শনিবার, মে ২৫, ২০২৪
প্রচ্ছদখেলার সময়আবারও পরাজয়

আবারও পরাজয়

আবারও পরাজয়। আবারও নত মস্তকে মাঠ ত্যাগ। ২০০৯ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সঙ্গে এবারের কত অমিল! সেবার পরাজয় কাকে বলে সেটিই ভুলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার ঠিক উল্টো। জয় কাকে বলে সেটিই ভুলে গেছে বাংলাদেশ! সেন্ট ভিনসেন্ট টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০ উইকেটে হারার পর বাংলাদেশ খুঁজছে পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বেরোনোর উপায়। শিগগির মিলবে কি সেই উপায়?

মাত্র ১৩ রানের লক্ষ্য। অতি সামান্য এ লক্ষ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেরিয়েছে বিনা উইকেটেই। অবশ্য এ ম্যাচ থেকে সান্ত্বনা নেওয়া যেতে পারে এই ভেবে, ফলো-অনে পড়ে যখন আরেকটি ইনিংস পরাজয়ের চোখ রাঙানি, এ অবস্থায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে যে দ্বিতীয়বারের মতো ব্যাট করতে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ—সেটিই বা কম কী! তবুও প্রবোধ মানা কঠিন। কেননা, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যানরা যেখানে রান তুললেন অনায়াসে, সেখানে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কেন ‘আত্মহত্যা’র মিছিলে নামলেন?

নেতিবাচক সব দিক সরিয়ে সেন্ট ভিনসেন্ট টেস্টে মুশফিকদের দুটি প্রাপ্তি বড় করে দেখা যেতে পারে। অভিষেকে স্পিনার তাইজুল ইসলামের ৫ উইকেট আর মুশফিকুর রহিমের দুটি সংগ্রামী ইনিংস। বাংলাদেশ অধিনায়ক প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন ৪৮ রানে। সতীর্থদের আরেকটু সহায়তা পেলে হয়তো ইনিংসটাকে আরও দীর্ঘ করতে পারতেন। দ্বিতীয় ইনিংসেও প্রায় একই দশা। মাহমুদউল্লাহ বাদে কেউ উপযুক্ত সঙ্গ দিতে পারলেন না। এরই মধ্যে ৯ উইকেট শেষ! রান তখন ৯৪। সেঞ্চুরি কি তবে ফসকেই যাবে? মুশফিকুর রহিম ঝুঁকিটা নিয়েই নিলেন। কেমার রোচকে লং-অন দিয়ে মারলেন উড়িয়ে! অতঃপর তৃতীয় টেস্ট শতক পেয়েই গেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

সিরিজের প্রথম টেস্টের পঞ্চম দিনে মূলত মুশফিকের সেঞ্চুরিতে ইনিংস পরাজয়ের লজ্জা এড়াতে পেরেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফিল্ডারদের পিচ্ছিল হাত গলে বেশ কবার বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা জীবন পেয়েছেন। তবে নাসির হোসেনকে কোনো সুযোগ দেননি ফিল্ডাররা। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও অত্যন্ত দৃষ্টিকটু শট খেলে ফিরলেন এ ডানহাতি। একজন আন্তর্জাতিক ব্যাটসম্যানের এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যাটিং ক্ষমার অযোগ্য। রোচের বলে গ্যাব্রিয়েলের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে নাসির ফিরেছেন মাত্র ১৯ রানে।

এরপর তাইজুল ইসলাম, শুভাগত হোম, রুবেল হোসেন—তিনজনই ফিরেছেন শূন্য হাতে। দুই রানের ব্যবধানে ফিরলেন তিন ব্যাটসম্যান। অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা মুশফিকের সেঞ্চুরি তখন চরম সংশয়ে। অবশেষে অধিনায়কের সেঞ্চুরিতেই সান্ত্বনার লিড পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে শেষ উইকেট হিসেবে মুশফিক যখন ফিরলেন, তখন তাঁর সংগ্রহ ১১৬।
টেস্টের প্রথম দিন নাসির ধারাভাষ্যকার আতাহার আলী খানকে বলেছিলেন, ‘প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নেওয়ার সামর্থ্য আমাদের আছে।’ অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে, প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নেওয়ার চেয়ে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের প্রতিজ্ঞা হওয়া উচিত—নিজেদের ২০ উইকেট প্রতিপক্ষকে বিলিয়ে না দিয়ে আসা! হয়তো এ টেস্টের ভুল শুধরে আগামী ম্যাচে ভালো করার প্রত্যয় ব্যক্ত করবে মুশফিকুরের দল। কথা হলো, সেই ‘ভালো’টা হবে কবে?

  • বিষয়:
  • top
আরও পড়ুন

সর্বশেষ