ষ্টাফরিপোর্টার (বিডিসময়২৪ডটকম)
সিটি কর্পোরেশন হলেও বাস্তবে জাতীয় নির্বাচনের আমেজ নিয়েই শনিবার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে। গত ১৫ জুলাই দেশের চারটি সিটি করপোরেশনে পরাজিত হয়ে সরকার গাজীপুরে সর্বশক্তি নিয়োগ করায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেশ জমে উঠেছে। অন্যদিকে ‘৯১ সালের পর বিএনপি গাজীপুরে আওয়ামী লীগের দুর্গে হানা দিয়ে সিটি করপোরেশন দখলের চমক দেখাতে মরন পণ লড়াইয়ে নেমেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের রূপ নিয়েছে। শনিবার ছুটির দিন থাকায় দেশবাসীর দৃষ্টি থাকবে গাজীপুরে।
দুটি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন পরিষদের ৩২৯ দশমিক ৯০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত দেশের ১১তম সিটি করপোরেশন গাজীপরের নগর পিতা নির্বাচন শনিবার। নির্বাচনে ১৮ দলীয় জোট প্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান টেলিভিশন এবং ১৪ দলীয় প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান তালা চাবি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদে ৭জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও আওয়ামী লীগের জাহাঙ্গীর আলম ও নেজামে ইসলাম পার্টির মাওলানা রফিকুল ইসলাম ইতোমধ্যে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তবে নির্বাচন থেকে সরে গিয়েও হেভিওয়েট হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের আনারস প্রতীক থেকে যাচ্ছে ব্যালটে। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থীর সংখ্যা ৭ জন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মোঃ আজমত উল্লাহ খান (দোয়াত-কলম), বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী অধ্যাপক এমএ মান্নান (টেলিভিশন), আমান উল্লাহ (তালা), ডা. নাজিম উদ্দিন আহমেদ (ঘোড়া), মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (আনারস), মোঃ মেজবাহ উদ্দিন সরকার রুবেল (হাঁস) এবং রিনা সুলতানা (প্রজাপতি)।
নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নির্বাচনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে ৫ হাজার পুলিশ সদস্য, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ১২ প্লাটুন সদস্য, ৮৪৭ জন র্যাব ও আনসার সদস্যসহ ১১ হাজার সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে র্যাবের ডগ স্কোয়াড ও হেলিকপ্টার টহল ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ভোট গ্রহণের জন্য যাবতীয় সরঞ্জাম ভোট কেন্দ্রগুলোতে আগেই পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সংশ্লিষ্ট ভোট কেন্দ্রে অবস্থান গ্রহণ করেন।
বিলুপ্ত টঙ্গী পৌরসভা মিলে ৫৬টি ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১০ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৮ জন। নির্বাচনে মেয়র পদে ৭জন এবং সংরক্ষিত মহিলাসহ কাউন্সিলর পদে ৪৫৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৫৭টি ওয়ার্ডে ৪৫৬ জন ও ১৯টি সংরক্ষিত (নারী) কাউন্সিলর পদে ১২৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ২৭ হাজার ৭৭৭ জন ও মহিলা ভোটার ৪ লাখ ৯৯ হাজার ১৬২ জন। এতে ভোট কেন্দ্র ৩৯২টি, যার মধ্যে ২টি অস্থায়ী কেন্দ্র। নির্বাচনে ৩৯২টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৩৫টিই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নির্বাচনে ৭ হাজার ২৫৯ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৩৯২ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ২ হাজার ২৮৯ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ৪ হাজার ৫৭৮ জন পোলিং কর্মকর্তা।
রিটার্নিং অফিসার মোঃ মতিয়ার রহমান জানিয়েছেন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।