চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে রাষ্ট্রায়ত্ত একটি কারখানার প্রায় এক’শ কোটি টাকা দামের জমি মাত্র ১৭ কোটি টাকায় খ্যাতনামা শিল্প প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমিটি কেনাবেচার ক্ষেত্রে বড় ধরনের অনিয়ম ও জালিয়াতি হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমিটি পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ক্যারোলিন সিল্ক মিল নামে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানার। শ্রমিক-কর্মচারিদের কাছে হস্তান্তর করা জমিটি পানির দরে বিক্রি করে দেয়ার বিষয়টি জানতে পেরে এখন মন্ত্রণালয় বিষয়টি তদন্ত করছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জমিটি ফেরত নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসআরএম’র নির্বাহী পরিচালক তপন সেনগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাইবাছাই করে সম্পূর্ণ আইনানুগভাবেই জমি কেনা হয়েছে। আমরা কারখানা কিনিনি, শুধুমাত্র জমি কিনেছি। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের আইন লঙ্ঘন হয়নি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের ফৌজদারহাটে ২.৬৯ একর জমির ওপর ক্যারোলিন সিল্ক মিল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু অব্যাহত লোকসানের মুখে সরকার ২০১০ সালে সেটি শ্রমিক-কর্মচারীদের কাছে বিনা মূল্যে হস্তান্তর করে। চুক্তির শর্ত ছিল, মিলটি বা মিলের হস্তান্তরযোগ্য-অযোগ্য কোনো সম্পদ বিক্রি করা যাবে না।
কিন্তু সম্প্রতি মিলের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসাহাক (শ্রমিক নেতা) বিএসআরএম’র কাছে ১৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা দামে মিলের পুরো জমি বিক্রি করে দেন। স্থানীয়দের দাবি, বর্তমানে ফৌজদারহাট এলাকায় ওই জমির বাজারমূল্য প্রায় এক’শ কোটি টাকা। অনিয়মের মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকার জমি পানির দরে পেয়েছে বিএসআরএম। অভিযোগ পাওয়া গেছে, কেনার পর বিএসআরএম জমিটির দখলও নিয়েছে। তারা সিসিটিভি ক্যামেরায় কারখানার পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছে। এদিকে মিলের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসহাকের বিরুদ্ধে অন্যান্য পরিচালকদের স্বাক্ষর জাল করে জমি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এজন্য ৩৫ জন পরিচালক মিলে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। সূত্র জানায়, কারখানায় সরকারের মালিকানা শেয়ারও আছে। বিএসআরএম জমি কিনেছে মোহাম্মদ ইসহাকের কাছ থেকে। ইসহাকের সরকরি শেয়ারসহ জমি বিক্রির বৈধতা আছে কিনা তা কেনার সময় বিএসআরএম যাচাই করে দেখেনি।