শুক্রবার, মে ১৭, ২০২৪
প্রচ্ছদআরো খবর......নিজেদের মধ্যে বিভক্তির কারণে সাংবাদিক হত্যার বিচার পাচ্ছি না

নিজেদের মধ্যে বিভক্তির কারণে সাংবাদিক হত্যার বিচার পাচ্ছি না

নিজেদের মধ্যে বিভক্তির কারণে রাষ্ট্রের কাছে সাংবাদিক হত্যার বিচার পাচ্ছি না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সাগর-রুণি হত্যাকাণ্ডের পর আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলাম। দেশের সব সাংবাদিক ইউনিয়নকে এক করার জন্য একটা খসড়াও তৈরি করি। কিন্তু খসড়াটি চূড়ান্ত করার দিন আমাদের প্রতিপক্ষ কিছু সাংবাদিক আসলো না। ফলে আন্দোলন তার গতি পেল না। আমাদের মধ্যে বিভক্তির কারণে রাষ্ট্রের কাছে আমরা সাংবাদিক হত্যার বিচার পাচ্ছি না। বিভক্ত থেকে মর্যাদা সংগ্রামকে কিংবা আন্দোলনকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব না। ’

২৮ মে দুপুর ১টায় প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে ‘সাংবাদিকদের মর্যাদা, শ্রম আন্দোলন এবং গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।  চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) আয়োজনে সভার উদ্বোধন করেন খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকদের মর্যাদা সুপ্রতিষ্ঠিত হবে তখনি, যখন সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে। পাশাপাশি এর জন্য দেশের গণতান্ত্রিক অবস্থাও বিরাজমান থাকতে হবে। সাংবাদিকদের সেই লক্ষ্যেই কাজ করতে হবে। ইলেকট্রনিকস মিডিয়ার সাংবাদিকদেরও ওয়েজ বোর্ডের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের ৯ম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নে খুবই সংবেদনশীল। তিনি গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চান না। গণমাধ্যমকে শৃঙ্খলবদ্ধ করতে চান না। গণমাধ্যমের বিকাশকে সংরক্ষণ করতে চান তিনি।’

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকদের মর্যাদা রক্ষা ও অধিকার দিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে সংবাদপত্র আইন করেছিলেন।  কিন্তু ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত নিয়ন্ত্রিত সরকার রাতের আধারে আমাদের সঙ্গে কোনো কথা না বলে সাংবাদিকদের শ্রম আইনের অধীনে নিয়ে যায়। যার ফলে সাংবাদিকরা শ্রমিকে পরিণত হলো। বর্তমান সরকার পুনরায় ১৯৭৪ সালের আইনে ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে।

নিজেদের মর্যাদা রক্ষায় সাংবাদিকরা সচেতন নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে যখন একজন শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করা হয়েছে, সাংবাদিকরা লেখনির মাধ্যমে তার প্রতিবাদ করেছে। এক এগারোর সময় যখন রাজনীতিবিদদের মর্যাদাহানি করা হচ্ছিল তখনও তারা আন্দোলন করেছিল। একই সময়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর আঘাত আসলে তখনও তারা আন্দোলন করেছিল। কিন্তু নিজেদের অধিকার রক্ষায় আমরা সচেতন নই। সভার উদ্বোধক ড. অনুপম সেন বলেন, ‘পাকিস্তান শাসনামল থেকে এদেশের সাংবাদিকরা অসাধারণ সংগ্রাম করেছেন, তা এখনও করে চলেছেন। পাকিস্তান শাসনামলে গণতন্ত্র ছিল না। দীর্ঘসময় আমরা সেনা শাসনে ছিলাম। ওই সময়টাতে সাংবাদিকরা মানুষের গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে নিরবিচ্ছিন্ন আন্দোলন করেছিলেন। আন্দোলন করতে গিয়ে জেলে গেছেন, হামলার শিকার হয়েছেন-এসবের তুলনা হয় না। এখনও নিত্য হুমকি-ধমকির মধ্যে মানুষের অধিকারের কথা বলে যাচ্ছেন তারা।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএফইউজে সহ-সভাপতি শহীদ উল আলম বলেন, ‘সংবাদপত্র এখন বিজ্ঞাপনপত্রে পরিণত হয়েছে। আমরা কারও লেজুড়বৃত্তি করবো না। অষ্টম ওয়েজ বোর্ডে যে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে তা নবম ওয়েজ বোর্ডে থাকলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

সিইউজে সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন রূপালী ব্যংকের পরিচালক ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার, সিইউজের সাবেক সভাপতি অঞ্জন কুমার সেন, এম নাসিরুল হক, প্রতিনিধি ইউনিট প্রধান সমীর কান্তি বড়ুয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন সিইউজে সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী।

সিইউজের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বরূপ ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কমিটির আহ্বায়ক ড. সেকান্দর চৌধুরী, জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নিয়াজ মোরশেদ এলিট।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ