শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
প্রচ্ছদরাজনীতিআর্ন্তজাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র হিসেবে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে...

আর্ন্তজাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র হিসেবে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে

আর্ন্তজাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র হিসেবে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ওনার (খালেদা জিয়া) আন্দোলন ও রাজনীতির পরাজয়ের গ্লানি ঢাকতে উনি সিটি করপোরেশন ইলেকশনে তিন ঘণ্টা ভোট হওয়ার পরই নির্বাচন বর্জন করে নাটক সাজালেন। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, কি আর্ন্তজাতিক চাপ দিয়ে উনি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবেন? কোনো অপরাধ আমরা করি নাই যে, আর্ন্তজাতিক চাপের কাছে মাথা নত করতে হবে।’ রোববার  রাতে গণভবনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আজম নাছির ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের তো ইচ্ছে ছিলো, দুই/চারটা মানুষ খুন করে, বোমা-টোমা মেরে ওই অজুহাতে নির্বাচন থেকে সরে যাবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অত্যন্ত সক্রিয় ও সজাগ ছিলো বলেই হয়তো তারা মানুষের জীবন নিয়ে খেলতে পারেনি।’

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি তাদের পরিকল্পনা মতো সরে গেছে। তারা যে সরে যাবে এটাতো তাদের বক্তব্যই আছে, রেকর্ডই আছে।’ ‘ইলেকশনে আসাটাও যে একটা নাটক তাদের। কারণ আগেই ইলেকশন থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল তাদের। তারা আমাদের দুটো বদনাম দিতে চেয়েছিল। ইলেকশন ঠিক মতো হচ্ছে না, ইত্যাদি, ইত্যাদি।’ খালেদা জিয়াকে কেউ বিশ্বাস করে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওনার জালিয়াতির চেহারা সবাই জানে। উনি যাদের ওপর ভরসা করেন তারা সবাই তা জানে। ওনাকে বিশ্বাস করবে কে?’ তিনি বলেন, ‘আমি একটা কথা বলবো এ সমস্ত চালবাজি, জালিয়াতি করবেন না। সব জায়গায় কাঁদলেই হবে না। মিথ্যা অপপ্রচার করলেই হবে না। আর এমন কোনো দুর্বলতা আমাদের নেই যে কেউ এসে বলবে আর সেই চাপে মাথা নত করবে, শেখ হাসিনা তা করবে না। ওনার সে অভ্যাস আছে।’

নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভালোভাবে ভোট চলছে। কোনো সমস্যা নাই, কোন গন্ডগোল নাই। … কোথায়  কি ঘটলো যে তাদের নির্বাচন থেকে সরে যেতে হলো। কেন? নানা রকম অভিযোগ। কিন্তু সে অভিযোগের একটাও তারা প্রমাণ করতে পারে নাই।’ বিগত বিএনপি সরকারের আমলে বিভিন্ন নির্বাচনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, নিজেরা যেভাবে পেরেছে চুরি করেছে। নিজেরা চোর বলেই অন্যকেও চোর ভাবে। তাদের সমস্যা এখানেই।

নির্বাচন কমিশনের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মিলে ২ হাজার ৭০০ ভোট কেন্দ্র। সেখানে ঢাকায় দু’টি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ হয়েছে। এক বা দেড় শতাংশ ভোটে সমস্যা। এর বেশি তো না। আবার ইলেকশন কমিশনতো ৪/৫ শতাংশ ভোট বাতিলই করে দিয়েছে। এতো ভোট বাতিল কোনো দিন হয় নাই। তার মানে কি? যেখানে যেখানে সমস্যা হয়েছে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিয়েছে। কাউকে তারা ছাড় দেয়নি।’ পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনে কারচুপি ও গণ্ডগোলের ছবি তোলা হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু কিছু ছবি আছে, আপনারা ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখবেন, গোলমাল হচ্ছে, ব্যালটে সিল হচ্ছে। চেহারা দেখা যায় না, কিছুই দেখা যায় না। মনে হয় যেন ক্যামেরাটা ধরে রেখে দিয়েছে ওই ছবিটুকু তোলার জন্য। ওই ছবি তোলার জন্যই ঘটনাটা ঘটানো হয়েছে। এসবের উদ্দেশ্য নির্বাচনটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।’

সহিংসতার জন্য খালেদা জিয়ার বিচারের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যিনি হুকুম দিয়ে মানুষ হত্যা করেছেন। তার বিচার না হলে দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা থাকবে না। তার বিচার মানুষের দাবি। বিএনপি জোটের হরতাল-অবরোধের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবদিক থেকে বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন জ্বালাও পোড়াও করা হচ্ছে । বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করাই খালেদা জিয়ার একমাত্র কাজ।’

গণভবনের চট্টগ্রামের নতুন মেয়রের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শুভেচ্ছা জানিয়ে চট্টগ্রামের মেয়রের হাতের ফুলের তোড়া তুলে দেন। এ সময় মেয়রও প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে তার হাতে ফুলের তোড়া তুলেন। চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি আগামীতে এ সমস্যাগুলো থাকবে না।’ নতুন মেয়র কাজের মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসীর আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে বলেও প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ