বিশেষ প্রতিনিধিঃ (বিডি সময় ২৪ ডটকম) হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্ল¬ামা শাহ্ আহমদ শফী বলেন, চারিদিকে হাজারো অপপ্রচার, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বক্তব্য, নেতাকর্মীদের নামে নানান অপবাদ সত্ত্বেও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর সকল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন। আমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের সম্মান রক্ষার্থে খানকাহ্ ও কুরআন-হাদিসের দরসগাহ ছেড়ে রাজপথে নেমেছি। কোনো হুমকি, নির্যাতন, মামলা, হয়রানি ও ষড়যন্ত্র আমাদেরকে ঈমান রক্ষার আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে পারবে না। দেশের যে কোনো স্থানে যে কোনো সময় ইসলামবিদ্বেষী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে এদেশের নবীপ্রেমিক আলিম-ওলামা ও তাওহীদি জনতা জীবনবাজি রেখে তাদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রসা মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয়, চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর কমিটির এক যৌথ জরুরী সভায় হেফাজত তিনি এসব অভিমত ব্যাক্ত করেন। এছাড়া উক্ত সভা থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় বলে জানান হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
তিনি জানান, সভায় সর্বসম্মতিক্রমে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর কার্যক্রমকে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া এবং ১৩ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ব্যাপক গণজাগরণ সৃষ্টি করার জন্য বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-পবিত্র মাহে রমজানের পর সেপ্টেস্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সারাদেশে ওলামা-পীর-মাশায়েখ ও হেফাজতে ইসলামের জেলা-মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলন, ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য প্রতিটি জেলা-উপজেলা, গ্রামে-গঞ্জে আলোচনা-সভা, সেমিনার ও দোয়া মাহফিল আয়োজন, আগামী ২০ শে রমজান এ’তেকাফের পূর্বে প্রত্যেক শাখায়/ইউনিটে ইফতার মাহফিল আয়োজন করে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা, যেসব মহানগর ও জেলা-উপজেলায় কমিটি গঠিত হয়নি, সেখানে কমিটি গঠন করা।
সভায় সারাদেশে নাস্তিক্যবাদবিরোধী চলমান গণআন্দোলনে হেফাজতে ইসলামের তৎপরতা, ৫ মে ঢাকা অবরোধ ও শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশে যৌথ বাহিনীর বর্বরোচিত গণহত্যা, শোহাদায়ে কেরাম, হেফাজতের মহাসচিব আল¬ামা জুনাইদ বাবুনগরীসহ আহত নেতাকর্মীদের সুচিকিৎসা, সারা দেশে নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা ও ভবিষ্যত কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করে।
হেফাজতের উক্ত জরুরী সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র নায়েবে আমীর আল্লামা মুহিব্বুল¬াহ বাবুনগরী, নায়েবে আমীর আল্লামা আবদুল মালেক হালিম, আল্লামা হাফেজ শামসুল আলম, আল্লামা মুহাম্মদ ইদ্রিস, আল্লামা সালাহুদ্দিন নানুপুরী, মুফতি জসিমুদ্দিন, মাওলানা ইলিয়াস উসমানী, মাওলানা হাবিবুল¬াহ আজাদীবাজার, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা মুফতি হারুন ইজহার, মাওলানা আবুদল জব্বার, মাওলানা নুরুল ইসলাম নানুপুর, মাওলানা ইসহাক, মাওলানা নাছির উদ্দিন মুনির, মাওলানা মীর মুহাম্মদ ইদ্রিস, আমীরের একান্ত সচিব মাওলানা শফিউল আলম, মাওলানা মুফতি আবদুল ওয়াহহাব, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, মাওলানা মুহাম্মদ সোহাইল, মাওলানা আহমদ শফী, হাফেজ মুহাম্মদ ফয়সাল ও মাওলানা জুনায়েদ প্রমুখ।
সভায় সরকারের কতিপয় ধর্মবিদ্বেষী মন্ত্রীরা কওমী মাদ্রাসায় চাঁদা না দেওয়ার জন্য জনগণকে প্ররোচনার জবাবে আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন, বাংলাদেশের হাজার হাজার কওমী মাদরাসা সরকারের এক টাকাও আর্থিক সহায়তা ছাড়া ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সহযোগিতায় যুগযুগ ধরে সমাজে শিক্ষার আলো বিস্তার ও আদর্শ নাগরিক তৈরির খেদমত করে যাচ্ছে।
হেফাজতের আমীর বলেন, বর্তমান ইসলামবিদ্বেষী অপশক্তির চেয়ে বৃহৎ শক্তি বৃটিশ ঔপনিবেশিক শক্তিকে ওলামায়ে কেরাম উপমহাদেশকে বিতাড়িত করেছে। তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও আমরা বিজয়ী হবো। হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরীর সহকারী সদস্য সচিব, শায়খুল হাদিস আল্ল¬ামা আজিজুল হকের সন্তান মাওলানা মামুনুল হক, লালবাগ শাহী মসজিদের খতিব মাওলানা মুফতি ইমরান মাজহারীসহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।