শনিবার, মে ৪, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনকর ফাঁকির অভিযোগে স্ত্রী-পুত্রসহ সুপার রিফাইনারির এমডির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

কর ফাঁকির অভিযোগে স্ত্রী-পুত্রসহ সুপার রিফাইনারির এমডির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগে এলিট গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সুপার রিফাইনারি প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আহমেদ ও তার স্ত্রী-পুত্রের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)। সোমবার দুপুরে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানায় মামলা তিনটি (নম্বর ৩০,৩১,৩২) দায়ের করেন দুদকের উপ পরিচালক (বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত-২) মির্জা জাহিদুল আলম। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে পৃথক এ তিনটি মামলার অনুমোদন দেয় কমিশন।

তিন মামলার মধ্যে দু’টিতে সেলিম আহমেদ ও তার স্ত্রী লুৎফুন্নেছা আহমেদ এবং অপরটিতে তাদের সন্তান সাজির আহমেদকে আসামি করা হয়েছে।  লুৎফুন্নেছা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এবং সাজির প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক। মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে কনডেনসেট (গাদ জ্বালানি ) বিক্রি করে সরকারের প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলা তিনটি বায়েজিদ বোস্তামি থানায় রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান উপ পরিদর্শক(এসআই) মানষ বড়ুয়া।

দুদক সূত্র জানায়, সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী জ্বালানি তেলের কাঁচামাল পরিশোধন করে সরকার নির্ধারিত পাঁচ শতাংশের বেশি অপচয় দেখিয়ে একদিকে ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া হয়েছে অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও খোলাবাজারে জ্বালানি তেল বিক্রি করা হয়।  গত ২০০৭-০৮ অর্থবছর থেকে ২০০৯-১০ অর্থবছর পর্যন্ত তিন বছরে মোট ৩ কোটি ৬০ লাখ ৬৫ হাজার ৫৭৪ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া হয়। দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা পরস্পরের যোগসাজশে সরকারের সঙ্গে বিশ্বাস ভঙ্গ করে অসাধু মনোভাব নিয়ে ওই পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে সরকারের আর্থিক ক্ষতি করেছেন।

জানা গেছে, সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বিদেশ থেকে জ্বালানি তেলের কাঁচামাল আমদানি করে তা পরিশোধন করে সরকারের জ্বালানি তেল বিক্রয় কোম্পানিগুলোর কাছে বিক্রি করার কথা ছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নিয়ম হচ্ছে, পরিশোধনের ক্ষেত্রে পাঁচ শতাংশের বেশি অপচয় দেখানো যাবে না। এ ক্ষেত্রে অযৌক্তিকভাবে পাঁচ শতাংশের বেশি অপচয় দেখিয়ে অতিরিক্ত অপচয়ের অংশের পরিশোধিত তেল খোলা বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। এ অতিরিক্ত তেলের নির্ধারিত ভ্যাটও ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। অনুসন্ধানে ভ্যাট ফাঁকির তথ্য-প্রমাণ মিলেছে দাবি দুদকের। পরে মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

দুদকের অনুসন্ধান থেকে জানা গেছে, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৩২৫ লিটার কনডেনসেট (গাদ জ্বালানি) পরিশোধনের ক্ষেত্রে ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ২৯০ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আত্মসাৎ করা হয়। এ পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে সুপার রিফাইনারির এমডি সেলিম আহমেদ এবং কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সেলিম আহমেদের স্ত্রী লুৎফুন্নেছা আহমেদকে আসামি করা হয়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৩৬ লাখ ২৭ হাজার ৯৫০ লিটার কনডেনসেট পরিশোধনে ২ কোটি ১৭ লাখ ৭৫ হাজার ৩১৮ টাকার ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে কোম্পানির এমডি ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করা হয়।

একইভাবে ২০০৯-১০ অর্থবছরে ২২ লাখ ৯৩ হাজার ৭৯৯ লিটার কনডেনসেট পরিশোধনের ক্ষেত্রে ১ কোটি ২৬ লাখ ৩ হাজার ৯৬৬ টাকার ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে কোম্পানির এমডি সেলিম আহমেদ, চেয়ারম্যান লুৎফুন্নেছা আহমেদ ও কোম্পানির পরিচালক সেলিম আহমেদের ছেলে সাজির আহমেদকে অন্য আরেকটি মামলায় আসামি করা হয়েছে।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ