শুক্রবার, মে ৩১, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে কেন্দ্রীয় কারাগারে গেছেন পরিবারের সদস্যরা

কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে কেন্দ্রীয় কারাগারে গেছেন পরিবারের সদস্যরা

মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে ফাঁসির দণ্ড বহাল থাকা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে গেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কামারুজ্জামানের ছেলে হাসান ইকবাল বলেন, ‘নিয়মিত পরিদর্শনের অংশ হিসেবে পরিবারের সবাই এই মাত্র কারা ফটকে এসেছি।’ কারা তত্ত্বাবধায়ক ফরমান আলী বলেন, ‘কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। কিছুক্ষণ আগে আবেদনটি আমার হাতে এসেছে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

একাত্তরের কুখ্যাত গুপ্তঘাতক আলবদর বাহিনীর বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের সংগঠক কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ কামারুজ্জামানকে এ দণ্ড দিয়েছিলেন। ৪৩ বছর আগের আলবদরের সংগঠক কামারুজ্জামান বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল। তিনি জামায়াতের দ্বিতীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, যিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে চূড়ান্ত মৃত্যুদণ্ডাদেশ পেলেন। এর আগে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ওই রায় কার্যকর হয়।

একাত্তরে বর্তমান শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে গণহত্যা ও মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফাকে হত্যার দায়ে গত বছরের ৯ মে ট্রাইব্যুনাল-২ কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন কামারুজ্জামান। গত সোমবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির বেঞ্চ কামারুজ্জামানের এ আপিল আংশিক মঞ্জুর করেন। সোহাগপুর গণহত্যার দায়ে কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে বহাল রাখা হয়। তবে গোলাম মোস্তফা হত্যাকাণ্ডের জন্য কামারুজ্জামানকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আপিল বিভাগ।

আপিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) সুযোগ ও রায় কার্যকর করা নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ ভিন্নমত দিয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আপিলের রায় পুনর্বিবেচনার সুযোগ নেই। আর আসামিপক্ষ বলেছে, পুনর্বিবেচনার সুযোগ সাংবিধানিক অধিকার। এর আগে রায় কার্যকর করা ঠিক হবে না। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এটি আপিল বিভাগের তৃতীয় রায়। এর আগে কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশের পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। ট্রাইব্যুনালের রায়ে তাঁর মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে গঠন করা সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। ওই পাঁচটি অভিযোগে খালাস চেয়ে আপিল করেছিলেন কামারুজ্জামান। গত ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল শুনানি শেষে রায় অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়েছিল।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ