকাশ পেলে হাসনাতের সঙ্গ জঙ্গিদের সম্পৃক্ততার সন্দেহ জোরালো হয়ে ওঠে। ওই ভিডিওতে অস্ত্র হাতে তাহমিদকেও দেখা গিয়েছিল এক জঙ্গির সঙ্গে।