শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
প্রচ্ছদরাজনীতিনির্বাচনের প্রার্থীরা ‍সেনা মোতায়েনসহ প্রচারণায় সমান সুযোগ চেয়েছেন

নির্বাচনের প্রার্থীরা ‍সেনা মোতায়েনসহ প্রচারণায় সমান সুযোগ চেয়েছেন

আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনের প্রার্থীরা ‍সেনা মোতায়েনসহ প্রচারণায় সমান সুযোগ চেয়েছেন। একই সঙ্গে তারা পেশি শক্তি ও কালো টাকার প্রভাবমুক্ত নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন। রোববার দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রার্থীরা এসব দাবি জানান। ইসি সচিব সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। এছাড়া চার নির্বাচন কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিট্রন পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, ইসি’র অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভার শুরুতেই মেয়র প্রার্থী আনিসুজ্জামান খোকন (ডিশঅ্যান্টেনা প্রতীক) তার বক্তব্যে বলেন, নির্বাচনে প্রার্থীরা গণমাধ্যমে প্রচারণায় সমান সুযোগ পাচ্ছেন না। এতে ইসি’র কোনো মনিটরিং নেই। ফলে হেভিওয়েট প্রার্থীরা বেশি সুযোগ পাচ্ছেন। মাহি বি চৌধুরী বলেন, ‍নির্বাচনী প্রচারণায় সর্বোচ্চ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। কিন্তু কোন প্রার্থী কত ব্যয় করছেন, এ বিষয়ে ইসি’র কোনো মনিটরিং নেই। তাই প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে কমিটি করে তা তদারকি করতে হবে। এক্ষেত্রে কে কখন অভিযোগ দেবেন, সে ভরসায় তাকিয়ে থাকলে চলবে না। নির্বাচন যেন বিত্তবানদের অর্থের লড়াইয়ে পরিণত না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে সেনা মোতায়েনেরও দাবি জানান বিকল্প ধারা বাংলাদেশের এ নেতা।

বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালও সেনা বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানান। তিনি ২০ দলীয় জোটের সমর্থক ও আদর্শ ঢাকা গড়ার আন্দোলনের কর্মী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন। তাবিথ বলেন, ২০ দলের নেতাকর্মীসহ তার কর্মী-সমর্থকদের মামলা দিয়ে অযথা হয়রানি করা হচ্ছে। এর ফলে অনেক নেতাকর্মী আত্মগোপনে রয়েছেন। তাই ইসিকে তাদের জামিনের ব্যবস্থা করতে হবে। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পর্দার অন্তরালে পেশিশক্তি ব্যবহার ও নির্বাচনকে কালো টাকার প্রভাব মুক্ত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের যে ক্ষমতা রয়েছে, তার মধ্যে থেকেই প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখতে হবে। সব প্রার্থীর জন্য যেন সমান সুযোগ রাখা হয়, সে বিষয়ে পুলিশ বাহিনীকে খেয়াল রাখতে হবে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা নাদের চৌধুরী বলেন, ইসি’র ভেতরে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। এসব দূর করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিস বলেন, প্রচার-প্রচারণায় সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রয়োজনে তথ্য মন্ত্রণালয়কে ব্যবহার করে বিষয়টি নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিতে হবে ইসিকে। যুব ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ক্বাফি রতন বলেন, অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কালো টাকা, পেশি শক্তি ও ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। এছাড়া পুলিশি হয়রানি বা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আতঙ্ক সৃষ্টি বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। তবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। ফজলে বারী মাসুদ বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ সুন্দর রাখার জন্য ভোটগ্রহণের তিনদিন আগে থেকে সেনা মোতায়েন ও প্রচারণায় সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। মো. জামান ভূইয়া বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না করলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।

বাহাউদ্দীন আহমেদ বাবুল বলেন, নির্বাচনে প্রার্থী যেন সমান সুযোগ পান, সে দিকে ইসি’র দৃষ্টি দিতে হবে। এছাড়া ভোটাররাও যেন নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন, সে নিশ্চয়তা দেওয়াও ইসি’র জন্য জরুরি। শামসুল হুদা চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে হেভিওয়েট প্রার্থীরা কলেজের শিক্ষকদের ব্যবহার করছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে উদ্যোগ নিতে হবে। শেখ শহিদুজ্জামান এবং এওয়াইএম কামরুল ইসলামও নির্বাচনে কালো টাকা ও পেশি শক্তির প্রভাবমুক্ত রাখার নিশ্চয়তা দাবি করেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক বলেন, সব প্রার্থীর দাবিগুলোর সঙ্গে আমি একমত। নির্বাচন কমিশনকে এসব দাবির যত বেশি সম্ভব পূরণ করতে হবে। একই সঙ্গে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতের দাবি জানান তিনি। সভায় কাউন্সিলর প্রার্থীরাও সেনা মোতায়েনসহ লেভেল প্লেয়ং ফিল্ড তৈরির দাবি জানান। ডিএনসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে ১৬, কাউন্সিলর ২৮০ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৮৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ২৮ এপ্রিল এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ