ক্রিকেটের ছোট ফরম্যাটে তিনি ভয়ংকর! ‘আসল’ লড়াই টেস্টে অভিষিক্ত হওয়ার দিনেও যে তিনি ঝড় তুলবেন, সেটা আর কয়জন ভেবেছিলেন? কিন্তু চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম সাক্ষী মুস্তাফিজুর রহমানের ঝড় তোলা অভিষেকের। চা বিরতির পর বোলিংয়ে এসে এক ওভারেই তিনটি উইকেট তুলে নিয়ে এই তরুণ-বোলিং তারকা জানান দিলেন টি-টোয়েন্টি কিংবা ওয়ানডের মতো টেস্টেও তিনি একই রকম ভয়ংকর। পরপর দুই বলে হাশিম আমলা আর জেপি ডুমিনিকে তুলে নেওয়ার পর এক বল বিরতি দিয়ে তিনি ফেরালেন কুইন্টন ডি কককে। মুস্তাফিজের অনন্য বোলিং নৈপুণ্যে দ্রুত ছয় উইকেট হারিয়ে এই মুহূর্তে বিপর্যয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। এর অাগে, ডিন এলগার আর ফ্যাফ ডু প্লেসির জুটিটি চোখ রাঙাচ্ছিল বাংলাদেশকে। ৭৮ রানের জুটি ইঙ্গিত দিচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহকে স্ফীত করে তোলার। খুব দ্রুতলয়ে না হলেও ধীর-স্থির ব্যাটিংয়ে অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকেই এগোচ্ছিলেন এই দুই ব্যাটসম্যান, কিন্তু তাইজুল ইসলাম আর সাকিব আল হাসানের জোড়া আঘাত এ যাত্রায় স্বস্তি দিয়েছে বাংলাদেশকে। ১৩৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় উইকেট নেই ওই ১৩৬-এই।
তাইজুলের বলে প্রথমে ফেরেন এলগার। অফ স্টাম্পের বাইরের বলটি কাট করতে গিয়ে তিনি ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় লিটনের ক্যাচটি কিন্তু হয়েছে দুর্দান্তই। তাইজুলের পরের ওভারের প্রথম বলেই আবার আঘাত হানেন সাকিব। টেস্টে নিজের ১৪৭ তম উইকেটটি তিনি তুলে নেন ডু প্লেসিকে এলবি’র ফাঁদে ফেলে। এর আগে, এলগার-প্লেসি জুটির চোয়ালবদ্ধ লড়াই হতাশাই ছড়িয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ শিবিরে। মোহাম্মদ শহীদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম, জুবায়ের হোসেন—ভালো বল করেছেন প্রায় সবাই। শহীদ তাঁর তৃতীয় স্পেলে টানা ছয়টি মেডেন দেন। মুস্তাফিজুরও একইভাবে সমীহ আদায় করে নিচ্ছিলেন। জুবায়ের, তাইজুল নিজেদের অস্ত্রগুলো ব্যবহার করেও হতাশায় পুড়ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিন বলের ব্যবধানে এলগার ও প্লেসির বিদায় তাই ছিল দারুণ স্বস্তিদায়ক। এলগার ফিরেছেন ৪৭ রান করে। ১১১ বলের এই ইনিংসে চারের মার মাত্র তিনটি। ডু প্লেসি ১২২ বল খেলে, পাঁচটি চার মেরে করেন ৪৮।