শনিবার, মে ৪, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনসাঈদীর রায়কে ঘিরে নাশকতা মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে পুলিশ

সাঈদীর রায়কে ঘিরে নাশকতা মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে পুলিশ

মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিল বিভাগের রায়কে ঘিরে নাশকতা মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলায় যাচ্ছে অতিরিক্ত পুলিশ। এছাড়া বুধবার ভোর ৫টা থেকে নগরী এবং জেলায় বিজিবি মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নগরীতে প্রাথমিকভাবে ৬ প্লাটুন অর্থাৎ ১৮০ জন বিজিবি সদস্য মোতায়েনের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে পুলিশ। আর জেলায় ১০ প্লাটুন অর্থাৎ তিন‘শ বিজিবি সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।

নগর পুলিশের উপ কমিশনার (সদর) মাসুদ-উল-হাসান বলেন, ভোর ৫টা থেকে বিজিবি সদস্যদের মাঠে থাকার জন্য বলা হয়েছে। সাঈদীর রায়ের পর কেউ যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় আছি। জেলা পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, অতীতে সাঈদীর যেসব এলাকা আক্রান্ত হয়েছিল সেগুলোসহ সব উপদ্রুত এলাকার প্রতি আমরা নজর রাখছি। এছাড়া মহাসড়কগুলোকে বাড়তি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় সব উপজেলায় যাতে দ্রুত বিজিবি সদস্যদের পাঠানো যায় সে ব্যাপারেও প্রস্তুত থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। এদিকে নাশকতা মোকাবেলায় নগরী এবং জেলায় পুলিশের পক্ষ থেকেও সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। শিবির ধরতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

নগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আপিল বিভাগে সাঈদীর রায়ের সময় নির্ধারণের পর পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকতারা জরুরি বৈঠকে বসেন। বৈঠকে নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করে তা দ্রুত বিভিন্ন থানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। বৈঠক থেকে জামায়াত-শিবিরের আস্তানা, নাশকতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয় নগর গোয়েন্দা পুলিশকে। থানাকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

নগর পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, রাতেই নিয়মিত ও অতিরিক্ত পুলিশসহ প্রায় দেড় হাজার পুলিশ নগরীর বিভিন্ন স্পর্শকাতর পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে। আরও প্রায় দেড় হাজার পুলিশ নামবে বুধবার ভোর ৫টায়। চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, প্রত্যেক থানায় রাতের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ পৌঁছে যাবে। দেড় থেকে দু’হাজার বাড়তি পুলিশ মোতায়েনের পরিকল্পনা আমাদের আছে।

প্রসঙ্গত ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণের মতো আটটি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় সাঈদীর বিরুদ্ধে। গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি দেওয়া রায়ে দু’টি অপরাধে সাঈদীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। সাঈদীর বিরুদ্ধে গঠন করা অভিযোগে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিন হাজারেরও বেশি নিরস্ত্র ব্যক্তিকে হত্যা বা হত্যায় সহযোগিতা, নয়জনেরও বেশি নারীকে ধর্ষণ, বিভিন্ন বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, ভাঙচুর এবং ১শ’ থেকে ১শ’৫০ জন  হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে জোরপূর্বক ধর্মান্তরে বাধ্য করার মত ২০টি ঘটনার অভিযোগ আনা হয়েছিলো। এগুলোর মধ্যে সন্দেহাতীতভাবে ৮টি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। এর মধ্যে দু’টি অভিযোগে অর্থাৎ ৮ ও ১০ নম্বর অপরাধে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড হয়েছে।

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ