‘বাংলা সিনেমায় অভিনয় করবো না’- টেলিভিশনের নতুন মডেল বা অভিনেত্রীদের এ ধরনের কথা বলাটা অনেক আগে থেকেই রেওয়াজ হয়ে আসছে। পরে এর সঙ্গে গত দশকে যুক্ত হয়েছে ‘টেলিভিশন চ্যানেলের ছবি অথবা আর্টফিল্ম ঘরানার ছবি হলে অভিনয় করতে পারি’ ধরনের মন্তব্য। একাধিক চলচ্চিত্র নির্মাতা তাদের পছন্দ অনুযায়ী নতুন মডেল বা টেলিভিশন অভিনেত্রীদের তাদের গল্প অনুযায়ী ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিলেই এ ধরনের মন্তব্য শোনা যায়। অবশ্য তার মানে যে চলচ্চিত্র নির্মাতারা এক্ষেত্রে ব্যর্থ তা কিন্তু নয়। কারণ একটা সময় মন্তব্যকারী টিভি অভিনেত্রী বা মডেলরা ঠিকই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের ইচ্ছা চূড়ান্ত করে যোগাযোগ করেন সেই নির্মাতাদের সঙ্গে। তবে বেশিরভাগই টিনেজ সময় বা তুঙ্গে থাকা ক্যারিয়ার শেষ করে বা হারিয়ে তারপর আসেন। সমপ্রতি এমনি দেখা গেছে তিন্নির ক্ষেত্রে। ক্যারিয়ারের উজ্জ্বল সময়ে অনেকেই তাকে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু সে সময় সব প্রস্তাবই না করে দিয়েছিলেন তিন্নি। অবশেষে সোহানুর রহমান সোহান তিন্নিকে সিনেমায় আনতে সমর্থ হন। কিন্তু ততক্ষণে তিন্নির ক্যারিয়ারের চেহারা নাজুক। তিন্নির পর ঠিক তার মতোই অবস্থা সারিকার। সোহানুর রহমান সোহান, এস এ হক অলিক, স্বপন আহমেদ, মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজসহ আরও কয়েকজন নামী পরিচালক সারিকাকে নিয়ে বেশ ক’বার ছবি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ছবিতে সারিকার পছন্দ অনুযায়ী নায়ককেই নেয়া হবে- এমন প্রস্তাবনা থাকা সত্ত্বেও একাধিক চলচ্চিত্র পরিচালককে ফিরে আসতে হয়েছিল। সারিকা তাদের বলেছিলেন, বাংলা সিনেমায় আমার অভিনয়ে ইচ্ছা কম। কয়েকদিন মডেলিংয়ের মধ্য দিয়ে সময় কাটিয়ে, টুকটাক নাটকে অভিনয়ের পরই হঠাৎ সব ছেড়ে দেবো এবং বিয়ে করে সংসারী হবো। অতএব, চলচ্চিত্রে অভিনয়ের ভাবনা আমার নেই। কিন্তু সমপ্রতি সারিকার আওয়াজ পাল্টে গেছে। কাছের ও মিডিয়ার বিভিন্নজনকে তিনি বলছেন তার চলচ্চিত্রে অভিনয়ের ইচ্ছার কথা। বাংলালিংকের বিজ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে রাতারাতি তারকা বনে যাওয়া সারিকা এরই মধ্যে বাদ পড়েছেন সেখান থেকে। তার বদলে নেয়া হয়েছে মেহজাবিনকে। এদিকে টিভি নাটকেও সারিকাকে নিয়ে নির্মাতাদের নির্মাণ কমে গেছে। এ বিষয়ে সারিকার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছেন, বাংলালিংকের বিজ্ঞাপনে কাজের জন্য অন্য সবাই যেখানে উদগ্রীব হয়ে থাকেন, সারিকা সেখানে কাজ করার সময়ে তাদের ভুগিয়েছেন। পাশাপাশি টেলিভিশন নাটকের নির্মাতাদের সবচেয়ে বেশি জ্বালিয়েছেন এ অভিনেত্রী। সকালে বলে বিকাল-সন্ধ্যায় সেটে যেতেন তিনি। তবে বেশ রাত পর্যন্ত কাজ করতে তার কোন আপত্তি থাকতো না। টেলিভিশন চ্যানেলের কয়েকটি অনুষ্ঠানেও সারিকা ‘পেইন’ শব্দটি নিজের নামের সঙ্গে যোগ
করেছেন। সব মিলিয়ে সারিকাকে নিয়ে ছোট পর্দায় এখন আর খুব একটা কাজ হয় না। যা গত কয়েক মাসে টেলিভিশনে প্রচারিত নাটকে তার অনুল্লেখ উপস্থিতি থেকেই বোঝা যায়। সারিকা এখন নতুন সুর ধরেছেন। তিনি ফিল্মে অভিনয় করবেন, চলচ্চিত্রের নায়িকা হবেন। বিভিন্নজনকেই বলছেন এসব কথা। কয়েকজন পরিচালকসহ তারকা নায়ক শাকিব খানকেও বলেছেন। কিন্তু সারিকার সামপ্রতিক চলচ্চিত্রে অভিনয় নিয়ে বেশ ভয়ে আছেন অনেকেই। কারণ, তিন্নি চলচ্চিত্রে অভিনয়ে এসে যেমন সবাইকে জ্বালিয়ে মেরেছেন, বিনিময়ে ছবি ব্যবসা সফলতা পায়নি। সারিকার অবস্থাও তেমনি হবে। অতএব, টাকা দিয়ে ভোগান্তি কেনার চেয়ে যারা আছে তাদের দিয়েই চালিয়ে নেয়া ভাল। সবশেষে বলতে হয়, যখন সবাই সারিকাকে চলচ্চিত্রে চাচ্ছিলেন তখন কিছুতেই রাজি হচ্ছিলেন না তিনি। আর যখন কেউই তাকে চাচ্ছেন না তখন সারিকা ব্যাকুল হয়ে আছেন চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য। এ যেন পুরো দ্বন্দ্বে ঘেরা সারিকা।
অভিনয়ের জন্য ব্যাকুল সারিকা
