রবিবার, জানুয়ারি ১৯, ২০২৫
প্রচ্ছদজাতীয়রমজান আসতে না আসতেই বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

রমজান আসতে না আসতেই বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

ষ্টাফরিপোর্টার (বিডিসময়২৪ডটকম)

রমজান আসতে না আসতেই বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ার কারণে খুচরাতেও দাম বেড়েছে বলে দাবি খুচরা ব্যবসায়ীদের। আসন্ন রমজান ও বন্যার কারণে ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আর এর প্রভাবও পড়েছে দেশীয় বাজারে। এমন মন্তব্য আমদানীকারকসহ ব্যবসায়ীদের।

অপরদিকে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে। ১৭ জুন দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ১৭ থেকে ১৮ টাকা থাকলেও ২১ জুন এ পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ২৮ থেকে ৩০ হয়। অথচ এ বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি রয়েছে আগের মতো স্বাভাবিক। জেলা শহরের বাহাদুর বাজারে ভালো পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৩২ টাকায় বিক্রি হয়েছিলো।

দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে পাইকারী বিক্রেতা মামুন খন্দকার ডিনিউজবিডিকে জানান, মোকামে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই খুচরো বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।

সাধারণ ক্রেতা আজম মোস্তাফিজ ডিনিউজবিডিকে জানালেন, জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে এক কেজি পেঁয়াজ কিনেছি ২০ টাকায়। তা ২১ জুনে ৩২ টাকায় কিনতে হয়েছিলো। ৭ জুলাই তা কিনতে হয়েছে ৪৮ টাকায়। এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে ২৬ টাকা বাড়ায় আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সোমবার ঢাকার বাজারগুলোতে আমদানি করা পেঁয়াজের প্রতি কেজির দাম ছিল ৪৬ থেকে ৫০ টাকা। খুচরা ব্যবসায়িদের দাবি পাইকারি ব্যবসায়িরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে বলে খুচরা বাজারে বেশি দাম। জুনের শুরুতে ২৬ টাকা দামের পেঁয়াজ বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৪৬ টাকা থেকে ৫০ টাকা। তবে ৮ জুনেও বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা বেড়ে ২৮ টাকা হয়েছিলো।


খুচরা ব্যবসায়ী আসাদ মোসাদ্দেক ডিনিউজবিডিকে বলেন, আমাদের যেভাবে কেনা, সেভাবে বেচা। কেজিপ্রতি দু’ এক টাকা লাভ হয়। খুচরা ব্যবসায়ীরা পণ্যের দামে কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। বরং দাম কমলে খুচরা ব্যবসায়ীদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি বাজারে দাম বাড়ার দোহাই দিলেও পাইকারি ব্যবসায়ীরা এই অভিযোগ নাকচ করে দিলেন। ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র হিসাব অনুযায়ী দুমাসের ব্যবধানে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ আর বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ২৫ শতাংশ।

এদিকে গত ১৫ দিন পাইকারিতে দাম বাড়েনি বলে জানান পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

কাস্টমসের সহকারি কমিশনার হুমায়ুর আখতার জুনের শেষ দিকে জানালেন, পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে। জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে বন্দর দিয়ে ৪ হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি হলেও তৃতীয় সপ্তাহে আমদানি হয়েছে ৩ হাজার ১৪৭ মেট্রিকটন।

আর রমজান আসার আগেই পেঁয়াজের দাম এত বেশি হওয়ার যৌক্তিক কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। যেখানে কলকাতার বাজারে বাংলাদেশি মুদ্রায় পেঁয়াজের দাম ৩৫ টাকা। আর পেঁয়াজ আমদানির ওপর কোনো ধরনের শুল্ক বা কর না থাকার পরও দেশের খুচরা বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কোনোমতেই ৪০ টাকার বেশি হওয়ার কারণ দেখছে না বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।


এ অবস্থায় পেঁয়াজের সর্বোচ্চ পাইকারি ও খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সরকারি বিক্রয় সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী এক সপ্তাহ আগে এর দাম ছিল সর্বোচ্চ ৩২ টাকা। আর এক মাস আগে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের খুচরা মূল্য ছিল ২৬ থেকে ২৮ টাকা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২১ লাখ টন এবং রমজানে ২ লাখ ২০ হাজার টন। দেশে উৎপাদন হয়েছে ১৯ লাখ ১৪ হাজার টন এবং আমদানি হয়েছে ৪ লাখ ৬৫ হাজার টন। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি থাকলেও দাম বেড়েই চলছে।

জানা গেছে, দেশের পাবনা, ঈশ্বরদী, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, মেহেরপুর জেলায় বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ উত্পাদন হয়। ওই সব জেলার অনেকেই পণ্যটি তাদের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী মজুদ রেখেছেন।

আমদানিকারকরা জানান, পণ্য মজুদ-সংক্রান্ত দেশে কোনো আইন না থাকায় যে যার মতো মজুদ করছেন।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের রমজান মাসে পেঁয়াজ ৩২ টাকা থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ