শনিবার, মে ৪, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনচট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ ৭২ শিবির কর্মী আটক

চট্টগ্রাম কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ ৭২ শিবির কর্মী আটক

চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ ৭২ জন শিবির কর্মীকে আটক করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। মানবতা বিরোধী অপরাধে দন্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তি চেয়ে লেখা ব্যানারে মোড়ানো এসব অস্ত্র ম‍াটির নিচে পুঁতে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার গভীর রাত ১টা থেকে বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে তাদের আটক করা হয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম কলেজে অভিযান শেষ করে পুলিশ ছাত্রশিবির নিয়ন্ত্রিত সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে অভিযান ‍শুরু করেছে। চট্টগ্রাম কলেজে অভিযানে ১টি একে-২২, ১টি থ্রি নট থ্রি, ৩টি পিস্তল, ৩টি সিঙ্গেল ব্যারেল বন্দুক, ১টি দো-নলা বন্দুক, ৫টি রকেট ফ্লেয়ার, ৬১ রাউন্ড কার্তুজ ও ২৭ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি, নাশকতা চালানোর জন্য বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ শিবির ক্যাডাররা কলেজে জড়ো হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে রাতভর অভিযান চালিয়ে ৭২ জনকে আটক করা হয়েছে। নগর গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে অভিযানে নগর পুলিশের কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার শাহ মো. আব্দুর রউফের নেতৃত্বে একটি টিমও অংশ নেয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রশিবির নিয়ন্ত্রিত সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ (চট্টগ্রাম কলেজের সামনে) ছাত্রলীগ দখলে নেবে এমন গুজবের ভিত্তিতে গত দু’দিন ধরে কলেজ দু’টিতে শিবিরের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। ছাত্রলীগকে ঠেকাতে এবং নাশকতার জন্য গত শনিবার থেকে শিবির কলেজে অস্ত্রশস্ত্র জড়ো করছে এমন তথ্য পায় নগর গোয়েন্দা পুলিশ।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) বনজ কুমার মজুমদারের নির্দেশে নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার এস এম তানভির আরাফাত এবং সহকারি পুলিশ কমিশনার শাহ মোহাম্মদ আব্দুর রউফ এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেন। তারা তথ্য পান, চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসিন কলেজে শিবির তিনটি একে ২২ সহ ১৮টি মরণাস্ত্রের মজুদ গড়েছে। নগর পুলিশের কোতয়ালি জোনের সহকারি কমিশনার শাহ মোহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেন, শিবিরের হাতে আরও অস্ত্র আছে। এসব অস্ত্রের সন্ধানে আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি।

অনুসন্ধানে পুলিশ তথ্য পায়, ছাত্রলীগকে ঠেকাতে এবং নাশকতার জন্য বিভিন্ন পদ-পদবিতে থাকা শিবিরের ক্যাডাররা সবাই হোস্টেলে ফিরে এসেছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে অভিযান শুরু হয়। চট্টগ্রাম কলেজের শেরে বাংলা ও সোহরাওয়ার্দী ছাত্রাবাসে একযোগে অভিযান শুরুর পর শিবিরের নেতাকর্মীরা সবাই হোস্টেল ছেড়ে পালাতে শুরু করেন। তবে কলেজ ঘিরে থাকা পুলিশের জালে ৭২ জন আটক হয়।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারি কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অনেককেই আমরা ধরতে সক্ষম হয়েছিলাম। তবে শুধুমাত্র যারা ছাত্রশিবিরের লিস্টেড কর্মী, যাদের বিরুদ্ধে নাশকতার জন্য জড়ো হওয়ার অভিযোগ আছে তাদের আমরা আটক করেছি।

ছাত্রাবাসে অভিযান ও তল্লাশি শেষ করে পুলিশ ঢুকে পড়ে চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষক-কর্মচারিদের আবাসিক এলাকায়। সেখানে একটি তিনতলা স্টাফ কোয়ার্টারের পেছনে তল্লাশি চালাতে গিয়ে মাটি আলগা থাকা একটি ছোট গর্তের সন্ধান পায় পুলিশ। নগর গোয়েন্দা পুলিশের কনস্টেবল নজরুল ইসলাম ওই গর্ত দেখে সবাইকে জানালে মাটি সরানো হয়। এরপর প্রথমে একটি বন্দুক পাওয়া যায়। ‍তারপর সাঈদীর মুক্তির ব্যানার মোড়ানো অস্ত্রের বস্তাটি পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম কলেজ থেকে আটক হওয়া ৭২ জনকে কোতয়ালি ও পাঁচলাইশ থানায় ভাগ করে রাখা হয়েছে বলে জানান এস এম তানভির আরাফাত।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ