শনিবার, মে ১৮, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনআধুনিকতা ও উন্নয়নের পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ

আধুনিকতা ও উন্নয়নের পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ

নৌবাহিনীতে দু’টি সাবমেরিন যোগ হওয়ায় ‍আধুনিকতা ও উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১২ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রামের নেভাল বার্থে আধুনিক দুই সাবমেরিন (ডুবো যুদ্ধজাহাজ) ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’র কমিশনিংকালে এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। এই দিনটি শুধু বাংলাদেশ নৌবাহিনী বা সশস্ত্র বাহিনীর জন্য নয়, সমগ্র বাংলাদেশের জন্য এটি এক বিশেষ দিন। স্বাধীনতার এই মাসে আমাদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন সাবমেরিন বাংলাদেশের নৌবাহিনীতে যুক্ত হলো। একটি আধুনিক ও শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পথে বাংলাদেশ আরো একধাপ এগিয়ে গেল। পৃথিবীর মাত্র গু’টিকয় দেশ সাবমেরিন পরিচালনা করে থাকে। সেই তালিকায় যুক্ত হলো বাংলাদেশের নাম। এটি জাতি হিসেব আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই নৌবাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী  হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহ এবং বিদ্যমান জাহাজগুলোর অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধির বহুমুখি উদ্যোগ নিয়ে চলেছে। এ সময় সাবমেরিন দু’টির আধুনিকায়ন, ক্রুদের প্রশিক্ষণ ও হস্তান্তর-পরবর্তী কারিগরি সহায়তার জন্য চীন সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ ‍জানান প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীর রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবমেরিন দু’টিকে বাহিনীতে কমিশনিং করেন। নবযাত্রা অধিনায়ক কমান্ডার কে এম মামুনুর রশিদ ও জয়যাত্রা অধিনায়ক লে. কমান্ডার মাজহারুল ইসলামের হাতে কমিশনিং ফরমান তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।  নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী সাবমেরিন দু’টির নামফলকও উন্মোচন করেন তিনি।

কমিশনিংকালে ত্রিমাত্রিক সক্ষমতা অর্জনের পরিচিতি‍মূলক মহড়া দেয় বানৌজা বঙ্গবন্ধু, নেভাল এভিয়েশনের দু’টি হেলিকপ্টার, দু’টি এমপিএ ও একটি দক্ষ কমান্ডো দল। তারপর প্রধানমন্ত্রী ‘বিএনএস শেখ হাসিনা’ নামে একটি পূর্ণাঙ্গ ঘাঁটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ‘বিএনএস শেখ হাসিনা’ কার্যত বাংলাদেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলো। এর ফলে বিশাল জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়লো। পাশাপাশি তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ব্লকগুলোতে নিরাপত্তাসহ সার্বিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাবমেরিন দু’টি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। সাবমেরিনের কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা এবং সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার সকাল ১১টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রামের ঈশা খাঁ ঘাঁটিতে অবতরণ করে। বিকেল সাড়ে তিনটায় পতেঙ্গায় বোট ক্লাবে ওয়াসার নতুন একটি পানিশোধন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। বোট ক্লাব থেকে আবারও ঈশা খাঁ ঘাঁটিতে ফিরে হেলিকপ্টারে ঢাকার উদ্দেশ্যে উড়বেন তিনি।

নৌবাহিনীর জন্য এক হাজার ৫৬৯ কোটি টাকায় দুটি সাবমেরিন কেনার জন্য চীনের সঙ্গে ২০১৪ সালে চুক্তি করে বাংলাদেশ।  ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর সাবমেরিন দুটি চীনের দালিয়ান প্রদেশের লিয়াওয়ান শিপইয়ার্ডে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।  সী ট্রায়ালের পর চীন ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিকদের তত্ত্বাবধানে ২২ ডিসেম্বর সাবমেরিন দুটি বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সূত্রে জানা গেছে, সাবমেরিন দুটির প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৭৬ মিটার ও প্রস্থ সাড়ে ৭ মিটার।   টর্পেডো ও মাইনে সুসজ্জিত সাবমেরিনগুলো শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও ডুবো জাহাজে আক্রমণ চালাতে সক্ষম। পূর্ণ ধারণক্ষমতা নিয়ে এগুলোর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭ নটিক্যাল মাইল।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ